নদ-নদী
কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে, ৬০০০ মানুষ পানিবন্দি
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার ও তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে গেছে কিছু ঘর-বাড়ি ও সবজির খেত।
আরও পড়ুন: সিলেটের বন্যায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি
জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল আরীফ বলেন, ‘৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি।’
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, ব্রহ্মপুত্র নদীর নুন খাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ও চিলমারী নৌবন্দর পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার ও ধরলা নদীর পানি বেড়ে তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ দশমিক ৭২ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া অনান্য নদ নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে।
এদিকে নদ-নদীর তীরবর্তী রাজারহাট, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজিরপুর উপজেলার ১৫টি পয়েন্ট দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা আরও দুই থেকে একদিন অব্যাহত থাকতে পারে।’
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান বলেন, ‘পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।’
আরও পড়ুন: সিলেটে তৃতীয় দফা বন্যায় পানিবন্দি ৭ লাখ মানুষ
চেরাপুঞ্জিতে ঢল, ফের পানিবন্দি সুনামগঞ্জের বাসিন্দারা
৪ মাস আগে
হবিগঞ্জে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে, আশ্রয়কেন্দ্রে ৫৫ পরিবার
গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে হবিগঞ্জের খোয়াই নদী ছাড়া জেলার সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এতে করে নবীগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদীর বাঁধ উপচে চারটি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করেছে ও রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: টেকনাফে ভারী বৃষ্টিতে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাস অনু বলেন, এরই মধ্যে হবিগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বেশকিছু গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে।
এছাড়া পানিবন্দি ৫৫ পরিবারকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাস অনু।
এদিকে গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে হবিগঞ্জ শহরের শ্যামলী, ইনাতাবাদ, নিউমুসলিম কোয়ার্টার, উমেদনগর, শায়েস্তানগর এলাকার রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। কোনো কোনো এলাকায় বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম মাহমুদ বলেন, বুধবার দুপুর ১টায় রিডিং অনুযায়ী শেরপুর পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার, মারকুলি পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার ও আজমিরীগঞ্জে ৩১ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে কুশিয়ারা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
শামীম মাহমুদ আরও বলেন, খোয়াই নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে উজানে (ভারতের ত্রিপুরায়) ভারী বৃষ্টি হলে নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
এদিকে ভারী বৃষ্টিতে ও বন্যার পানিতে হাওরগুলো ডুবতে শুরু করেছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম মাহমুদ।
আরও পড়ুন: সিলেটে ফের বিপৎসীমার ওপরে সুরমা-কুশিয়ারার পানি
সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে, আরও ৩ জেলায় বন্যার আশঙ্কা
৫ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত সুন্দরবন
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বাগেরহাটের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের কটকা, কচিখালী, দুবলা, শেলাসহ বনের বিভিন্ন এলাকা।
এদিকে সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশের উপর দিয়ে চার ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে এবং লবণ পানি ঢুকে সুন্দরবনে মিষ্টি পানির সব পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে ঘুম ছুটেছে খুলনাবাসীর
তবে বন্যপ্রাণীদের অবস্থায় সম্পর্কে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি বন বিভাগ।
বাগেরহাটের বিভিন্ন নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে চার থেকে প্রায় পাঁচ ফুট পানি বেড়েছে। নদ-নদীতে বিপৎসীমার অনেক উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে বিভিন্ন এলাকার বেড়িবাঁধ।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, জোয়ারের পানিতে সুন্দরবন প্লাবিত হয়েছে। বনের মধ্যে দিয়ে চার থেকে প্রায় পাঁচ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, জোয়ারের পানিতে সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশ প্লাবিত হয়েছে। লবণ পানি প্রবেশ করে সুন্দরবনের ৫০টি মিষ্টি পানির পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুবলা জেলে টহল ফাঁড়ির একটি জেটি পানির চাপে ভেসে গেছে। পানিতে বন বিভাগের বিভিন্ন অফিসের অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানির কারণে বন্যপ্রাণীর কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা জানা যায়নি।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল-বিরুনী বলেন, বাগেরহাটের পশুর নদে বিপৎসীমার ১১৫ সেন্টিমিটার, বলেশ্বর নদে ১৪ সেন্টিমিটার এবং দড়াটানা নদে ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বিভিন্ন নদ-নদীতে জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলায় মোট ৩৩৮ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। বাগেরহাট সদর, মোড়েলগঞ্জ এবং শরণখোলায় বর্তমানে ১৬ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে আট কিলোমিটার বাঁধ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ।
আরও পড়ুন: আজ সন্ধ্যায় আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় 'রিমাল'
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ কেন, কীভাবে, কারা করেন
৫ মাস আগে
গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বাড়ায় ৬০ট স্কুল বন্ধ
উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারী বর্ষণে গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকালে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীতীরবর্তী নিচু এলাকা এবং চরাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকায় পানি উঠেছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপরে
এছাড়া ওই সব এলাকার ফসলি জমি, আমন বীজতলা এবং নিচু এলাকার ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে কয়েক হাজার পরিবার চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
পানি ওঠার ফলে ১৬৫ চরাঞ্চলের ৬০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান জানান, পানি বৃদ্ধির ফলে কড়াইবাড়ি, খারজানি, পারদিয়ারা ও কুন্দেরপাড়া গ্রামে ব্যাপক নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে ওইসব গ্রামের মানুষরা ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র নদীর ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানান।
এছাড়া তিস্তা নদীর পানি ২৩ সেন্টিমিটার এবং ঘাঘট নদীর পানি ২৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুন্দরগঞ্জ, সদর, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য ৭৫ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দে্ওয়া হয়েছে।
এছাড়া ওই চার উপজেলায় ৫০ হাজার টাকা করে মোট ২ লাখ নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও ফুলছড়ি উপজেলার জন্য বিশেষ বরাদ্দ হিসেবে ৫০টি শুকনা খাবার প্যাকেট সরবরাহ করা হয়েছে বলে জেলা ত্রাণ দপ্তর জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপরে, কুড়িগ্রামে বন্যার আশঙ্কা
কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপরে
১ বছর আগে
কুড়িগ্রামে বন্যায় এখনো ৭০০০ পরিবার পানিবন্দি
কুড়িগ্রামে ১৬টি নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তিস্তা নদীর পানি টানা সাতদিন বিপৎসীমার উপরে থাকার পর শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলেও বন্যাকবলিত এলাকাগুলো থেকে সরেনি পানি। ফলে বিশুদ্ধ পানি আর রান্না করা খাবারের সংকটে রয়েছেন ৫ উপজেলার প্রায় ৭ হাজার পরিবারের পানিবন্দি মানুষজন।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে বন্যায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
চিলমারীর নয়ারহাট ও শাখাহাতির চরে তীব্র ভাঙনে দুই দিনে ৬০-৮০টি বসতভিটা ব্রহ্মপুত্রে বিলীন হয়ে গেছে। এখানকার লোকজন বাড়িঘর হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
জেলার কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর, চিলমারী, নাগেশ্বরী, রাজারহাটের নদীতীরবর্তী চরাঞ্চলগুলোর ঘরবাড়ি, আবাদি জমি, গোচারণ ভূমি এখনো বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। তিস্তার পাড়ে নদী ভাঙন কিছুটা কমলেও, ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
বানভাসি এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, লোকজন বাঁচার তাগিদে ঘরের মধ্যে মাচা করে, কেউবা গোয়ালঘরে আবার কেউ কেউ নৌকায় আশ্রয় নিয়েছেন।
টিউবওয়েলগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি শুকনো খাবার খেয়ে কোনোমতে দিন পার করছেন এসব বানভাসিরা।
রান্না করার চাল-সবজি থাকলেও রান্নার জ্বালানির অভাবে রান্না করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। কোন কোন জায়গায় ৪-৫ পরিবার একসঙ্গে রান্না করছে, যাতে এক চুলোতে একই জ্বালানি দিয়ে ভাত-তরকারি রান্না হয়ে যায়।
জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখার দেওয়া তথ্যমতে, জেলায় তৃতীয় ধাপের বন্যায় ১৮ হাজার ৬২৬ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে ৭৯৮টি, ৫ হাজার ৬৮৩ হেক্টর আবাদি জমি নষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে ২ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টায় কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দেওয়া তথ্যমতে, গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুন খাওয়া পয়েন্টে কমে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার, দুধকুমার পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২৮ সেন্টিমিটার এবং তিস্তা কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
১ বছর আগে
বরগুনায় নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে
বর্ষা ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে বরগুনার গুরুত্বপূর্ণ নদ-নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় জেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ার শঙ্কায় রয়েছে। নদীর পানি বাড়ায় বাঁধ ভাঙার শঙ্কায় কাটছে তাদের দিন।
তা ছাড়া পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে গেলে এইসব এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দেবে বলে বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) আশঙ্কা প্রকাশ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), বরগুনা।
বরগুনার মাঝের চর এলাকার বাসিন্দা আলি আকবর বলেন, ‘আমাদের জমাজমি নেই। তাই নদীর চরে বাড়ি করেছি। ভাবছিলাম এবার বন্যা হবে না, কিন্তু পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে বোরো আবাদ মনে হয় বন্যায় খেয়ে যাবে। রাতে ঘুম হয় না, খুব দুশ্চিন্তায় আছি।’
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত
১ নম্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান রাজা বলেন, ‘মাঝের চরের বরগুনা অংশের কিছু এলাকার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। খুব শিগগিরই এই মৌসুমে এডিপির অর্থ দিয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক মো. মাহাতাব হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) গৌরীচন্না ইউনিয়নের দক্ষিণে অবস্থিত খাকদন নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, বেতাগীর বিশখালী নদীর পানি ৩১ সেন্টিমিটার, বরগুনার আমতলীর বুড়েশ্বর/পায়রা নদীর পানি ১৭ সেন্টিমিটার, বরগুনার বিশখালী নদীর পানি ৪৩ সেন্টিমিটার এবং পাথরঘাটার বিশখালী নদীর পানি বিপৎসীমার সর্বোচ্চ ৫৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপরে
কাজিপুরে বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যমুনার পানি
১ বছর আগে
কুড়িগ্রামে বেড়েই চলেছে নদ-নদীর পানি, বন্যার আশঙ্কা
কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমারসহ প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
বুধবার সকাল ৯টায় দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপদসীমার মাত্র ৩৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অপরদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের নুনখাওয়া পয়েন্টে পানি বেড়ে বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বাড়ছে ধরলার পানি তবে কিছুটা কমেছে তিস্তা নদীর পানি।
পানি বাড়ায় নদী অববাহিকার চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে বাড়ির চারপাশে পানি উঠে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে, এসব এলাকায় মানুষ পানিতে তলিয়ে গেছে সবজি, আমনের চারাসহ পাট।
এদিকে মঙ্গলবার রাত থেকে এ জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত
১ বছর আগে
কুড়িগ্রামে কমেছে নদ-নদীর পানি, বেড়েছে ভাঙন
কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমে বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে। তবে বানভাসিদের কষ্ট রয়েই গেছে। বাড়িঘর থেকে পানি নেমে যেতে শুরু করলেও নিজ বাড়িতে ফিরতে পারছেন না তারা। আরও বেশ কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।
এদিকে, এক সপ্তাহ ধরে জেলার সবকটি নদ-নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। একদিকে বন্যার চাপ অন্যদিকে নদী ভাঙন। এতে বন্যার্ত ও নদী পাড়ের মানুষের মধ্যে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙনের মাত্রা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।
আরও পড়ুন: অসময়ে যমুনার ভাঙনে দিশেহারা নদীপাড়ের মানুষ
তাছাড়া বন্যার পানি নেমে গেলেও পানিবাহিত নানা রোগ দেখা দিয়েছে। খাদ্য সংকট অনেক এলাকায় দেখা দিলেও সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে যে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে তা পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছে বানভাসিরা। অনেকেই একবার ত্রাণ পেলেও আরও প্রয়োজন বলে জানান।
একদিকে বন্যার চাপ অন্যদিকে নদী ভাঙন। এতে বন্যার্ত ও নদী পাড়ের মানুষের মধ্যে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার বিকালে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রে জানা গেছে, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমর ও ব্রহ্মপুত্র নদের ২২টি পয়েন্টে এখন ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙনে রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়াল ডাঙা ইউনিয়নের পাড়ামৌলা,ঘড়িয়ালডাঙা ও খিতাব খাঁ এলাকায় এবং সদর উপজেলার ধরলা নদীর ভাঙনে হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব গ্রাম এবং উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙনে বজরা গ্রামে দেড় শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। আরও ঘর বাড়ি,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য স্থাপনা নদী ভাঙনে হুমকিতে রয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে নদী ভাঙনে হুমকির মুখে বিশ্বনাথের গোবিন্দনগর গ্রাম
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তিস্তা ও ধরলার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে তীব্র নদী ভাঙন চলছে। তবে ভাঙন প্রতিরোধে বিভিন্ন পয়েন্টে বালুর বস্তা ফেলে নিবারণের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
২ বছর আগে
কুড়িগ্রামে বন্যায় ২৭ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত
কুড়িগ্রামে চলতি বছরে দীর্ঘমেয়াদি বন্যায় জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার অববাহিকার কৃষকরা।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর বন্যায় জেলায় ২৬ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমির রোপা আমন, ২৮৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন সবজি খেত ও ১৫৫ হেক্টর বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কৃষি বিভাগ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেননি।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বাড়ছে পানি: বাঁধের দিকে ছুটছে মানুষ
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি এখন বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের মিল পাড়া গ্রামের কোরবান আলী বলেন, ‘তিন বিঘা জমিতে আমন আবাদ করেছি, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি বন্যায় সব পচে গেছে। কীভাবে কি করবো বুঝতে পারছি না, এখন তো সময়ও নেই, বীজতলাও নেই। কীভাবে আবাদ করব বলেন।’
একই ইউনিয়নের কৃষক দেলোয়ার মিয়া বলেন, ‘আমার পাঁচ বিঘা জমির আমন খেত এখনও তলিয়ে আছে। তবে দুদিনের মধ্যে পানি নেমে গেলেও আর আবাদ হবে না।’
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ওপরে
তিনি বলেন, ‘এবার যে ক্ষতিটা হলো বলে শেষ করতে পারব না। পানি নেমে গেলে না হয়, আবার ধান রোপণ করতাম কিন্তু বীজতলা তো নেই। সব মিলিয়ে খুবই সমস্যায় আছি আগামীতে কীভাবে চলব।’
পাঁচগাছী ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, নদ-নদীর পানি তো কমছে, কিন্তু এখনও আমার ইউনিয়নে আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে আছে। সব মিলে প্রায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে আমন আবাদ ১ হাজার হেক্টর ও অন্যন্য ফসল ৫০০ হেক্টর হবে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে সাড়ে ১৫ হাজার হেক্টর ফসল পানির নিচে
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মঞ্জুরুল হক জানান, কুড়িগ্রামে এবার বন্যায় রোপা আমন, সবজি ও বীজতলা মিলে প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর বিভিন্ন ফসল ১৬-১৭ দিন পানিতে নিমজ্জিত ছিল। জেলায় কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে এ তথ্য পাঠিয়েছি। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
৩ বছর আগে
ভাঙনে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে বাঁধে আশ্রয়!
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে নদ-নদীর পানি বাড়া-কমার পাশাপাশি ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদী পাড়ের মানুষ। ভাঙনের শিকার হয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারানো এসব পরিবার স্থান নিয়েছে ওয়াপদার বাঁধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও খোলা আকাশের নিচে।
উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার, গঙ্গাধর ও ব্রহ্মপুত্র নদের তীর সারা বছর ধরে ভাঙলেও এখন বন্যার পানি বাড়া-কমার সাথে তা তীব্র আকার ধারণ করেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত এক সপ্তাহে দুধকুমার নদের ভাঙনে রায়গঞ্জ ইউনিয়নের বড় মিনাবাজার এলাকা, হাজীর মোড়, বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের বড়মানি, বেরুবাড়ি ইউনিয়নের ফান্দের চর এলাকায় প্রায় ৫০টি বাড়ি নদীতে চলে গেছে। আর এক মাসে রায়গঞ্জ ইউনিয়নের বড়বাড়ি, বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের তেলিয়ানিরকুটি, ওয়াপদাঘাট, বেরুবাড়ী ইউনিয়নের চরবেরুবাড়ীসহ কয়েক গ্রামের প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি, মসজিদ, শতশত বিঘা আবাদী জমি, গাছপালাসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে গঙ্গাধর নদীর তীব্র ভাঙন, দিশেহারা ৩ গ্রামের মানুষ
এদিকে, গঙ্গাধর নদীর ভাঙনে বল্লভের খাষ ইউনিয়নের রঘুর ভিটা, কৃষ্ণপুর, রাম দত্ত এলাকার প্রায় ২০টি বাড়ি ও আবাদী জমি বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া ভাঙন অব্যাহত রয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদের নারায়ণপুর ও নুনখাওয়া ইউনিয়নে।
রায়গঞ্জ ইউনিয়নের হাজীর মোড় এলাকার মামুনুর রশিদ জানান, গেল এক সপ্তাহ জুড়ে দুধকুমার নদের ভাঙন বেড়ে গেছে। এতে করে নদের তীরবর্তী এলাকার বসত ভিটা, আবাদী জমি নদের গর্ভে চলে যাচ্ছে।
বেরুবাড়ি ইউনিয়নের ফান্দেরচর এলাকার মজিদুল ইসলাম জানান, একমাস থেকে ফান্দের চর এলাকায় তীব্র ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরের এক তৃতীয়াংশ দুধকুমার নদে বিলিন হয়েছে।
বল্লভের খাষ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আকমল হোসেন জানান, গঙ্গাধরের ভাঙনে তার ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের প্রায় অর্ধশত পরিবার তাদের ভিটেমাটি হারিয়েছে। বসত ভিটা হারানো কিছু পরিবার স্থানীয় স্কুল ঘরে কিছু পরিবার খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে।
রায়গঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম আব্দুলাহ আল ওয়ালিদ মাছুম জানান, প্রায় দুইমাস থেকে দুধকুমার নদের ভাঙন তীব্র হয়েছে। তার ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশত পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। এসব মানুষ অসহায়ভাবে দিন যাপন করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত তাদের জন্য কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর আহমেদ মাছুম জানান, ভাঙনে নিঃস্ব হওয়া পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুত করে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
আরও পড়ুন: তিস্তার ভাঙন: কুড়িগ্রামের ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি নদী গর্ভে
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ওমর ফারুক মো. মোক্তার হোসেন জানান, ইতোমধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকায় আপদকালীন ব্যবস্থা নেয়া যায় কিনা তা আমরা দেখছি।
৩ বছর আগে