কুড়িগ্রামে চলতি বছরে দীর্ঘমেয়াদি বন্যায় জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার অববাহিকার কৃষকরা।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর বন্যায় জেলায় ২৬ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমির রোপা আমন, ২৮৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন সবজি খেত ও ১৫৫ হেক্টর বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কৃষি বিভাগ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেননি।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বাড়ছে পানি: বাঁধের দিকে ছুটছে মানুষ
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি এখন বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের মিল পাড়া গ্রামের কোরবান আলী বলেন, ‘তিন বিঘা জমিতে আমন আবাদ করেছি, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি বন্যায় সব পচে গেছে। কীভাবে কি করবো বুঝতে পারছি না, এখন তো সময়ও নেই, বীজতলাও নেই। কীভাবে আবাদ করব বলেন।’
একই ইউনিয়নের কৃষক দেলোয়ার মিয়া বলেন, ‘আমার পাঁচ বিঘা জমির আমন খেত এখনও তলিয়ে আছে। তবে দুদিনের মধ্যে পানি নেমে গেলেও আর আবাদ হবে না।’
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ওপরে
তিনি বলেন, ‘এবার যে ক্ষতিটা হলো বলে শেষ করতে পারব না। পানি নেমে গেলে না হয়, আবার ধান রোপণ করতাম কিন্তু বীজতলা তো নেই। সব মিলিয়ে খুবই সমস্যায় আছি আগামীতে কীভাবে চলব।’
পাঁচগাছী ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, নদ-নদীর পানি তো কমছে, কিন্তু এখনও আমার ইউনিয়নে আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে আছে। সব মিলে প্রায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে আমন আবাদ ১ হাজার হেক্টর ও অন্যন্য ফসল ৫০০ হেক্টর হবে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে সাড়ে ১৫ হাজার হেক্টর ফসল পানির নিচে
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মঞ্জুরুল হক জানান, কুড়িগ্রামে এবার বন্যায় রোপা আমন, সবজি ও বীজতলা মিলে প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর বিভিন্ন ফসল ১৬-১৭ দিন পানিতে নিমজ্জিত ছিল। জেলায় কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে এ তথ্য পাঠিয়েছি। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।