ঝিনাইগাতী
শেরপুরে হাতির মৃতদেহ উদ্ধার
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে একটি হাতির মৃতদেহ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। শনিবার (৬ মে) সকালে উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের পশ্চিম বাকাকুড়া গ্রামের নুহু মিয়ার ধানখেত থেকে ওই মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গারো পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বন্যহাতির পাল খাদ্যের সন্ধ্যানে লোকালয়ে প্রবেশ করে কৃষকের ধান, সবজিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ-পালা বিনষ্ট করছে।
শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে একদল বন্যহাতি ভারত সীমান্ত ঘেঁষা ঝিনাইগাতী উপজেলার পশ্চিম বাকুঁড়া গ্রামের কয়েক কৃষকের ধানের জমিতে নেমে এসে পাকা বোরো ধান বিনষ্ট করে। শনিবার সকালে স্থানীয় কয়েকজন কৃষক নুহু মিয়ার ধানখেতে একটি মৃত বন্যহাতি পড়ে থাকতে দেখেন।
এলাকাবাসীর কাছে খবর পেয়ে পুলিশ, বন বিভাগ এবং বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা, প্রকৃতি সংরক্ষণ ও প্রাণী সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে বন্য হাতির আক্রমণে গ্রাম্য চিকিৎসকের মৃত্যু
বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মকরুল ইসলাম আকন্দ হাতির মৃতদেহ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মৃত হাতিটি পুরুষ জাতের। এর বয়স সাড়ে তিন থেকে চার বছর। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ফসল বাঁচাতে স্থানীয় কৃষকের দেওয়া বৈদ্যুতিক তারের সঙ্গে জড়িয়ে হাতিটি মারা গেছে।
তিনি আরও বলেন, তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। ঘটনাস্থল থেকে কিছু পরিমাণ বৈদ্যুতিক ও জিআই তার জব্দ করা হয়েছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এটিএম ফায়েজুর রাজ্জাক আকন্দ বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদনে হাতিটির দেহে কোনো ধরনের আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। তবে ভিসেরা পরীক্ষার জন্য কয়েকটি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারে (সিডিআইএল) ল্যাবে পরীক্ষার পর হাতিটির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আল মাসুদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ ব্যাপারে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: শেরপুরে বন্য হাতির আক্রমণে কৃষকের মৃত্যু
শেরপুরে বন্যহাতির আক্রমণে আহত কৃষকের মৃত্যু
১ বছর আগে
গারো শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে ঝিনাইগাতী ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার,কমিটি বিলুপ্ত
শেরপুরে এক গারো কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ঝিনাইগাতী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার খান শাওনকে সংগঠনকে থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে সংগঠনের কার্যক্রম নিস্ক্রিয় থাকায় ঝিনাইগাতী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইমনের সই করা ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানানো যাচ্ছে যে সংগঠন বিরোধী, শৃঙ্খলা পরিপন্থী, অপরাধমুলক এবং সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুন্ন হয় এমন কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার খান শাওনকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হলো।
আরও পড়ুন: ইবিতে শিক্ষার্থী নির্যাতন: ছাত্রলীগের ১ নেত্রী ও ৪ কর্মী বহিষ্কার
একইসঙ্গে সাংগঠনিক নিস্ক্রিয়তার কারণে ছাত্রলীগের ঝিনাইগাতী উপজেলা শাখার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এই প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি শেরপুরে দলীয় নেতাকর্মীদের মাধ্যমে মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, গত শনিবার (ঈদের দিন) দিবাগত রাতে গজনী অবকাশ কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকার কলেজ পড়ুয়া এক গারো ছাত্রীর বাড়িতে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায় মো. শাহরিয়ার খান শাওন।
এ ঘটনায় সোমবার ঝিনাইগাতী থানায় মামলা হলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার খান শাওনকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার বিকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: বরিশালে কনস্টেবলকে মারধর, ছাত্রলীগের নেতাসহ আটক ৪
১ বছর আগে
পাহাড়ি ঢল: ঝিনাইগাতীতে নতুন এলাকা প্লাবিত, পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে পাহাড়ি ঢলের পানি উজান থেকে নেমে গেলেও ভাটি অঞ্চলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ঢলের পানিতে ডুবে শুক্রবার বেলা ২টার দিকে ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের সারি কালিনগর (বালুর চর) এলাকায় ১৪ মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহত দিয়ামনি ওই এলাকার রফিকুল ইসলামের মেয়ে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আজিজুল হক জানান, দিয়া মনি বাড়ির উঠানে খেলা করার সময় হঠাৎ তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বাড়ির পাশেই ঢলের পানিতে দিয়ামনিকে ভাসতে দেখা যায়। পরিবারের লোকজন তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন।
ঢলের পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল আলম ভূঁইয়া।
এদিকে, ঢলের পানির তোড়ে অনেক এলাকায় গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট ভেঙ্গে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাড়ছে পথচারীদের দুর্ভোগ। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শতশত মানুষ। মহারশি নদীর দিঘিরপার, খৈলকুড়া, রামেরকুড়া এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে। শুক্রবার উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি কমতে শুরু করায় নতুন করে ভাটি এলাকায় চারটি ইউনিয়নের ১৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শতশত মানুষ। আকস্মিক পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পানিতে তলিয়ে শতাধিক পুকুরের কয়েক লাখ টাকা মূল্যের মাছ ভেসে যায় বলে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষী ও উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে। এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী শুভ বসাক বলেন, আকস্মিক পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে ধানশাইল-পানবর রাস্তার সূতিপাড়াসহ কয়েকটি স্থানে বিধ্বস্ত হয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। আহাম্মদনগর-মোহনগঞ্জ বাজার পর্যন্ত রাস্তাটি খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা সদরে মহারশি নদীর পূর্বপাড় থেকে নলকুড়া রাস্তা, ডাকাবর থেকে শালচূড়া রাস্তা বিধ্বস্ত হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি ঢলের পানিতে কৃষির তেমন কোন ক্ষতি সাধিত হয়নি। ঢলের পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় সামান্য কিছু শাক সবজির ক্ষতি সাধিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক আল মাসুদ জানান, পাহাড়ি ঢলের পানিতে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ মেট্রিক টন জিআর এর চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, পাহাড়ি ঢলের পানিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় দফা বন্যার কবলে সুনামগঞ্জ
বন্যায় সুনামগঞ্জে শত কোটি টাকার ক্ষতি
২ বছর আগে
শেরপুরে আরেকটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার
শেরপুরে ঝিনাইগাতীতে আরেকটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। বৃহস্পতিবার দুপুরে গজনী অবকাশের পশ্চিম পাশের বেরী এলাকা থেকে ওই হাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে গত ৭ মাসের মধ্যে শেরপুরের সীমান্তবর্তী পাহাড়ি জনপদে চারটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করা হলো।
স্থানীয়রা জানান, বেশ কিছুদিন যাবত ৩০ থেকে ৪০টি বন্যহাতির একটি দল ঝিনাইগাতীর পাহাড়ি এলাকায় বিচরণ করে আসছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে গজনী অবকাশের বেরী এলাকায় অসুস্থ্য হয়ে একটি পুরুষ হাতি খাদে পড়ে যায়। পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এ সময় আশপাশের লোকজন বন্যহাতিটি মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে প্রশাসনকে অবহিত করেন। পরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা পরীক্ষা করে হাতিটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম। তিনি বলেন, মৃত হাতিটিকে ঘটনাস্থলের পাশেই মাটি চাপা দেয়া হয়েছে।
শেরপুর জেলা জীববৈচিত্র্য ও বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন সরকার জানান, প্রাণিটির মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করা হবে।
পড়ুন: রাঙ্গুনিয়ায় বিলের কাদায় আটকে পড়া হাতি ৭ ঘণ্টা পর উদ্ধার
রাঙামাটিতে বন্য হাতির আক্রমণে মানসিক প্রতিবন্ধীর মৃত্যু
২ বছর আগে
স্কুলছাত্রী ধর্ষণ: যুবকের যাবজ্জীবন, সহযোগীর ১৪ বছরের সাজা
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় স্কুলছাত্রী অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় এক যুবককে যাবজ্জীবন এবং তার সহযোগীকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আক্তারুজ্জামান বুধবার দুপুরে এ সাজার রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন ঝিনাইগাতীর কালিনগর গ্রামের শফিকুল ইসলাম (৩১) এবং তার সহযোগী হাসলিগাঁও গ্রামের ছানা মিয়া (৩৮)।
শেরপুর নারী ও শিশু আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি মামলার নথির উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, ২০১৫ সালের ২০ মে সন্ধ্যায় ওই স্কুলছাত্রী চাচার বাড়ি থেকে নিজবাড়িতে ফিরছিল। পথে সাজাপ্রাপ্তরা রাস্তা থেকে জোর করে তাকে অপহরণ করে সিএনজি অটোরিকশায় তুলে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে শেরপুর, জামালপুর, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে শফিকুল তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। স্কুলছাত্রীর বাবার করা মামলায় পুলিশ দুই মাস পর ভুক্তভোগীকে উদ্ধার এবং আসামিদের গ্রেপ্তার করে। তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ঝিনাইগাতী থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) খোকন মিয়া আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিচারিক পর্যায়ে ১১ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার এ সাজার রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক। রায়ে একইসাথে শফিকুলকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।
এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের পিপি সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামিপক্ষের আইনজীবী জাহিদুল হক আধার উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানান।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ মামলায় আসামির যাবজ্জীবন
সিরাজগঞ্জে রেল যাত্রীকে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
২ বছর আগে
শেরপুর সীমান্তে হাতি আতঙ্কে ঘুম নেই পাহাড়ি অধিবাসীদের
শেরপুরের শ্রীবরদী সীমান্তে আবারও বন্য হাতির আনাগোনা শুরু হয়েছে। ক্ষেতের ফসল পাকতে শুরু করতেই বন্যহাতির দল লোকালয়ে নেমে এসে হানা দিচ্ছে আবাদী জমিতে। গত এক সপ্তাহ ধরে হাতির দল খেয়ে সাবাড় করছে, পায়ে মাড়িয়ে নষ্ট করছে খেতের আধপাকা ধান, সীম-বরবটি, করলাসহ নানা ধরনের সবজীর আবাদ।
মূলত: খাবারের সন্ধানেই বন্য হাতির দল লোকালয়ে নেমে আসছে। হাতি তাড়াতে রাত জেগে জান-মাল রক্ষার চেষ্টা করছেন সীমান্ত অঞ্চলের অধিবাসীরা। এতে হাতি আতঙ্কে ঘুম নেই স্থানীয় পাহাড়ি অধিবাসীদের।
স্থানীয়রা জানান, ভারতের সীমানাঘেঁষা শেরপুরের শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় গারো পাহাড়ের প্রায় ৪০টি গ্রাম রয়েছে। ওইসব গ্রামের চারপাশ ঘিরে গারো পাহাড়। কয়েকদিন যাবত ভারত থেকে নেমে আসা শতাধিক বন্য হাতি কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে ওইসব এলাকায় বিচরণ করছে। বন্য হাতির দল সারাদিন পাহাড়ি ঝোপ-জঙ্গলে থাকলেও সন্ধ্যা হলেই নেমে আসে লোকালয়ে। হামলা চালাচ্ছে বাড়ি-ঘরে। খেয়ে সাবাড় করছে চলতি আমন মৌসুমের আবাদ। পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করছে বিস্তীর্ণ আবাদি জমির ফসল। আর ধ্বংস করছে সবজি খেত। বাধা দিতে গেলে শুরু হয় হাতি ও মানুষের যুদ্ধ। ঢাকঢোল পিটিয়ে, পটকা ফুটিয়ে আর মশাল জ্বালিয়ে ঠেকানো যাচ্ছে না হাতির তান্ডব। এখন ওইসব গ্রামের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ হাতির আতঙ্কে দিন পার করছেন।
৩১ অক্টোবর রবিবার সরেজমিনে শ্রীবরদীর বালিজুড়ি এলাকায় গেলে কথা হয় স্থানীয় গারো কৃষক ব্রতীন মারাকের সাথে। তিনি জানান, আমরা পাহাড়ে বসবাস করি। এখানকার প্রায় সবাই কৃষির ওপর নির্ভরশীল। বন্য হাতি খেতের সবজি আর ধান খেয়ে সাবাড় করছে। মাঝেমধ্যে বাড়ি-ঘরেও হামলা করছে। এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানায় পৃথকভাবে অনেকে সাধারণ ডায়েরিও করেছেন।
আর পড়ুন: শেরপুরে বন্যহাতির আক্রমণে গারো অধিবাসী নিহত
নেয়াবাড়ির টিলা ও পার্শ্ববর্তী মালাকোচা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক রহুল আমীন, মজনু মিয়া, আলাল মিয়া, আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমরা পাহাড়ের বাসিন্দা। ধান আর সবজি চাষ করি। এসব ফসলের আয় দিয়েই আমাদের সংসার চলে। প্রতিবছরই ধান পাকলেই হাতি আসে। সবজি আর ধানক্ষেত খাইয়া যায়। অনেক ক্ষতি করতাছে। এইবারও অনেক ক্ষতি করছে। এখন বউ পোলাপান নিয়া ক্যামনে চলমু, চিন্তায় আছি।
শ্রীবরদী উপজেলা সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. কোহিনুর হোসেন বলেন, আমরা একটি বেসরকারি সংস্থার তথ্য মতে, জানতে পেরেছি, এই পাহাড়ে ১৯৯৫ সাল থেকে বন্য হাতির আক্রমণ চলছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ জন মানুষ মারা গেছেন। আহত হয়েছেন শত শত। ক্ষতি হয়েছে বিস্তীর্ণ আবাদি জমির ফসল। বন্যহাতির তান্ডব থেকে মানুষের জান-মাল রক্ষায় স্থায়ী পদক্ষেপ দরকার।
শ্রীবরদী উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান প্রাঞ্জল এম সাংমা বলেন, গারো পাহাড়ে বেশির ভাগ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজনের বসবাস। গ্রামবাসী হাতির উপদ্রব থেকে বাঁচতে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে। তবে এখনো প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এ জন্য দিন দিন বন্য হাতির তান্ডবে ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে বন্য হাতির আক্রমণে প্রাণ গেল ২ কিশোরের
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা আক্তার বলেন, আমরা বন্য হাতির হামলায় নিহত, আহত ও ঘরবাড়িসহ ফসল ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে আসছি। তাছাড়া বন্যহাতি তাড়াতে মশাল জ্বালানোর জন্য এলাকাবাসীর মাঝে কেরোসিন তেল ও জেনারেটর চালাতে ডিজেল সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া স্থায়ীভাবে বন্য হাতির কবল থেকে রক্ষা পেতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জোরালো হস্তক্ষেপের কথা জানানো হয়েছে। খুব দ্রুতই পদক্ষেপ নেয়া হবে।
বনবিভাগের শেরপুরের এসিএসফ (সহকারি বন সংরক্ষক) ড. প্রাণতোষ চন্দ্র রায় বলেন, পাহাড়ি অঞ্চলে হাতি-মানুষে দ্বন্দ্ব নিরসনে সহাবস্থান নিশ্চিত করতে বনবিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এলাকায় এলাকায় এলিফেন্ট রেসপন্স টিম গঠন করে তাদেরকে প্রশিক্ষণ ও উপকরণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। যাতে লোকালয়ে আসা বন্যহাতিকে উত্যক্ত না করে কিভাবে তাদেরকে ফের বনে ফেরত পাঠানো যায়। বন্যহাতির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণও দেয়া হচ্ছে। বনের ভেতর সুফল প্রকল্পের মাধ্যমে হাতির খাবার উপযোগী বনবাগান সৃষ্টিরও চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে বন্যহাতি খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে না আসে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে হাতির আক্রমণে নিহত ৩ পরিবার পাবে একলাখ টাকা করে
৩ বছর আগে
ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
জেলায় বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ২২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা গত দশ বছরের একদিনের বৃষ্টিপাতের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) মোখলেছুর রহমান।
ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নালিতাবাড়ীর চেল্লাখালি ও ভোগাই নদী বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানির তোড়ে ভোগাই নদীর শিমুলতলী বাঁধ ভেঙ্গে পৌরশহরে মধ্যবাজার, জেলখানা রোড, উত্তর গড়কান্দা, নালিতাবাড়ী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় অনেক বাড়িঘরেও পানি প্রবেশ করেছে। এতে ওইসব এলাকার মানুষ দুর্ভোগের শিকার হন। সকালে চেল্লাখালি নদীর পানি গাজীরখামার-নালিতাবাড়ী সড়কের বালুঘাটা এলাকায় সড়ক উপচিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে।
আরও পড়ুন: বৃষ্টির পানিতে ডুবল ঢাকার রাস্তা, ভোগান্তিতে মানুষ
ওই দুই নদীর পানি পরিমাপকরা (গেজ রিডার) জানিয়েছেন, দুপুর ১২টায় নালিতাবাড়ী পয়েন্টে চেল্লাখালি নদী বিপদসীমার ১ দশমিক ৭৩ মিটার ওপর দিয়ে ২৭ দশমিক ৪৭ মিটার উচ্চতায় এবং ভোগাই নদী ৬২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ১৭ দশমিক ৯৯ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছিল।
চেল্লাখালির পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক আলমগীর হোসেন জানান, এমন ভারি বর্ষণ গত কয়েক বছরেও দেখিনি। বর্ষণ অব্যাহত আছে, উজানেও বৃষ্টি হচ্ছে। তাতে করে পাহাড়ি নদ-নদীগুলোর পানি আরও বাড়তে পারে।
এদিকে, ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে দু’কোল উপচিয়ে ঝিনাইগাতী-রাংটিয়া সড়কের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দিঘিরপাড় এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় ঝিনাইগাতী উপজেলা কমপ্লেক্সে ও ঝিনাইগাতী বাজারে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবেশ করে। এতে নিম্নাঞ্চলের কমপক্ষে ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে অর্ধশতাধিক পুকুরের মাছ, ডুবে ড়েছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট। ফলে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েন।
ঝিনাইগাতী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ বলেন, ঝিনাইগাতী সদর বাজারের মসজিদ রোডসহ বাজারের একাংশ হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম নগরীর অধিকাংশ এলাকা
হাতিবান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আলী আকবর বলেন, আমার ইউনিয়নের কমপক্ষে পাঁচটি গ্রামে ঢলের পানি প্রবেশ করেছে। এতে আমন ধানের বীজতলা, সবজি ও বেশ কিছু পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল-মাসুদ সাংবাদিকদের জানান, সকালে ভাঙ্গা বাঁধ ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। বৃষ্টি কমলে পানি দ্রুতই নেমে যাবে। প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করে দ্রত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৩ বছর আগে
শেরপুরে ট্রাক ও সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫
শেরপুরে ট্রাক-সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষে আহত আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচজনে।
৩ বছর আগে
শেরপুরে বজ্রপাতে ৩য় শ্রেণির স্কুলছাত্রী নিহত
জেলার ঝিনাইগাতীর জুলগাঁও গ্রামে মঙ্গলবার বজ্রপাতে তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
৪ বছর আগে