আইসিটি
দক্ষতা উন্নয়ন, বিশেষ করে আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ কর: এইচএসসির ফল প্রকাশকালে শিক্ষার্থীদের প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাকরির বাজারে বিপুল সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগাতে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ করে আইসিটি বিষয়ে দক্ষতা উন্নয়নের ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কার্যালয়ে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এখন হচ্ছে ডিজিটাল যুগ, তাই তোমাদের এ বিষয়ে নজর দিতে হবে। তোমরা যদি তা করতে পার তবে চাকরির বাজারে আরও সুযোগ পাবে।’
শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল যুগের জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুত হতে অবসর সময়ে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, বিশেষ করে আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: এইচএসসির ফল প্রকাশ, পাসের হার ৮৫.৯৫ শতাংশ
তিনি বলেন, ‘শুধু ব্যাচেলর বা মাস্টার্সই যথেষ্ট হবে না; দেশে ও বিদেশে চাকরির সুযোগ সম্প্রসারণের জন্য তোমাদের যেকোনো বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান প্রয়োজন।’
তিনি শিক্ষার্থীদের তাদের সময় নষ্ট না করার এবং সরকার সারাদেশে যে প্রশিক্ষণ প্রদান করছে তা গ্রহণ করার আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষকে গবেষণায় আরও মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘কৃষি নিয়ে আমাদের গবেষণা কাজ ভালোই চলছে। আমি তোমাদেরকে অন্যান্য বিষয়ে আরও মনোযোগ দিতে বলব।’
তিনি বলেন, গবেষণা ছাড়া সর্বশেষ উন্নয়ন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব হবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষিত জাতি ছাড়া কোনো দেশ উন্নত হতে পারে না। আমরা দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ চাই। এবং এর জন্য আমাদের জরুরিভাবে শিক্ষিত জনবল প্রয়োজন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার শিক্ষাকে বৈচিত্র্যময় করেছে। আমরা শিক্ষার প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছি যাতে আমাদের শিশুরা ক্রমাগত উন্নয়নশীল বিশ্বের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে। আমরা প্রতিটি জেলায় উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ করে দিচ্ছি। এতে কর্মসংস্থানও নিশ্চিত হবে।
তিনি বলেন, সরকার বিষয়ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছে, যেগুলোকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে।
তিনি করোনাভাইরাস মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার সময় পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল জানা যাবে একটু পরেই
বাংলাদেশের আইসিটি খাতে অংশীদারিত্বে সৌদির আগ্রহ প্রকাশ
বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের দক্ষতায় আগ্রহী এবং বাংলাদেশের সঙ্গে এ খাতে সহযোগিতার জন্য দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে চায় সৌদি আরব। সৌদি আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স কোম্পানি (এসসিএআই) এর প্রধান নির্বাহী আয়মান আল রাশেদ এ আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
রিয়াদে রবিবার(৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে এক বৈঠককালে তিনি এ আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে অংশীদারিত্বের জন্য সৌদি আরবকে স্বাগত জানান।
বৈঠকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ জানান, বাংলাদেশ ও বর্তমানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স নিয়ে কাজ করছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইসিটি সেক্টর বাংলাদেশের জন্য একটি বিকাশমান সেক্টর। ২০০৮ সালে বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা গ্রহণ করে, যার মূল বিষয়গুলো হচ্ছে- একটি উন্নত দেশ, একটি সমৃদ্ধ ডিজিটাল সমাজ, আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থা ও জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি।
প্রতিমন্ত্রী সৌদি আরব কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে স্বাগত জানিয়ে এসসিএআই এর প্রধান নির্বাহীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। এ সময় মিশন উপপ্রধান আবুল হাসান মৃধা ও দূতাবাসের ইকোনমিক মিনিস্টার মুর্তুজা জুলকার নাঈন নোমান উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া রিয়াদে ডিজিটাল কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন – ডিসিও আয়োজিত এক সেমিনারে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ‘ডিজিটাল অর্থনীতির টেকসই প্রবৃদ্ধি বিষয়ে বক্তব্য দেন। অতিথি দেশ হিসেবে প্রতিমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে উন্নীত হওয়ার পথে বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের বিবরণ তুলে ধরেন।
আরও পড়ুুন: সৌদি সরকার বিদেশি তীর্থযাত্রীদের ওমরাহ বীমা খরচ ৬৩% কমিয়েছে
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ই-কমার্সের বাজারের আকার ২০২৫ সালের মধ্যে তিন দশমক এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বাংলাদেশে প্রতিদিন মোবাইল আর্থিক পরিষেবা ব্যবহারকারীরা প্রায় ২০২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি লেনদেন করছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ক্যাশলেস অর্থাৎ নগদবিহীন অর্থনীতি গড়ে তোলার পথে রয়েছে এবং ডিজিটাল ফাইন্যান্স সেক্টরে লেনদেন সহজ করতে বাংলাদেশ সরকার বিনিময় অ্যাপ্লিকেশন চালু করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তার মূল স্তম্ভ হলো, স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট সমাজ ও স্মার্ট ইকোনমি।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমরা ২০১৫ সাল থেকে বিভিন্ন স্টার্টআপে বিনিয়োগে সহযোগিতা করে যাচ্ছি। আমাদের নিজস্ব ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে প্রতিশ্রুতিশীল স্টার্টআপে বিনিয়োগ প্রদান করে যাচ্ছি। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় আড়াই হাজার স্টার্টআপ রয়েছে যেখানে গত ৫ বছরে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে। বিভিন্ন স্টার্টআপ ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে প্রায় দেড় মিলিয়নেরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করেছে এবং যা ২০২৫ সালের মধ্যে আমাদের জিডিপিতে দুই শতাংশের বেশি অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য চাকরি মেলা উদ্বোধন আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের উদ্যোগে এবং সেন্টার ফর সার্ভিসেস অ্যান্ড ইনফরমেশন অন ডিজঅ্যাবিলিটির সহযোগিতায় দিনব্যাপী আয়োজিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য চাকরি মেলা-২০২৩ উদ্বোধন করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর অফিস ভবনে অনুষ্ঠিত এই মেলায় সকাল থেকেই অংশ নেয় ৫৪টি আইসিটি ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মর্যাদাপূর্ণ জীবিকা ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বিগত ৮ বছর থেকে এ চাকরি মেলর আয়োজন করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল।
প্রধান অতিথি বক্তৃতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ বলেছেন যে সক্ষম, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও বিশেষভাবে সক্ষমদের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।
তিনি প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করে শিক্ষিত প্রতিবন্ধী ভাই-বোনদের চাকরির সুব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাকরি মেলা’- চাকরি দাতা ও চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা যেন অন্যের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার করে আত্মনিশীল হতে পারে সেই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: ভবিষ্যত বিনোদন হবে ইন্টারনেট প্রযুক্তি নির্ভর: আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক
তিনি আইসিটি বিভাগের এটুআই প্রকল্পে একজন উদ্ভাবক টকিং হোয়াইট স্টিক আবিষ্কার করেছেন উল্লেখ করে বলেন, এই সাদা ছড়ি দিয়ে একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, কোন ব্যক্তি বা বস্তুকে স্পর্শ বা ধাক্কা খাওয়ার আগেই টকিং হোয়াইট স্টিক কথা বলে সতর্ক করে দেয়।
তিনি এ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এসেসটিব টেকনোলজি উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আইসিটি বিভাগ থেকে হুইল চেয়ার দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের স্বাচ্ছন্দে চলতে দেশে স্বল্প খরচে উচ্চ প্রযুক্তি সম্বলিত হুইলচেয়ার তৈরির পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, রাষ্ট্রকে বৈষম্যমুক্ত ও মানবিক করতে হলে সকল সুযোগ সুবিধা সকলের জন্য সমন্বিতভাবে ভাবে কাজে লাগাতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় কোন প্রতিবন্ধী ভাই বোন যেন কোন নাগরিক সুবিধা হতে বিন্দুমাত্র বঞ্চিত না হয় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করব।
পলক বলেন, আইসিটি বিভাগের স্টাটআপ প্রকল্প, স্টাটআপ বাংলাদেশ লিমিটেড এর মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাই-বোনদের পুঁজি দেয়ার সুযোগ রয়েছে। তিনি আগামী বছর থেকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাকরি মেলার পাশাপাশি উদ্যোক্তা সম্মেলন করার ঘোষণা দেন।
প্রশিক্ষিত প্রতিবন্ধী বা বিশেষভাবে সক্ষম ভাই-বোনদের মধ্যে যারা উদ্যোক্তা হতে চান তাদের তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের তৈরি করতে ৫০ হাজার টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকা সিডমানি হিসেবে পুঁজি প্রদানের সুযোগ রয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, এর মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাইবোনেরা জব সিকার না হয়ে জব ক্রিয়েটর হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারবেন। পরে তিনি মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে ভাসানচর ও এতিমখানায় 'ফান জোন' স্থাপন
মেলায় সারাদেশ থেকে প্রায় ৪৫০ জন চাকরি প্রার্থী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করে।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, এনজিও বিষয়ক ব্যুরো এর মহাপরিচালক সচিব শেখ মো. মনিরুজ্জামান এবং সিএসআইডি এর নির্বাহী পরিচালক খন্দকার জহুরুল আলম, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ,প্রতিবন্ধীদের চাকরি দাতা প্রতিষ্ঠানে সমূহের পক্ষে বক্ত্যব রাখেন বাংলাদেশ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূঁইয়া, মাই আউটসোর্সিং লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিবুল বাশার।
উল্লেখ্য, এর আগে সারাদেশ থেকে প্রায় ৫ শতাধিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সিভি জমা দেন অনলাইনে।
এছাড়া, মেলায় সরাসরি উপস্থিত হয়েও বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তি চাকরিপ্রার্থীরা সিভি বা জীবনবৃত্তান্ত জমা দেয়ার সুযোগ পান। যাদের তথ্য প্রযুক্তির দক্ষতা রয়েছে তাদের নিয়োগের লক্ষ্যে ইন্টারভিউ গ্রহণ করে মেলায় অংশগ্রহণ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো।
ডাটা এন্ট্রি, গ্রাফিক্স ডিজাইন, অ্যানিমেশন, ওয়েব ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, কল সেন্টার এজেন্ট, প্রোগ্রামিং-সহ নানা প্রকার পদের জন্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তি চাকরিপ্রার্থীদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করে নিয়োগের পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
বিভিন্ন ট্রেডবডি বা অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যভুক্ত আইসিটিভিত্তিক প্রতিষ্ঠানসমূহ ওই মেলায় অংশগ্রহণ করে।
মেলায় অংশগ্রহণকারী চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্টাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), সাইবার ক্যাফে ওনার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশসহ আইসিটি শিল্পের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং এনজিও ব্যুরোর তালিকাভুক্ত প্রতিবন্ধিতা কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট এনজিও প্রতিষ্ঠান সমূহ।
আশা করা হচ্ছে এ মেলা থেকে ৪০-৫০ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং এ মেলা থেকে ১৫০-২০০ জন চাকরিপ্রার্থীকে পরবর্তীতে নিয়োগের লক্ষ্যে সাক্ষাতকারের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
আরও পড়ুন: গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিতে সেবা দিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ: পলক
ভবিষ্যত বিনোদন হবে ইন্টারনেট প্রযুক্তি নির্ভর: আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন,ভবিষ্যত বিনোদন হবে সম্পূর্ণ ইন্টারনেট প্রযুক্তি নির্ভর।
তিনি বলেন, নতুন নতুন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ডিজিটাল বাংলাদেশের ফসল। সংযুক্ত ও স্বয়ংক্রিয় প্লাটফর্মগুলো হবে বিনোদনের অন্যতম বাহন এবং এগলো বিনোদন খাতকে নিয়ে যাবে নতুন দিগন্তে।
সোমবার তেজগাঁওয়ে নিজস্ব ভবনে ‘কাজী মিডিয়া লিমিটেডের প্রতিষ্ঠান দীপ্ত টিভি’র ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘দীপ্ত প্লে’- এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৩ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ ভীষণ যদি না দিতেন এবং সজীব ওয়াজেদ জয় দূরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে তা বস্তবায়ন না করতেন; তাহলে আজ বাংলাদেশে ইন্টারনেট নির্ভর ওটিটি প্লাটফর্মের সুযোগ আমরা পেতাম না।
আরও পড়ুন: মাইক্রোসফটের উদ্ভাবন কার্যক্রম পরিদর্শন প্রতিমন্ত্রী পলকের
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আর এ ধরণের উদ্যোগ দেশের স্বনির্ভরতা অর্জনের স্বাক্ষর বহন করে। এতে ফেসবুক ও নেটফ্লিক্স এর মাধ্যমে যে বিপুল অংকের অর্থ দেশের বাইরে যাচ্ছে তা বাঁচবে। অপসংস্কৃতি থেকেও তরুণদের রক্ষা করা যাবে।
কাজী মিডিয়ার ‘দীপ্ত প্লে’ সব বয়সী দর্শকদের উপযোগী কন্টেন্ট তৈরি করে ওটিটি হিসেবে নিজেদের জায়গা করে নিতে সক্ষম হবে বলেও আশাবাদ বচ্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যোর মধ্যে বক্তব্য রাখেন-বিকাশ এর প্রতিষ্ঠাতা কামাল কাদির, দীপ্ত টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহিদুল হাসান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফুয়াদ আহমেদ চৌধুরী, পরিচালক কাজী জাহিন হাসান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফুয়াদ চৌধুরী এবং জনাব মাজহার চৌধুরী , প্রধান নির্বাহী মিডিয়াকম লিমিটেড এবং এশিয়াটিক মাইনডশেয়ার অজয় কুমার কুণ্ডু।
উল্লেখ্য, গুগল প্লে থেকে DeeptoPlay অ্যাপ ডাউনলোড করে মোবাইল ফোন বা স্মার্ট টিভিতে দেখা যাবে দীপ্ত প্লে। একই সঙ্গে www.deeptoplay.com ভিজিট করেও ‘দীপ্ত প্লে'র সঙ্গে যুক্ত হওয়া সম্ভব। দেশে ও দেশের বাইরে থাকা সব বয়সী দর্শক খুব সহজেই যুক্ত হতে পারবেন ‘দীপ্ত প্লে'র সঙ্গে। উপভোগ করতে পারবেন দেশি বিনোদন।
প্রসঙ্গত, দীপ্ত টিভির দীর্ঘ ধারাবাহিক নাটক এবং ডাবিং সিরিয়ালগুলো দর্শক এই প্ল্যাটফর্মে দেখতে পাবেন যখন- তখন, ইচ্ছেমতন সময়ে। অ্যানিমেশন ফিল্ম, ডকুমেন্টারিসহ নানা ধরনের টিভি শো। প্রায় ১০০০ এর ওপর কন্টেন্ট নিয়ে যাত্রা শুরু করা দীপ্ত প্লেতে দর্শকের সময় ফুরিয়ে যাবে, কিন্তু কন্টেন্ট ফুরাবে না; এখানে প্রতিদিনই যুক্ত হতে থাকবে নতুন নতুন কন্টেন্ট। মাসিক ও বাৎসরিক সাবক্রিপশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানগুলো টিভি'র আগেই উপভোগ করার সুযোগ পাবেন দর্শকরা।
আরও পড়ুন: সাইবার যুদ্ধে স্বাধীনতাবিরোধীদের পরাজিত করার আহ্বান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলকের
প্রতিবন্ধী ও চাকরিদাতাদের সেতুবন্ধনে কাজ করবে ‘ইমপোরিয়া’: প্রতিমন্ত্রী পলক
আইসিটি হচ্ছে অক্সিজেনের মতো: পলক
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, আইসিটি হচ্ছে অক্সিজেনের মতো। কোথাও আমরা ভুমিকা পালন করছি বাস্তবায়নকারী হিসেবে, কোথাও পরামর্শক হিসেবে আবার কোথাও সহায়ক হিসেবে।
বৃহস্পতিবার ঢাকার গুলশানে দি ওয়েস্টিন হোটেলে জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরো (বিএমইটি) কর্তৃক আয়োজিত “ডিজিটালাইজেশন অব বিএমইটি সার্ভিসের লঞ্চিং সিরেমনি” অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ আমাদের শিখিয়েছেন কাজগুলো করতে হবে আইসোলেটেড ওয়েতে নয় বরং হোল অব গভর্নমেন্ট অ্যাপ্রোচ নিয়ে, কোলাবোরেশন এবং কো-অর্ডিনেশন মাইন্ডসেট নিয়ে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন সরকার ব্যবসা করবে না, কিন্তু ব্যবসা করার ক্ষেত্র তৈরি করে দেবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান কাজ করলে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। বর্তমানে আমরা যে নিজেদের শক্তিশালী মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ হিসেবে পরিচয় দিতে পারছি তার মূল তিনটি শক্তি হলো- কৃষি, পোষাক ও প্রবাসী। এই কৃষি, পোশাক ও প্রবাসী এই তিনটি সেক্টর হচ্ছে আমাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড।
আরও পড়ুন: ৩শ’ স্কুলে কুমন শিক্ষাক্রম চালু করা হবে: পলক
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, একদিকে প্রবাসী ভাই-বোনেরা আমাদের প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে। অপর দিকে পোশাকশিল্প থেকে ভাইবোন ৩০-৩৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানী আয়ের সুযোগ করে দিচ্ছে। কৃষিতে সাড়ে তিন কোটি শ্রমিক আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। সেকারনে আমরা স্যালুট জানাই আমাদের এক কোটি ২০ লক্ষ ভাই বোনদের যাদের রক্ত, ঘাম ও শ্রমের মধ্য দিয়ে আমাদের বেতন ভাতা হয়, রাস্তাঘাট হয়, আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ মৌলিক চাহিদাগুলোর মূল যোগান দেয় আমাদের প্রবাসী ভাইয়েরা।
তিনি বলেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে তারাও স্মার্ট প্রসেস ব্যবহার করছে। যারা বেশি করে ডেটা প্রডিউস করছে এবং ডেটা এনালাইসিস করতে পারছে তাদের যে সম্পদ তৈরি হচ্ছে তা ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক সম্পদ তেল, সোনা বা হীরার থেকেও বেশি মুল্যবান হয়ে যাবে। এবং তার বড় প্রমান আজকের ডিজিটালাইজেশন অফ বিএমইটি সার্ভিস ‘প্রবাসী’ অ্যাপ।
তিনি আরও বলেন, যদি আমাদের এই মধ্যম আয়ের দেশ থেকে জ্ঞান ভিত্তিক উদ্ভাবনী অর্থনীতির দিকে যেতে হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে একটি জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হয় তবে প্রযুক্তিকে আমাদের পোশাক শিল্পে ব্যবহার করতে হবে, প্রবাসী কর্মসংস্থানে ব্যবহার করতে হবে এবং আমাদের কৃষিতেও ব্যবহার করতে হবে। তবেই আমরা একটা স্মার্ট ইকোনমির দিকে এগিয়ে যেতে পারবো।
আরও পড়ুন: ইন্টারেক্টিভ গেমিং প্ল্যাটফর্ম ‘হাসিনা অ্যান্ড ফ্রেন্ডস’ উদ্বোধন করলেন পলক
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি।
তিনি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে উভয়পক্ষের সমান দায়িত্ব ও অংশীদারিত্বের উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, যখনই আমরা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের কথা বলি, সেটাকে অংশীদারত্বই হতে হয়। সরকার সুযোগ দেয় কারণ তার সেবাটি প্রয়োজন। ইতোমধ্যে অংশীদারিত্বের ফলাফলও পাওয়া যাচ্ছে যার একটি উদাহরণ হল বিএমইটি ডাটাবেজ।
তিনি বলেন, যে বিএমইটির একার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। সবাইকে নিয়ে একসাথে কাজ করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন যে আমার কাজ কর্মীদের বিদেশ পাঠানো। এখন আর এনালগ পদ্ধতিতে পাঠানো যাবে না, ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠাতে হবে। এছাড়া ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠানোর উদ্দেশ্যই হচ্ছে কর্মীদের যেন দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে না হয়। কর্মীকে বিদেশ পাঠানোর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে হবে। ডিজিটালাইজেশন আমাদের তাতে সহায়তা করবে এবং বিদেশে কর্মী পাঠানোর ধাপ কমে আসবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এর মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম, এনডিসি। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্বে ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস (বায়রা)-এর সভাপতি মোহাম্মাদ আবুল বাশার।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহের প্রতিনিধিগণ, জনপ্রতিনিধিসহ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: দেশের প্রথম ক্যাশ-লেস ক্যাম্পাস হবে হাজী দানেশ: পলক
পদ্মা সেতু মর্যাদার প্রতীক, এর ওপর অনেকটাই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে: জয়
পদ্মা সেতু মর্যাদার প্রতীক, এর ওপর অনেকটাই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এই মেগা প্রজেক্টের ওপর একটি ভিডিও শেয়ার দিয়ে লিখেছেন, ‘পদ্মা সেতু শুধু একটি স্থাপনা নয়; এটি এখন বাঙালি জাতি তথা বাংলাদেশের গর্ব, আত্মমর্যাদা ও অহংকারের প্রতীক। এই সেতু নির্মাণের কৃতিত্ব প্রতিটি বাঙালির, আপনার-আমার-আমাদের সবার।’
জয় লিখেছেন, ‘এই সেতু নির্মাণের ফলে দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নদীবেষ্টিত ভূখণ্ড সরাসরি রাজধানীর সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। পদ্মাসেতু যেমন দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের জীবনে অর্থনৈতিক সুবাতাস বয়ে আনবে, তেমনি কমপক্ষে এক দশমিক পাঁচ শতাংশ জাতীয় আয় বৃদ্ধিও নিশ্চিত করবে। ফলে লাভবান হবে পুরো দেশের মানুষ। প্রসার হবে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটনের। ভবিষ্যতের বাংলাদেশ নির্মাণে এই সেতুর প্রভাব অনেক।’
আরও পড়ুন: ৪১৫ ল্যাম্পপোস্টের আলোয় আলোকিত পদ্মা সেতু
তিনি লিখেছেন, ‘বিশ্বের অন্যতম খরস্রোতা পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে নান্দনিক একটি সেতু- পদ্মা সেতু। বহুমাত্রিক রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ও জটিল রকমের প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে আপনার-আমার-আমাদের নিজেদের অর্থেই নির্মিত হয়েছে এই সেতুটি।’
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা লিখেছেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার কোনো উন্নয়নশীল দেশের মানুষ যে নিজেদের উদ্যোগে এরকম দৃষ্টিনন্দন ও টেকসই স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে, তা এক সময় ভাবতেও পারতো না বিশ্ব। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অদম্য আত্মবিশ্বাস ও দূরদর্শী পরিকল্পনায় এবং বাঙালি জাতির অদম্য প্রচেষ্টায় তা আজ বাস্তবে পরিণত হয়েছে। এখন বাংলাদেশকে স্যালুট দিচ্ছে সবাই। ২৫ জুন উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা পদ্মাসেতু এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মর্যাদার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। ’
সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘আমার টাকায় আমার সেতু, দেশের জন্য পদ্মা সেতু’।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু: উদ্বোধনকে ঘিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
উন্নত ভবিষ্যতের জন্য এশিয়াকে শক্তি একত্রিত করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উন্নতির জন্য এশীয় দেশগুলোকে তাদের শক্তি একত্রিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘এশীয় দেশগুলোর অভিন্ন উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ রয়েছে এবং তাদের সেগুলোকে সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করা উচিত।’
শুক্রবার টোকিওতে এশিয়ার ভবিষ্যৎ বিষয়ক ২৭তম আন্তর্জাতিক নিক্কেই সম্মেলনের এক ভিডিও বিবৃতিতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ, টেকসই ও সমৃদ্ধ এশিয়া নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সবসময় বন্ধু ও অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর জোর প্রধানমন্ত্রীর
পরবর্তী প্রজন্মের সুবিধার জন্য এশিয়ার দেশগুলো সর্বোত্তম সহযোগিতা করতে পারে এমন পাঁচটি প্রস্তাব করেছেন শেখ হাসিনা।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে আইসিটির সর্বোত্তম ব্যবহার, ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার রক্ষা, টেকসই ও ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন এবং জয়-জয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনে সহযোগিতা।
শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকটের একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ মীমাংসা খুঁজতে সবাইকে অবদান রাখার জন্য আবারও অনুরোধ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। তাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে হবে।’
বিশ্বে এশিয়ার ভূমিকার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আলোচনার মাধ্যমে মতপার্থক্য নিরসনের মাধ্যমে বিরোধপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে শান্তি নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’
জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রতিক কপ-২৬ সহ সকল আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে সক্রিয় ও সোচ্চার হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় জলবায়ু সংকট থেকে মনোযোগ সরানো উচিত নয়: প্রধানমন্ত্রী
গত ১৩ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে জাতিসংঘের গ্র্যাজুয়েশন স্বীকৃতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ২০২৬ সালের পর মসৃণ উত্তরণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে তিনি সবাইকে, বিশেষ করে জাপান ও অন্যান্য ওইসিডি দেশগুলোকে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশকে অন্তত ২০২৯ সাল পর্যন্ত অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা প্রসারিত করার অনুরোধ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও চলমান কোভিড-১৯ মহামারিতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালে মহামারির আগে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।
তিনি বলেন, ‘২০২০ সালে আমরা তিন দশমিক ৫১ শতাংশের ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির হার বজায় রাখতে পারি এবং ২০২১ সালে ছয় দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়। আমরা চলতি অর্থবছরে সাত শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধির হার অর্জনের আশা করছি।’
জাপানের বৃহত্তম মিডিয়া গ্রুপ এবং দ্য নিক্কেই ও নিক্কেই এশিয়ার প্রকাশক নিক্কেই ইন্স. ২৬ ও ২৭ মে এসম্মেলনের আয়োজন করে।
দ্য ফিউচার অব এশিয়া হলো একটি আন্তর্জাতিক সমাবেশ যেখানে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও একাডেমিক নেতারা আঞ্চলিক সমস্যা ও বিশ্বে এশিয়ার ভূমিকা সম্পর্কে খোলাখুলি ও স্বাধীনভাবে তাদের মতামত প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: উন্নয়ন প্রকল্পে পরিবেশের ওপর গুরুত্ব দেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
সিঙ্গাপুরে স্মার্ট বাংলাদেশের কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী
সিঙ্গাপুরে ডিজিটাল ইনোভেশন কংগ্রেসে ‘স্মার্ট বাংলাদেশের’ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ও আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্ত্বাবধানে ২০৪১ সালের জ্ঞানভিত্তিক, উদ্ভাবনী, উন্নত অর্থনীতির স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের কর্মপরিকল্পনা ও ডিজিটাল বাংলাদেশের সফলতাও তুলে ধরেন পলক।
শুক্রবার সিঙ্গাপুর ম্যারিনা বে সেন্ড হোটেলে চলমান তিন দিনের ‘হুয়াওয়ে এশিয়া প্যাসিফিক ডিজিটাল ইনোভেশন কংগ্রেসে ২০২২’ এর দ্বিতীয় দিনের প্রথম টেকনিকেল সেশনে তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেন।
এসময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এখন এজন্য ২০৩১ সালের মধ্যে এসডিজি লক্ষ্যমাত্র অর্জন ও উচ্চ-মধ্যবিত্ত আয় নিশ্চিতকরণ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ জ্ঞানভিত্তিক, উচ্চ অর্থনীতির উন্নত, সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এর ফলে মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়াবে ১২ হাজার ৫০০ ডলার। গড়ে উঠবে স্মার্ট বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন, যোগাযোগের ক্ষেত্রে দ্রুত পরিবর্তন আসবে।’
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংকের ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পলকের বৈঠক
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ও মতাদর্শ অর্থনৈতিকভাবে উন্নত ও শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে মাত্র ১৩ বছরে প্রতিটি ইউনিয়নের ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি পৌঁছে গেছে। ৯০ শতাংশ সরকারি সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে।’
বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশের রূপান্তরিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল দুনিয়ায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখতে এরই মধ্যে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ডিজিটাল সেতুবন্ধন রচনায় একটি সুরক্ষিত ক্লাউড অবোঠামো তৈরি করেছে আইসিটি বিভাগ। এই অবকাঠামোতে ইতোমধ্যেই ৩০টির বেশি বিভাগ, ৫০টির বেশি প্রকল্প অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। ৫০ শতাংশ দক্ষতার উন্নয়ন ঘটেছে। আইটিইউ এর গ্লোবাল সাইবার সিকিউরিটি সূচকে ২৫ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ।’
আরও পড়ুন: মাইক্রোসফটের উদ্ভাবন কার্যক্রম পরিদর্শন প্রতিমন্ত্রী পলকের
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের আইটি ও আইটিএস খাতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা এখন ক্রমেই বাড়ছে। ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর গড়ে ১০ শতাংশ করে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এরমধ্যে ই-কমার্স খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬২৪ শতাংশ। এই ধারাবাহিকতায় আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে স্থানীয় ই-কমার্স খাতে প্রবৃদ্ধি হবে ৮০ শতাংশ। দেশের ৭২ শতাংশ লেনদেন মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল মাধ্যমে হওয়ায় ডিজিটাল অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫০০ শতাংশ। ডিজিটাল ডিভাইস বাজারে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে গড়ে ২৯ শতাংশ হারে। দেশের ২৫০০টির বেশি স্টার্টআপ দেশে একটি উদ্যোক্তা সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করেছে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই প্রযুক্তি নির্ভর উদ্যোক্তা।’
পলক বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকলকে সঙ্গে নিয়েই বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশে রূপান্তরিত হবে। স্বাভাবিক গতিতেই যেনো এই রূপান্তর সম্ভব হয়, সেজন্য সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে তরুণদের উদ্ভাবনকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তাদের নিয়েই ২০৪১ সালে অর্থনীতি শক্তিতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ২৩তম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। জিডিপিতে আইসিটির অবদান বেড়ে দাঁড়াবে ২০ শতাংশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশের উদ্ভাবক এবং উদ্যোক্তারাই হবে গেম চেঞ্জার। এজন্য আইডিইএ প্রকল্পের মাধ্যমে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শিক্ষাবিদ, অ্যাক্সেলেরেটস ও ইনকিউবেটরসদের মধ্যে একটি ইকোসিস্টেম তিরি করছে সরকার।’
সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী,সরকারি ও বেসরকারি নীতিনির্ধারণী ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: দেশে ভার্চুয়াল বিজনেস প্রেজেন্স প্ল্যাটফর্ম প্রবর্তন করা হচ্ছে: পলক
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার আকাঙ্খায় বন্ধুপ্রতীম দেশ,বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বর্ধিত বিনিয়োগ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে ২০২৬ সালের এলডিসিতে উত্তরণের সুপারিশ করা হয়েছে। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। সেই উদ্দেশ্যে আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলো থেকে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বর্ধিত বিনিয়োগ প্রয়োজন।’
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রথমবারের মতো ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ বিজনেস প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে এডিবির সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য। ভৌত অবকাঠামোর পাশাপাশি সরকার বিনিয়োগ ও ব্যবসা সংক্রান্ত নিয়ম-নীতিগুলোকে আপগ্রেড ও শিথিল করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ নীতি রয়েছে এবং বিদেশি বিনিয়োগ সংসদের আইন ও দ্বিপক্ষীয় চুক্তি দ্বারা সুরক্ষিত হচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের শতভাগ এলাকা বিদ্যুতের আওতায় আনা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের সড়ক, রেলপথ ও নৌ যোগাযোগের উন্নয়ন করছি।
আরও পড়ুন: খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে জলবায়ু সহিষ্ণু ফসল উদ্ভাবনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সারা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। আপনারা যদি চান তবে আমরা একচেটিয়াভাবে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি অঞ্চল নির্ধারণ করতে পারি।
তিনি বলেন, দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিশ্চিত করে যে এখানে বিনিয়োগকারীরা প্রতিযোগিতামূলক মজুরিতে দক্ষ মানবসম্পদ পাবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মার্কিন বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার এবং অন্যান্য বাণিজ্য সুবিধার মাধ্যমে আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার করা যেতে পারে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উপযুক্ত সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি-এফটিএ আলোচনা শুরু করতে বাংলাদেশ প্রস্তুত।
তিনি উল্লেখ করেন, গত পাঁচ বছরে রপ্তানির পরিমাণ তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বেড়েছে। রপ্তানির পরিমাণ ২০১৬-১৭ সালে ৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০২১-২২ সালে সাত দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম বিশ্বস্ত উন্নয়ন সহযোগী এবং বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে অবদান রাখছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য এফডিআই এবং রপ্তানি বাজারের একক বৃহত্তম উৎস।
আরও পড়ুন: বিদেশিদের কাছে অভিযোগ না করতে শ্রমিক নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ইউএস কোম্পানিগুলো এই সুবিধা গ্রহণ করবে এবং শক্তি ও জ্বালানি, আইসিটি, অবকাঠামো, হালকা প্রকৌশল পণ্য, মোবাইল ফোন এবং ইলেকট্রনিক পণ্য, অটোমোবাইল, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিরামিক ইত্যাদির মতো সম্ভাব্য খাতে আরও বিনিয়োগ করবে।’
শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেন, ইউএস-বাংলাদেশ এনার্জি টাস্কফোর্স যা ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে চালু করা হয়েছিল তা উভয় দেশের স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে জ্বালানি সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে।
এসময় বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের মিশন লিড জে আর প্রায়র, ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের বোর্ড সদস্য এবং বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: পেছনের দরজায় নয়, আ’লীগ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে: প্রধানমন্ত্রী
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারীদের অন্তর্ভুক্তি ত্বরান্বিতকরণে লাইটশোর ভার্চুয়াল ওয়েব-সেমিনার
তথ্য প্রযুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে লাইটশোর ফাউন্ডেশন ও বিআইটিএমই এর যৌথ আয়োজনে ‘গার্লস ইন আইসিটি ডে-’ শীর্ষক এক ভার্চ্যুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে লাইটশোরের কো-ফাউন্ডার সুলতানা রাজিয়া বলেন, আইসিটি খাতে নারীদের অংশ গ্রহণ আরও বেশি বাড়ানো না গেলে নারীরা ক্ষমতায়নের দিক থেকে পিছিয়ে পড়বে। নারীদের আইসিটি অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে লাইটশোর এই বিষয়ক প্রশিক্ষণ, স্টেম নিয়ে কর্মশালা , আরিসিটি বিষয়ক হ্যাকাথন এবং সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কর্মশালা আরও বেশি পরিচলনা করবে।
বিআইটিএম এর ডিরেক্টর ও সিইও তালুকদার মোহাম্মদ সাব্বির বলেন, বিআইটিএমের কোর্সে প্রথম দিকে মেয়েদের পার্টিসিপেন্ট প্রায় নগন্য ছিলো। এখনো যে খুব বেশি তা নয় প্রায় ১৫-২০ শতাংশ এর মতো থাকে। হয়তো ঠিকমতো সচেতনার অভাবই এটার কারণ।
আরও পড়ুন: তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে বিশেষজ্ঞদের সতর্ক থাকার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
তিনি আরও বলেন, আইসিটি সেক্টোরের কোর্সে ছেলেদের আধিক্যই বেশি দেখা যায়, যেটা মোটেও কাম্য নয়। সার্বিকভাবে দেখলে যেখানে ৪০ শতাংশ এর অধিক মেয়েদের উপস্থিতি থাকা উচিত সেখানে ২০ শতাংশ এর বেশি আমাদের এখানে কখনো পার্টিসিপেন্ট হিসেবে আসেনি, যেটা দুঃখজনক।
অনুষ্ঠানে আলোচকদের মধ্যে আরও ছিলেন, এমরাজিনা ইসলাম ( ব্র্যান্ড এম্বাসেডর পেওনিয়ার, কো-ফাউন্ডার এমরাজিনা টেকনোলজিস), মো. শাহরিয়ার হোসেন ( ন্যাশনাল কনসালটেন্ট, এটুআই আইসিটি ডিভিশন), নাজিয়া হাসান হেড অব ডিজাইন (ডিজাইন এন্ড এপিআই), শুভাশিস রয় হেড অব বিজনেস, ( দ্য ডেইলি স্টার) , এবিএম জাবেদ সুলতান পিয়াস (হেড অব বিজনেস, দৈনিক প্রথম আলো)।
এই আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হয় ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম জুমের মাধ্যমে এবং এতে সারা দেশ থেকে ৭০ জনের মত নারী, তরুণ - তরুণী অংশগ্রহণ করে।
আরও পড়ুন: সোনার বাংলা গড়ার পথে অন্যতম পাথেয় তথ্যপ্রযুক্তি: একে মোমেন