ইয়াস
দুর্যোগ ঝুঁকিতে কয়রার হাজার হাজার মানুষ
সিডর, আইলা, মহসিন, বুলবুল, আম্পান ও ইয়াসের মত ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস প্রতিনিয়ত আঘাত হানে উপকূলীয় খুলনা জেলার উপকুলীয় কয়রা উপজেলায়। ঝড়-বন্যা-জলোচ্ছ্বাসের সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হয় উপকূলের মানুষের। প্রতি বছর যখনই ঝড় বন্যায় নদীর পানি বৃদ্ধি পায় তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় উপকূলের মানুষ। ভেসে যায় মৎস্য ঘের, ফসলি জমিসহ ঘর বাড়ি।
স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সেই বাঁধ আবার নির্মাণ হয়। অনেক সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধে দায়সারা ভাবে কাজ করে। তবে দুর্বল বেড়িবাঁধ কখনোই টেকসই বেড়িবাঁধ হয়ে ওঠে না। বাধেঁর তদারকি না করায় আবারও ভেঙে প্লাবিত হয়। এমনই অভিযোগ উপকূলবাসীর।
উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মঠবাড়ি গ্রামের সুবোলের মোড় থেকে মঠবাড়ি পুলিশ ক্যাম্প পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি তুলে নির্মাণ কাজ চলছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শক্তিশালী ভূমিকম্প
এলাকাবাসীর দেওয়া তথ্য মতে, ষাট দশকের দূর্বল বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় প্রতি বছর ঝড়, বন্যা, জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে, কোথাও বেড়িবাঁধ ভেঙে, কোথাও বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এলাকাবাসী। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতায় আইলার এক যুগেও নির্মাণ করা হয়নি এই বেড়িবাঁধ। তাই নদী ভাঙ্গনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসীর অর্থায়নে শুরু হয়েছে বেড়িবাঁধের নির্মাণ কাজ।
মঠবাড়ি গ্রামের বিপুল সরকার বলেন, প্রতিবছর কোন না কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় আমাদের ঘর বাড়িসহ আমাদের আয়ের প্রধান উৎস মাছের ঘের। তাই আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে নিজেরা ঘের মালিকদের কাছ থেকে টাকা তুলে বাঁধের উপর মাটি দিয়ে বাঁধ মজবুত করার চেষ্টা করছি।
আরও পড়ুন: আবারও ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো সিলেট
২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর নিরাপদ মন্ডল বলেন, ২০০৯ সালের ঘুর্ণিঝড় আইলার পর থেকে এখন পর্যন্ত কয়রা নদীর পাউবোর বাঁধের উপর পানি উন্নয়ন বোর্ড এক চাপ মাটিও দেয়নি। এবারে ইয়াসে বাঁধ উপচিয়ে ও ভেঙে মঠবাড়ি গ্রামের ৪ টা চর সহ পার্শ্ববর্তী মহারাজপুর গ্রাম প্লাবিত হয়ে গেছে। প্রতি বছর কোন না কোন দুর্যোগে প্লাবিত হয় আর এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে সেই বাঁধ নির্মাণ করে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতায় আজও এই বেড়িবাঁধে মাটি দেওয়া হয়নি। এজন্য এলাকাবাসীর সম্মিলিত চেষ্টায় আমরা বাঁধটি মেরামত করছি।
মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এলাকাবাসী নিজেদের অর্থায়নে যে রাস্তাটির কাজ করছে ওখানে পানি উন্নয়ন বোর্ড রাস্তার কাজ করার জন্য প্রস্তাবনায় রেখেছিলো। কিন্তু পাশ হওয়ার আগেই ঘুর্ণিঝড় ইয়াসে বাঁধ ভেঙে যায়। ওখানে একটা প্রকল্প দিয়ে এলাকাবাসীর অর্থ যাতে ফেরত দেওয়া যায় তার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি।’
আরও পড়ুন: সপ্তাহের ব্যবধানে সিলেটে ফের ভূমিকম্প অনুভূত
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৩/১৪-১ নম্বর ফোল্ডারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এলাকাবাসী নিজের অর্থায়নে কাজ করছে জানতে পেরে আমি সেখানে গিয়েছলাম। ওখানকার কাজের প্রস্তাবনা দেওয়া আছে। যেহেতু এলাকাবাসী কাজ করছে, এজন্য উপজেলা প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী স্যার বরাবর একটি আবেদন করার জন্য তাদেরকে বলা হয়েছে। আমাদের অফিসের নিয়মানুযায়ী সেখানে একটা প্রকল্প দিয়ে এলাকাবাসীর টাকা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
আরও পড়ুন: জলোচ্ছ্বাসে ডুবেছে সুন্দরবন, ভেসে আসছে বন্য প্রাণী
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাসেদুল ইসলাম বলেন, ‘জনগণ নিজেরা কাজ করছে এটা আমার জানা নেই। আর যদি কাজ করে থাকে সেখানে আমরা এই সময়ে কাজ করবোনা।’
এদিকে আইলা, সিডর, আম্পান তারপর ইয়াস, উপকুলীয় জনপদ কয়রাকে ছিন্নভিন্ন, বিপন্ন, বিপর্যস্ত করেছে। মানবতার চরম বিপর্যয় ঘটিয়েছে, প্রকৃতির রুদ্রমুর্তি ছিল সিডর, আইলা আর আম্ফানে কিন্তু সদ্য আবির্ভূত হয়ে শেষ হওয়া ইয়াসের রুদ্রমূর্তি থাকলেও বিপন্নতা আর জন মানুষের চরম ক্ষয়ক্ষতির দোরগোড়ায় নিয়েছে। উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী জীবন যাপন করছে।
আরও পড়ুন: বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচার রোধে সুন্দরবনে রেড এ্যালার্ট
আম্পানের ক্ষত শুকায়নি দক্ষিণ বেদকাশি, উত্তর বেদকাশি ও কয়রা সদরের বিস্তীর্ণ জনপদে, তার উপর গত ২৬ মে ইয়াস, কয়রা বরাবরই দুর্যোগ প্রবন এলাকা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ দুর্বিপাকে সর্ব প্রথম আঘাত হানে বেড়িবাধগুলোতে, কিন্তু বাস্তবতা হলো সাতক্ষীরার পানি উন্নয়ন বোর্ড কয়রাবাসীকে রক্ষার মূলস্তম্ভ বেড়িবাঁধগুলোর যথাযথ সংরক্ষন, সুদৃঢ়, মজবুত ও টেকসই করেনি, যার খেসারাত দিতে হচ্ছে লাখ লাখ মানুষের।
কেবল জীবন যাত্রায় বিপন্নতা নয়, অর্থনীতিতেও নেমে এসেছে দুরবস্থা। বাঁধ ভেঙ্গে গ্রামের পর গ্রামে প্রবেশ করেছে নদী আর সাগরের লবণাক্ত পানি যা জনসাধারণের বসত ঘর, রান্না ঘর ছুইছে। গবাদী পশু আর মানুষ একই সাথে বসবাস করছে। সাপ, ব্যাঙ, মাছ আর মানুষ একই বৃত্তে দিন ও রাত যাপন করে চলেছে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডব প্রত্যক্ষ করা যায়নি, অর্থাৎ ঝড় বা ব্যাপক ঝড় বাতাস প্রত্যক্ষ করা যায়নি কিন্তু পানি প্রবাহের অবিরাম অনুপ্রবেশ, একের পর এক বাঁধ ভেঙ্গে জনপদ প্লাবিত হওয়া যেন জীবনের সাথে জীবনের যুদ্ধাবস্থা।
কোটি কোটি টাকার চিংড়ি ভেসে গেছে, ঘের ব্যবসায়ীদের একটি অংশ পথে বসতে চলেছে। গত কয়েক দিন যাবৎ নদী সংলগ্ন ঘেরগুলোতে জোয়ারের সময়ে পানি প্রবেশ করছে ভাটায় নেমে যাচ্ছে। অনেক ঘের ব্যবসায়ীরা মওসুমের প্রথম চালানের চিংড়ি বাজারজাত করতেও পারেনি। কেবল চিংড়ি নয় ভেসে গেছে কোটি কোটি টাকার সাদা প্রজাতির মাছ।
সম্প্রতি ২/১ বছর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ভাবে সাদা প্রজাতির মাছ চাষ হচ্ছে। চিংড়ি ঘেরগুলোতে আষাঢ়, শ্রাবণ মাসে পানির লবণাক্ততা হ্রাস পেলে সাদা প্রজাতির মাছ ছাড়া হয়, আর সেই পরিস্থিতিতে সাদা মাছ চাষে বিশেষ বিপ্লব হয়েছে। কিন্তু সর্বনাশ ইয়াস আর দুর্বল, অরক্ষিত বেড়িবাধ ভেঙ্গে যাওয়ায় চাষীদের স্বপ্ন আর অর্থ দুটোই সর্বশান্ত হয়েছে।
বীজতলায় পানি জমেছে, নানান ধরনের রবিশষ্য, কাটা খদ নষ্ট হয়েছে দক্ষিণ বেদকাশি, উত্তর বেদকাশি, কয়রা সদর, মহারাজপুর আর বাগালী ইউনিয়নে। মানুষের কান্না, আতঙ্ক আর উদ্বেগে একাকার। চেষ্টা করছে বেঁচে থাকবার, আর তাই স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ নির্মানে দিন রাত কাজ করছে জনসাধারণ। যত ক্ষোভ আর অনিষ্টের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডকে।
জনসাধারণের এই চরম দুঃসময়ে কেবল উচ্চারণ হচ্ছে বেড়িবাঁধ না ভাঙ্গলে এমন ক্ষতি হতো না।
উপকুলীয় এলাকার সর্বশান্ত মানুষগুলোর বারবার উচ্চারণ তারা ‘ত্রাণ নয় তারা চায় টেকসই বাঁধ, যে বাঁধ নদীর উত্তাল স্রোতধারাকে রোধ করবে, প্রকৃতির হিংস্রতাকে প্রতিহত করবে। বারবার অর্থ বরাদ্ধ হয়, ভাঙ্গনরোধে কাজ হয়, কিন্তু বাস্তবতা হলো সেই কাজ কতটুকু টেকসই, মজবুত ও স্থায়ী বাঁধের জন্য যথাযথ?
কয়রা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভাংগন রোধে দৃশ্যত স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ চলছে। কয়রা উপজেলা প্রশাসন ভাঙ্গন কবলিত, পানি বন্দী মানুষের পাশে থাকছেন। বিশেষ করে বাঁধ নির্মাণে সশরীরে উপস্থিত থাকছেন।
উপকুলীয় এ জনপদ কয়রার সর্বস্তরের মানুষের প্রত্যাশা কয়রা উপজেলা প্রশাসন যন্ত্র সরকারের উচ্চমহলকে অবহিত করবেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বহীনতায় উপজেলাবাসী কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত এবং স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
৩ বছর আগে
খুলনার ৫ উপজেলার ৩৪ ইউনিয়নের ভোট গ্রহণ ২১ জুন
খুলনা জেলার পাঁটি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত রয়েছে। আগামী ২১ জুন ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে। করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রথম দফার ভোট গ্রহণ স্থগিত হয়।যেসব ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেগুলো হচ্ছে, কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী, উত্তর বেদকাশী, কয়রা সদর, মহারাজপুর, মহেশ্বরীপুর, বাগালী, আমাদী, দাকোপ উপজেলার পানখালী, দাকোপ, লাউডোব, কামারখোলা, কৈলাশগঞ্জ, সুতারখালী, তিলডাঙ্গা, বাজুয়া, বানীশান্তা, বটিয়াঘাটা উপজেলার গঙ্গারামপুর, বালিয়াডাঙ্গা, আমীরপুর, দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাট, বারাকপুর, দিঘলিয়া, সেনহাটি, আড়ংঘাটা, যোগীপোল, পাইকগাছা উপজেলার সোলাদানা, রাড়ুলী, গড়াইখালী, গদাইপুর, লতা, চাঁদখালী, দেলুটি, লস্কর ও কপিলমুনি।গঙ্গারামপুর ও বারকপুর ইউনিয়নে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: খুলনা উপকূলে ৬০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতিকয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস জানান, ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর বাঁধ সংস্কারের কাজ শেষ হয়েছে। পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। ২১ জুনের মধ্যে ভোট কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনের পরিবেশ ফিরে আসবে।কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম হুমায়ুন কবির জানান, দক্ষিণ বেদকাশীতে বাঁধ সংস্কারের কাজ এখনও শেষ হয়নি।
আরও পড়ুন: খুলনায় একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত, মৃত্যু আরও ৫জেলার নির্বাচন অফিসরা জানিয়েছেন, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের নিয়োগপত্র দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে প্রচার অভিযান শুরু হবে। আগামী ১০ জুন থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে। ২১ জুন নির্বাচনের সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত রয়েছে বলে তিনি জানান।
৩ বছর আগে
কয়রায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের তীব্র সংকট
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বয়ে যাওয়ার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কয়রা এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির শিকার মানুষগুলো এখনও পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন নি। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের অভাবে দুর্ভোগ বাড়ছেই। ছড়িয়ে পড়েছে পানিবাহিত রোগব্যাধি।
এছাড়া গবাদিপশুর একমাত্র খাদ্য খড় পানিতে পচন ধরেছে, আবার কোথায়ও জোয়ারের তোড়ে ভেসে গেছে। এ কারণে গবাদিপশুর খাদ্য নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা। কেউ কেউ লোনা পানির ভিতর বন্দী অবস্থায় রয়েছেন, কেউ কেউ ঘরবাড়িসহ সর্বস্ব হারিয়ে অন্যত্র অবস্থান করছেন। বিশেষ করে মাছের ঘের, খামার, উঠতি ফসল, ব্যবসা হারিয়ে তারা কঠিন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ফলে অনেকে ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রকাশ করে টেকসই বেড়িবাঁধের দাবি জানাচ্ছেন।
গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কয়রার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া এলাকায় কপোতাক্ষ নদের ভেঙে যাওয়া বাঁধ স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত দেখতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েন খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তারুজ্জামান বাবু।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়রা পাউবোর ১৩/১৪-১ ও ১৩/১৪-২ নম্বর পোল্ডারের (চারদিকে নদীবেষ্টিত দ্বীপ অঞ্চল) অন্তর্ভুক্ত। এর পূর্ব পাশে সুন্দরবনের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে শাকবাড়িয়া নদী, দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে কপোতাক্ষ ও উত্তর পাশে রয়েছে কয়রা নদী। উপজেলা খুলনার হলেও এলাকাটি পাউবোর সাতক্ষীরার অন্তর্ভুক্ত। ২৬ মে (বুধবার) ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে কয়রা, কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদীর পানি জোয়ারে ৬ থেকে ৭ ফুট বৃদ্ধি পায়। এতে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ১১টি স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে এবং উপচে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়। বাড়িঘরে জোয়ারের পানি ঢোকায় ২৫ হাজারের মতো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের শাকবাড়িয়া নদীর গাতিরঘেরী বেড়িবাঁধের ওপর আশ্রয় নেয়া কুলসুম বেগম বলেন, ‘ভালো কুরি (করে) বাঁধ মেরামত না করায় এট্টু (একটু) জোয়ার হুলিই (হলেই) আমরা ডুবি। ঘর ছাইরে (ছেড়ে) বাঁধে আইসে (এসে) উঠি। আমাগে খাবার নেই। লবণ পানি খাতি (খেতে) পারি না। শরীল (শরীর) গতর ভালো না। কষ্টে মানসির (মানুষের) মুখ হাড়ির তোলা (হাড়ির তলা) কুরি (করে) রাখছে’।
তিনি বলেন, 'গাঙ বাড়ে (নদীর পাড়ে) যাগে (যাদের) বাড়ি সুন্দিবেলা (সন্ধ্যাবেলা) হলেই তাগে (তাদের) ছাবাল (ছেলে) ম্যাইয়ে (মেয়ে) লইয়ে (নিয়ে) চিন্তায় পড়ে যায়। জোয়ারে হুলি যদি আবারও ডুইবে যায়।'
দুই নম্বর বাগালী ইউনিয়নের বামিয়া গ্রামের কলেজছাত্র আব্দুল্লাহ আল জুবায়ের বলেন, খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ওষুধের অভাবে গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছেই। বাঁধ ভেঙে এ ইউনিয়েনের গ্রামগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ এলাকা থেকে জোয়ারের পানি নেমে গেলেও অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকাগুলোতে এখনও হাঁটুপানি রয়েছে। তবে, পানিবন্দি এলাকাগুলোতে নলকূপ ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে মারাত্মকভাবে। চরম খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে নিম্নআয়ের লোকজন পরিবার-পরিজন নিয়ে মারাত্মক বিপাকে পড়েছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গ্রামের কেউ এখনও কোনো সরকারিভাবে ত্রাণ পায়নি। কিছু এনজিও বিশুদ্ধ পানি দিয়েছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
দক্ষিণ বেদকাশী এলাকার নাজমুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের এখানে দুই জায়গায় বেড়িবাঁধ ভেঙেছিল। এক জায়গায় রিংবাঁধ হয়ে গেছে। এক জায়গায় হয়নি। শাকবাড়িয়া নদীর গাতিরঘেরী বাঁধের ভাঙন এখনও ঠিক হয়নি। আংটিহারা বেড়িবাঁধ স্বেচ্ছাশ্রমে গ্রামবাসী ঠিক করেছেন। আমাদের ইউনিয়নের প্রায় ৩০০ পরিবার মানুষ ওয়াপদার বেড়িবাঁধে রয়েছে। কয়েকটি পরিবার সাইক্লোন সেন্টারে রয়েছে। এলাকার মানুষ ত্রাণ নয় টেকসই বেড়িবাঁধ চাই।'
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: খুলনা উপকূলে ৬০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি
গোবিন্দপুর আব্দুল জব্বার মাধ্যমিক বিদ্যালয় সাইক্লোন সেন্টারে থাকা ইকবাল বলেন, মিষ্টি পানি ও খাবারের অভাব রয়েছে। অনেকবার দাবি করার পর মেডিকেল টিম এখন নিয়মিত আসছে।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, মহারাজপুর, বাগালী ও উত্তর বেদকাশী তিনটা ইউনিয়নের ২৫টি গ্রামে এখনও পানি রয়েছে। সবাই পানিবন্দি রয়েছেন। প্রত্যেক ইউনিয়নে দুই-আড়াই টন চাল দেওয়া হয়েছে। নগদ টাকা ও শুকনা খাবারের প্যাকেট দেয়া হয়েছে। আরও ৫টন চাল এসেছে নগদ টাকাও এসেছে। যা পর্যায়ক্রমে দেয়া হবে।
বাঁধ মেরামত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কয়রায় ১২৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ প্রকল্প একসঙ্গে তো বাস্তবায়ন হবে না। কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। কিছু চলমান রয়েছে। এছাড়া কিছু প্রকল্প প্রস্তাবিত রয়েছে।
৩ বছর আগে
উপকূলজুড়ে ছড়াচ্ছে পানিবাহিত রোগ, সংকট সুপেয় পানির
খুলনার উপকূলজুড়ে সুপেয় পানির সংকটের পাশাপাশি পানিবাহিত রোগও ছড়াতে শুরু করেছে। কয়রার ৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকসহ উপকূলীয় এলাকায় বেশ কিছু কমিউনিটি ক্লিনিক পানিতে ডুবে আছে। ফলে ওই সব এলাকায় চিকিৎসাসেবা প্রায় গতিহীন হয়ে পড়েছে। মেডিকেল টিম থাকলেও বাঁধ ভাঙা থাকার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় দুর্গম এলাকার মানুষ চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না।
প্লাবিত এলাকায় এখন খাবার পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। লোকজনকে অনেক দূর থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এছাড়া প্লাবিত এলাকার বেশিরভাগ নলকূপের পানি পানযোগ্য নয়। খাবার পানির প্রধান উৎস পুকুর ডুবে যাওয়ায় পিএসএফ থেকে পানি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
কয়রার দশালিয়ার ইকবাল হোসেন বলেন, ‘গত চারদিন ধরে আমরা ১০টি পরিবার মাধ্যমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছি। কিন্তু গত রবিবার দুপুর পর্যন্ত কোনও ধরনের চিকিৎসাসেবা বা খাদ্য সহায়তা পাওয়া যায়নি। এখানে শিশুসহ ৬-৮ জন ডায়রিয়াসহ নানা সমস্যায় রয়েছেন।’
দশালিয়ার সফুরা বেগম বলেন, ‘দুই দিন ধরে পায়খানা ও বমি হচ্ছে। কিন্তু কোনও চিকিৎসাসেবা পাচ্ছি না। স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিক পানিতে ডুবে থাকায় তা বন্ধ রয়েছে। আর কয়রা সদর ২৫ কিলোমিটার দূরে। যোগাযোগ সমস্যার কারণে সেখানে যাওয়াও যাচ্ছে না।’
কয়রার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সদীপ বালা বলেন, ‘সাতটি কমিউনিটি ক্লিনিক পানিতে ডুবে আছে। তারপরও সেখান থেকে চিকিৎসাসেবা দেয়ার চেষ্টা চলছে। এছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নে মেডিকেল টিম দেয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত ওরস্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুত রয়েছে। যা সরবরাহ করা হচ্ছে।’
কয়রা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আরএমও ডা. তমাল কুমার দাশ বলেন, ‘এখানে এমনিতেই ডায়রিয়ার রোগী নিয়মিত আসে চিকিৎসাসেবা নিতে। তবে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর ২-৩ দিনে এ ধরনের রোগী বেড়েছে।’
কয়রার আটরা গ্রামের সাজেদা খাতুন বলেন, ‘গ্রামের সব মানুষ পাশের একটি পুকুরের পানি পান করতাম। সেটি ডুবে যাওয়ার পর তিন মাইল দূরের কালনা সরকারি পুকুর থেকে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে।’ এভাবে ভেলায় চড়ে পানি সংগ্রহ করতে তাদের একদিনের অর্ধেক সময় ব্যয় হচ্ছে।
কলেজ শিক্ষক মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘প্লাবিত এলাকাজুড়ে এখন খাবার পানির কষ্ট দেখা দিয়েছে। দূর থেকে খাবার পানি আনার কষ্টে অনেকেই এলাকার নলকূপের আয়রনযুক্ত পানি পান করছেন। এতে অনেক পরিবারের সদস্যদের ইতোমধ্যেই পেটের পিড়া দেখা দিয়েছে।’
গৃহিনী সালমা বেগম বলেন, ‘দুর্যোগের দিন অনেক বৃষ্টি হয়েছিল। তখন অনেকেই পানি ধরতি পারলিও আমরা পারিনি। সে সময় গাঙের পানির তোড়ে সব ভাসায়ে নিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়। তখন ঘরের মালামাল ও বাচ্চা-কাচ্চা সামলাতি আমাগের হিমশিম অবস্থা। খাবার পানি ধরার সময় পাইনি।’
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: খুলনা উপকূলে ৬০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি
কয়রার মহারাজপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. বায়জিদ হোসেন বলেন, ‘দশহালিয়া বেঁড়িবাধ ভেঙে মহারাজপুরে প্রায় সব এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গত শুক্রবার ও শনিবার দুপুরের জোয়ারের পানি প্রবেশ করে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ দুই দিনে রাস্তায়ও পানি উঠেছে। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে এখানকাবাসীকে।’
৩ বছর আগে
খুলনায় ইয়াসের প্রভাবে সুপেয় পানির অভাব, মরছে মাছ
গত ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে খুলনার উপকূল কয়রার বিভিন্ন গ্রামের ঘরবাড়ি, মৎস্য ঘের, ফসলি জমি। এখনো জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রাম। প্রতিদিন জোয়ারে পানি উঠে যাওয়ায় বানভাসিদের সীমাহীন দুর্ভোগে পরতে হচ্ছে।
চারিদিকে এতো পানি, কিন্তু সুপেয় পানির অভাব রয়েছে। খাবার পানির উৎস বন্ধ। নেই পর্যাপ্ত ওষুধ, খাবার স্যালাইন। রান্না তো দূরের কথা, ঘরের চৌকির ওপর থাকাও দুরূহ ব্যাপার হয়ে পরেছে। ফলে রোগ বালাই ছড়িয়ে পড়াসহ বিভিন্ন মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন কয়রা উপকূলীয় এলাকার মানুষজন।
মহারাজপুর ইউনিয়নের শিমলারাইট পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মুজিবুর রহমান বলেন, পানি রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি ও মসজিদে পর্যন্ত প্রবেশ করেছে। পুকুর ও ঘেরগুলো নোনা পানিতে ভেসে গিয়েছে। বিশেষ করে রুই, কাতলাসহ মিষ্টি পানির মাছ মরে ভেসে উঠেছে। মরা এসব মাছ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না কি অবস্থা।
দশহালিয়া গ্রামের বিকাশ চন্দ্র মৃধা বলেন, ঘর-বাড়ি ও মাছের ঘের ভেসে গেছে। মাছ মরে যাচ্ছে।
এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
গোবিন্দপুর গ্রামের আবুল হাসান বলেন, 'এই সময় মৎস্য চাষের একটা উপযুক্ত সময়। কিন্তু নদী ভাঙনে সবকিছু শেষ। একবছরেও টেকসই বাঁধ পেলাম না। যে কারণে সামান্য জোয়ারেও পানি প্রবেশ করছে। আমার ঘর-বাড়ি, ঘেরসহ সবকিছু শেষ।'
বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, সাইক্লোন সেল্টারে আশ্রয় নেয়া মানুষজন মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা কোমড় সমান পানি সাঁতরিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রান্না করা খাবার দিয়ে আসলেও তা পর্যাপ্ত নয়। অনেকেই একবেলা খেয়ে অন্যবেলা না খেয়ে দিন পার করছেন। এছাড়া গরু-ছাগল, হাস-মুরগি এক ঘরে নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে।
টিউবওয়েলগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় খাবার পানির তীব্র সমস্যা দেখা দিয়েছে। অনেক কষ্টে পানি জোগাড় করতে হচ্ছে তাদের।
মহারাজপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোস্তফা কামাল বলেন, দুর্ভোগের শেষ নেই। উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নে পানিতে তলিয়ে যায়। জোয়ারের সময় ঘর তলিয়ে যাচ্ছে। ভাটার সময় কিছুটা কমছে। তবে মাঝামাঝি লোকালয়ে যারা থাকে ভাটার টানে ওই এলাকার পানি কমে যাওয়ার ব্যবস্থা নেই। আমার এলাকায় কিছু উঁচু টিউবওয়েল রয়েছে সেটা থেকে পানি খাচ্ছে এই এলাকার মানুষ। তবে অন্য এলাকাগুলোতে সুপেয় পানির সংকট রয়েছে। হাটু পানি পেরিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে তাদের। সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এখানকার মানুষের।
তিনি বলেন, ‘মাছের ঘের-পুকুর তলিয়েছে। নোনা পানি প্রবেশ করায় অনেক স্থানে মাছ মরেছে। সেখান থেকে দুর্গন্ধও ছড়াচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: খুলনা উপকূলে ৬০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি
কয়রা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম আলাউদ্দিন জানান, উপজেলার সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর এলাকা তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ১০০টি ঘের এবং ৭৫০টি পুকুর তলিয়ে গেছে। সবমিলিয়ে ২১ কোটি ৪৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, মিষ্টি পানির পুকুরগুলোর মাছ মরে ভেসে উঠেছে। যেসব এলাকায় মাছ মরেছে সেখানে কিছুটা দুর্গন্ধও ছড়িয়েছে। সার্বিক বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সুদীপ বালা বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলয়েট, খাবার স্যালাইন, ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। কর্মী স্বল্পতা রয়েছে ১১৭টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। ফিল্ডে কর্মী রয়েছে ৫২ জন। এই জনবল দিয়ে উপজেলায় কাজ করতে হচ্ছে। তাদের নিজেদের বাড়িতেও পানি প্রবেশ করেছে। তবুও চেষ্টা করা হচ্ছে। কয়রা উপকূলীয় এলাকার মানুষ লবণ পানিতে থাকতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। পুকুর এবং নলকূপের পানি খেয়ে অভ্যস্ত তারা।
তিনি বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসন ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল পানি সরবরাহ করছে। ফলে বড় ধরনের কোন সমস্যা হচ্ছে না। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু এলাকায় ডায়রিয়া হতে পারে। তবে প্রকোপ আকার ধারণ করেনি।’
৩ বছর আগে
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: খুলনা উপকূলে ৬০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি
খুলনার উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আঘাতে ১০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ, ৭ হাজার মৎস্য ঘের ও অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের ঘরবাড়ি এবং ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রাথমিকভাবে ৬০ কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
৩ বছর আগে
ইয়াসে সাতক্ষীরায় ৪ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর, ৮ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
পরিসংখ্যানে বলা হয়, সাতক্ষীরায় ৭৮ ইউনিয়নের মধ্যে ১২ ইউনিয়নের ৫০ হাজার ৮০০ মানুষ ও চার হাজর ৭৬৫ বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ৮ কোটি টাকার মাছ নদীতে ভেসে গেছে।
আরও পড়ুন: ইয়াসের প্রভাবে সুন্দরবনে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে ৪টি টিম গঠন
সংশ্লিষ্টরা জানান, সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে ধসেপড়া ভেড়িবাঁধের অধিকাংশ জায়গা সংস্কার করা সম্ভব হলেও দ্বীপ ইউনিয়ন শ্যামনগরের পদ্মপুকুর ও আশাশুনির প্রতাপনগর ইউনিয়ন এখনও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে আছে। এই দুটি ইউনিয়নে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তবে স্থানীয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। দুর্গত এলাকায় খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে বাগেরহাটে সাড়ে ৬ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে : মৎস্য বিভাগ
অনেক স্থানে এখনও সরকারি সহায়তা পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া দুর্গত এলাকায় খাবার পানি ও শুকনা খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস : খুলনায় অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত
৩ বছর আগে
ইয়াসের প্রভাবে সুন্দরবনে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে ৪টি টিম গঠন
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের জন্য চারটি টিম গঠন করা হয়েছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. মইউদ্দিন খান ওই চারটি টিম গঠন করেন।
তিনি জানান, ইয়াসের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের জন্য সুন্দরবনের চারজন রেঞ্জ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনে সরজমিনে ঘুরে দেখে আগামী সপ্তাহের মধ্যে তারা রিপোর্ট দাখিল করবে। ওই রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে সুন্দরবনের বন্য প্রাণী এবং বনজ দ্রব্যের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ পর্যন্ত সুন্দরবন থেকে ভেসে যাওয়া চারটি মৃত এবং দুটি জীবিত হরিণ উদ্ধারের তথ্য তাদের কাছে রয়েছে। তবে সুন্দরবনের বনজদ্রব্যের তেমন ক্ষতির কোন খবর পাওয়া যায়নি বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে বাগেরহাটে সাড়ে ৬ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে : মৎস্য বিভাগ
তথ্য মতে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব প্রথমে সুন্দরবনে পড়ে। নদ-নদী ও খালে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হয়।
বন বিভাগ জানায়, বুধবার অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে সুন্দরনবনের বিভিন্ন অংশ ডুবে যায় এবং প্রায় ৫ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়েছে। বৃহস্পতিবারও জোয়ারের সময় সুন্দরবনে দুই ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়। তবে নদ-নদীতে প্রচন্ড ঢেউ ও পানির চাপ থাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপনের কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস : খুলনায় অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা এবং চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষকরা সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপনে কাজ করছে।
শরণখোলা রেঞ্জর সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন জানান, সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের কাজ শুরু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: সাতক্ষীরার ৪৪ পয়েন্টে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ
৩ বছর আগে
সাতক্ষীরা উপকূলীয় এলাকার মানুষ দিন কাটাচ্ছে উদ্বেগ আর উৎকন্ঠার মধ্যে
সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব এখনো কাটেনি।
শুক্রবার সকাল থেকে উপকূলীয় এলাকায় মাঝে মাঝে দমকা হাওয়া ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।
এই আবহাওয়ার মধ্যে স্থানীয় লোকজন তাদের জান, সম্পদ রক্ষার্থে স্বেচ্ছা শ্রমের ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ অব্যাহত রেখেছে। যে ৪৪ টি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়েছিল তার অধিকাংশ সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে ইয়াসের প্রভাবে ১৬ গ্রাম প্লাবিত
শ্যামনগর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের লোকসংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লাখ। আর আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে লোকসংখ্যা প্রায় দুই লাখ ৭০ হাজার। এ দুই উপজেলা খোলপেটুয়া, ইছামতি চুনকুড়ি, চুন, মালঞ্চ নদনদী দিয়ে বেষ্টিত। এসব জনপদ নদনদীর পানি থেকে রক্ষা করতে রয়েছে ২০৫ কিলোমিটার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধে ঘেরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করে এ দুই উপজেলার মানুষ টিকে আছে। প্রায় প্রতিবছর কোনো না দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয় এসব জনপদের মানুষের।
আরও পড়ুন: 'ইয়াস' মোকাবিলায় জনপ্রতিনিধিদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর
২০২০ সালের ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে এ দুই উপজেলা লন্ডভন্ড করে দিয়ে যায়। এখন মানুষ সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠে ঘুরে দাঁড়িতে পারেনি। ঠিক এক বছর পর আবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর কবলে পরে এসব জনপদ।
সরেজমিনে শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কথা বলে দেখা গেছে, বুধবার জোয়ারে যেসব বাঁধ ভেঙ্গে ও পানি উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকেছিল, তার অধিকংশ এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। শ্যামনগরের দ্বীপ ইউনিয়ন পদ্মপুকুর ও আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ এখনও সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। ফলশ্রুতিতে ঐ দুটি ইয়নিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ধ্বসে পড়া বেড়িবাঁধ নির্মাণের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ঐ এলাকায় শুকনো খাবার ও সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকছে।
আরও পড়ুন: ভোলায় ইয়াসের প্রভাবে চরাঞ্চল প্লাবিত, ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল জানান, পদ্মপুকুর ও প্রতাপনগর ইউনিয়নে ধ্বসে পড়া বেড়িবাঁধ এখনো নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। অন্য স্থানে সংস্কার কাজ সম্ভব হয়েছে। দূর্গত এলাকায় শুকনো খাবার ও সুপেয় পানি পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি না পেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।
৩ বছর আগে
ভোলার চর পাতিলায় চারদিকে থৈ থৈ পানি, ৫ হাজার মানুষ ভাসছে
চারদিকে থৈ থৈ পানি। তার মধ্যে ভাসছে হাসেম হাওলাদারের পরিবার। মেঘনার জোয়ারের পানির আঘাতে হাসেমের ঘরসহ মালামাল ভাসিয়ে নেয়। এর পর তার স্ত্রী রোসনা বিবিকে নিয়ে আশ্রয় নেয় ছেলে নিজাম হাওলাদারের ঘরে।
এ চিত্র দেখা যায় বৃহস্পতিবার ভোলার সর্বদক্ষিনে চরফ্যাসন উপজেলার বঙ্গপোসাগর মোহনায় দুর্গম চর কুকরী মুকরি ইউনিয়নের দক্ষিণ চর পাতিলা গ্রামে।
ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বুধবার নিজামের ঘরের ভিটিসহ একাংশ জোয়ারে ভেসে গেছে। কোন রকমে ঘরে মাঁচা করে থাকছেন তারা সবাই। প্রতিদিনি দুইবারে ১২ ঘন্টা বানের পানিতে তলিয়ে থাকে পুরো গ্রাম। নিজাম ছাড়াও রোসনা বিবির আরও ৫ ছেলে বারেক হাওলাদার, বাদশা, বশির, কাদের ও কাজল একই এলাকায় বসবসাস করেন। সবার ঘরের মাটি জোয়ারে ভেসে গেছে। পানিতে তলিয়ে আছে তিন দিন।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে ইয়াসের প্রভাবে ১৬ গ্রাম প্লাবিত
খাল, বিল সব নোনা পানিতে তলিয়ে থাকায় খাবার পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নলকূপ থেকে বিশুদ্ধ পানি আনতে যান রোকসনাসহ তার ২ নাতনি। ফেরার সময় মেঘনার জোয়ারে সব তলিয়ে যায়। দুই নাতনিকে নিয়ে সাঁতার কেটে এক কলসি পানি নিয়ে আসেন বাড়িতে। পানিতে তলিয়ে থাকায় চুলো জ্বলে নি। চেয়ারম্যানের দেয়া বিস্কুট ও চিড়া খেয়ে সকাল কাটিয়েছেন।
হাসেম ও রোসনা দম্পতির চোখে মুখে শুধু অজানা আতংক। কিভাবে তারা মাথার ছাউনি দিবে। তাদের ভবিষ্যৎ কি।
আরও পড়ুন: 'ইয়াস' মোকাবিলায় জনপ্রতিনিধিদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর
হাসেম হাওলাদার ও রোসনার মতো অসংখ্য পরিবারের এমন দুর্ভোগ চর পাতিলা গ্রামে। বেঁছে থাকার জন্য এক প্রকার চলছে যুদ্ধ। চর পাতিলার প্রায় ৫ হাজার মানুষ ২ বেলা জোয়ার ভাটায় ভাসছে। ওই এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানির এখন তীব্র শঙ্কট। কুকরীর চেয়ে পাশ্ববর্তী ঢালচরের অবস্থা আরও খারাপ। ঝড়ের পরে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বেড়েছে সবর্স্বহারা মানুষগুলোর দুর্ভোগ।
চরফ্যাসনের কুকরী মুকরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হাসেন মহাজান সাংবাদিকদের জানান, কুকরী মুকরীতে তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে বেশি দুর্গতদের কিছু সহায়তা করেছেন। আর উপজেলা প্রশাসন বৃহস্পতিবার বিকালে দেড়শ পরিবারকে শুকনো খাবার দিয়েছে। দুর্গত মানুষদের পূর্ণবাসনে বড় সহায়তা দরকার। তা না হলে এসব মানুষের পক্ষে ঘুরে দাড়ানো সম্ভব না।
চরফ্যাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রুহুল আমিন সাংবাদিকদের জানান, চর পাতিলায় বৃহস্পতিবার বিকালে দেড়শ পরিবারকে শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে। তালিকা প্রণয়ন শেষ হলে ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রাণের পাশাপাশি গৃহনির্মাণ সামগ্রী দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ভোলায় ইয়াসের প্রভাবে চরাঞ্চল প্লাবিত, ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
এদিকে ভোলা জেলায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে প্রায় ৪ হাজার ৩০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ বাড়ি ঘরেরই আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া অতি জোয়ারের পানির স্রোতে প্রায় ২ হাজার গরু মহিষ নিখোঁজ রয়েছে। মনপুরায় ৬৫৪টি পুকুর ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে জোয়ারে।
এখনো নিম্নাঞ্চলের ২৩ টি চরে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ জোয়ারে পানিতে প্লাবিত হচ্ছে বলে প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে।
জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের দ্বায়িত্বে থাকা জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মো. মোতাহার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ভোলা জেলায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে প্রায় ৪ হাজার ৩০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ বাড়ি ঘরেরই আংশিক ক্ষতি হয়েছে। তাদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ঝড়ে নিহত ১ জনের পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।
৩ বছর আগে