ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান
নতুন করে ইভ্যালি চালু করতে আদালতে আবেদন
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পুনরায় চালু করতে আদালতের মাধ্যমে গঠিত বোর্ডের কাছে আবেদন করেছেন কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। আবেদনে তিনি নিজেকে এবং তার মা ও বোনের স্বামীকে পরিচালনা বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করতে বলেছেন।
বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খুরশীদ আলম সরকারের একক কোম্পানি বেঞ্চে এ আবেদন করেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম।
তিনি বলেন, এ ছাড়া হাইকোর্টে আরেকটি আবেদন দায়ের করা হয়েছে। এ আবেদনে মো. রাসেল ও শামীমা নাসরিনকে যেন অযথা মামলা দিয়ে হয়রানি না করা হয়, তার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া ই-ভ্যালি পুনরায় চালু করতে পারলে পাওনাদারদের পাওনা পরিশোধ করা হবে বলেও আবেদনকারী তার আবেদনে উল্লেখ করেছেন। আগামী রবিবার এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।
আরও পড়ুন: ইভ্যালির সম্পত্তি যে কোন স্বনামধন্য ফার্ম দিয়ে অডিট করতে নির্দেশ
প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর আরিফ বাকের নামের এক গ্রাহক গুলশান থানায় ইভ্যালির মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরদিন বিকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডের বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে এক গ্রাহকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছর ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব ধরনের সম্পদ বিক্রি এবং হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এছাড়া আদালত কেন ইভ্যালিকে অবসায়ন করা হবে না তা জানতে একটি নোটিশ ইস্যু করেন। এরপর ওই বছর ১৮ অক্টোবর ইভ্যালির ব্যবস্থাপনায় আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে (চেয়ারম্যান) পাঁচ সদস্যের একটি বোর্ড গঠন করেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: ইভ্যালির প্রতারণার মামলা: তাহসান খানের ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন
গত ১৯ এপ্রিল ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে করা রিট মামলায় পক্ষভুক্ত হতে সংস্থাটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের আবেদন গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। আদালত আদেশে বলেন, এখন থেকে এ রিট মামলায় শামীমা নাসরিন ১৫ নম্বর বিবাদী হিসেবে গণ্য হবেন। এরপর গত ২২ এপ্রিল শামীমা নাসরিন জামিনে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান।
এছাড়া গত ২১ এপ্রিল চেক প্রতারণার ৯ মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেলকে জামিন দেন আদালত। ওই দিন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে জামিন পান তিনি। তবে তার বিরুদ্ধে আরও মামলা থাকায় কারামুক্ত হতে পারেননি রাসেল।
২ বছর আগে
ইভ্যালি চেয়ারম্যান কারামুক্ত
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরীন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হন তিনি।
কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার হালিমা খাতুন জানান, গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামিমা নাসরিনকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। মুক্তির আদেশ কারাগারে পৌঁছালে ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বুধবার সন্ধ্যায় কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়।
উল্লেখ্য,ইভ্যালির চেয়ারম্যান ও নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেলকে গেল বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়। সে সময় প্রতারণার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করেন গ্রাহকরা।
আরও পড়ুন: ইভ্যালির সিইও ও চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
ইভ্যালির সিইও ও চেয়ারম্যান ৩ দিনের রিমান্ডে
২ বছর আগে
ইভ্যালির জন্য বোর্ড: হাইকোর্টে সাবেক তিন সচিবের নাম দাখিল
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি লিমিটেড ব্যবস্থাপনায় বোর্ড গঠনের লক্ষ্যে হাইকোর্টের কাছে সাবেক তিনজন সচিবের নাম প্রস্তাব করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এই তিনজন হলেন-ভূমি মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. রেজাউল আহসান ও ভূমি সংস্কার বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত সচিব ইয়াকুব আলী পাটোয়ারী। সাবেক এই তিন সচিবের নাম দেখে হাইকোর্ট বর্তমান সচিবদের নামও দিতে বলেছেন। একই সঙ্গে ইভ্যালির পরিচালনা বোর্ড গঠনের বিষয়ে ১৮ অক্টোবর আদেশ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন। বুধবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্টের কোম্পানি বেঞ্চ একাত্মতা জানিয়েছেন।
ইভ্যালির দুজন সদস্যই (চেয়ারম্যান ও সিইও) কারাগারে থাকায় ওই মামলার শুনানিতে গতকাল মঙ্গলবার একই বেঞ্চ ইভ্যালির বিষয়ে চার সদস্যের বোর্ড গঠন করে দেয়ার কথা বলেন। আদালত বলেন, কোম্পানির দুজন সদস্য, দুজনই কারাগারে। কীভাবে বোর্ড মিটিং হবে? বোর্ড মিটিং করতে গেলেও তা করা যাচ্ছে না। বোর্ড মিটিং না করতে পারলে টাকা কোথায় কী আছে, সে বিষয়েও জানা যাচ্ছে না। সাবেক বিচারপতি, সচিব ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসহ চারজন রাখা যেতে পারে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আইনজীবীকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে কথা বলে বর্তমান বা সাবেক সচিব, অতিরিক্ত সচিব-এমন তিনজনের নাম দিতে বলেন। এর মধ্য থেকে যাচাই–বাছাই করে একজনের নাম চূড়ান্ত করা হবে জানিয়ে আদালত বুধবার আদেশের জন্য দিন রাখেন।
আরও পড়ুন: ইভ্যালির সিইও ও চেয়ারম্যান ৩ দিনের রিমান্ডে
আজ আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আইনজীবী তাপস কান্তি বল বলেন, কথা বলে অবসরপ্রাপ্ত তিনজন সচিবের নাম দেয়া হয়েছে। আদালত বলেন, কর্মরত সচিবদের নামও দেন, শুধু অবসরপ্রাপ্ত কেন?
আইনজীবী তাপস বলেন, অনুমতি পেলে হলফনামা করে দাখিল করা যাবে। আদালত অনুমতি দেন। একপর্যায়ে আদালত বলেন, নামগুলো পেতে হবে, যাচাই–বাছাই করতে হবে। মন্ত্রণালয় ভালো লোকের নাম দেবে আশা করি। যাচাই–বাছাই করে চেষ্টা করব, তুলনামূলক ভালো ও সততা নিয়ে প্রশ্ন আসবে না-এ রকম লোককে দিতে। পরবর্তী তারিখে (১৮ অক্টোবর) আদেশের জন্য রাখা হলো।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পণ্য সরবরাহ করছে না-এমন অভিযোগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে আরিফ বাকের নামের এক গ্রাহক গুলশান থানায় মামলা করার পরদিন বিকেলে ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান রাসেলের স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে দু’জনই কারাগারে। এরই মধ্যে ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে হাইকোর্টের কোম্পানি আদালতে আবেদন করেন ইভ্যালির গ্রাহক ফরহাদ হোসেন। এতে ইভ্যালি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠনেরও আবেদন জানান। এ আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে গত ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি ও হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ইভ্যালিকে কেন অবসায়ন করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদালত। এজন্য একটি নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের মতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে: ডিএমপি
এর ধারাবাহিকতায় ৩০ সেপ্টেম্বর বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আদালত ইভ্যালির সব নথিপত্র ১১ অক্টোবরের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে রেজিস্ট্রার ফর জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মকে নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী ইভ্যালির সব নথি হাইকোর্টে জমা দেওয়া হয়েছে। জয়েন্ট স্টক কোম্পানির রেজিস্ট্রার এই নথি গত রোববার হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দেন। বিশাল আকারের এই নথি আদালতে জমা পড়েছে। তবে বিশাল আকৃতির এই নথি এখনও খতিয়ে দেখা হয়নি বলে জানিয়েছেন আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসাইন।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে ইভ্যালির চেয়ারম্যান-পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা
৩ বছর আগে
রিং আইডির পরিচালক গ্রেপ্তার
পনজি স্কিমে জালিয়াতির অভিযোগে বেসরকারি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান রিং আইডির পরিচালক মো. সাইফুল ইসলামকে শনিবার রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর ভাটারা থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখসহ মোট ২৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। সিআইডি মামলাটি তদন্ত করছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল তার সংগঠন রিং আইডি ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোন অনুমোদন পায়নি বলে স্বীকার করেছেন।
সিআইডির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অর্থ উপার্জনের প্রলোভন দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে মে মাসে ২৩ কোটি ৯৪ লাখ, জুন মাসে ১০৯ কোটি ১৩ লাখ এবং জুলাই মাসে ৭৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে সংগ্রহ করেছে রিং আইডি।
গ্রাহকদের থেকে নেয়া অর্থ অবৈধভাবে যাতে দেশের বাইরে পাচার করতে না পারে সেজন্য রিং আইডির সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার জন্যে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করেছে সিআইডি।
আরও পড়ুন: ধামাকা শপিংয়ের কোন লাইসেন্স ও একাউন্ট ছিল না: র্যাব
ইভ্যালির সম্পত্তি বিক্রি ও হস্তান্তরে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা
ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ চেয়ে হাইকোর্টে রিট
৩ বছর আগে
ইভ্যালি কাণ্ড: ভদ্রজনের কি কোন দায় নেই
ইভ্যালির দুরাবস্থা ও এই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির মালিক দম্পতির গ্রেপ্তার-পরবর্তী লেখালেখি ও তর্ক-বিতর্কে দেশে এখন এক প্লাবন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। লিখব কি লিখব না ভাবতেই বেশ কয়টা দিন খরচ হয়ে গেল। এখন ‘দুর্বৃত্ত’ এই পতন প্রায় কোম্পানিটি নিয়ে লিখতে গিয়ে আমার মাথায় ভিড় করেছে বাংলার অনেক প্রবাদবাক্য ও ছোটবেলায় আদর্শলিপিতে পড়া বেশ কিছু উপদেশ বাণী। এগুলো হলো, ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু; ভাবিয়া করিও কাজ , করিয়া ভাবিও না; চোর পালালে, বুদ্ধি বাড়ে ও বগা ফান্দে পড়িয়া কান্দে।’
৩ বছর আগে
‘ই-কমার্স খাতে সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ জরুরি’
দেশে ই-কমার্সের ব্যাপক প্রসার হলেও আইনী কাঠামোর অনুপস্থিতি ও পরিবীক্ষণ না থাকায় এই সেক্টরে জবাবদিহিতা গড়ে উঠেনি। কিছু সংখ্যক মুনাফা লোভী প্রতারক গ্রাহক স্বার্থ ক্ষুন্ন করে টাকা লুট করছে। যে সমস্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ভোক্তাদের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ লুট করেছে তাদের সবাইকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
শনিবার এফডিসিতে ‘ই-কমার্স খাতে নৈরাজ্য বন্ধে সরকারের পদক্ষেপ’ বিষয়ক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই)সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
আরও পড়ুন: দেশে ই-কমার্স বাজার ২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এ কে আজাদ বলেন,প্রতারিত হওয়া ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা নিতে হবে।যেখানে দেশের ব্যাংকগুলোতে অলস টাকার পরিমাণ বাড়ছে সেই টাকা বিনিয়োগে না এনে সাধারণ নাগরিকদের অস্বাভাবিক লোভনীয় অফার দিয়ে তাদের টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। দিনশেষে অনলাইন পণ্য কেনার নামে প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের সংখ্যা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। ফলে সমাজে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। সার্বিকভাবে এই খাতে সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষায়িত সেল গঠন জরুরি।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন,দেশের কোম্পানি আইন, ট্রেড লাইসেন্স আইন বা আয়কর আইনে ই-কমার্স হিসেবে নিবন্ধনের সুযোগ রাখা হয়নি। বর্তমানে ই-কমার্স ব্যবসা তথ্য প্রযুক্তি সেবা হিসেবে নিবন্ধিত হয়। অনুসন্ধানে দেখা যায় বাংলাদেশে, ই-কমার্স খাতে নিয়োজিত ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান কোন ঘোষণা ছাড়াই ব্যবসা বন্ধ করে আত্মগোপন করেছে। সম্প্রতি আলোচিত ইভ্যালির চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী এবং ই-অরেঞ্জের মালিক ও তার স্বামীকে গ্রেপ্তারের পর ই-কমার্সের প্রতারণার চিত্র আরও দৃশ্যমান হয়। ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জ ছাড়াও নিরাপদ ডটকম, ধামাকা শপিং ডটকম, আলাদিনের প্রদীপ, বুম বুম, আদিয়ান মার্ট, নিড ডটকম ডটবিডি, কিউকুম নামক আরও অনেক প্রতিষ্ঠান গা-ঢাকা দেয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরা ভোক্তাদের বোকা বানিয়ে মায়াজাল ও প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বাহারি বিজ্ঞাপন, অস্বাভাবিক ও আকর্ষণীয় অফার,অবিশ্বাস্য ডিসকাউন্ট, ক্যাশব্যাক ইত্যাদি প্রলোভনের মাধ্যমে সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। প্রাথমিক হিসাবে জানা গেছে, ইভ্যালির দেনা ৪০৩ কোটি টাকা আর সম্পদ রয়েছে ৬৫ কোটি টাকার। গ্রাহকদের কাছ থেকে পণ্যমূল্য বাবদ ২১৪ কোটি টাকা নিয়ে পণ্য সরবরাহ না করা এবং পণ্য কেনা বাবদ ১৯০ কোটি টাকা দেয়নি ইভ্যালি। এছাড়াও ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রাহকের এক হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ই-কমার্স বাস্তবায়নে চুক্তি সই
ই-কমার্স খাতে নৈরাজ্য বন্ধ করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা তৈরির মাধ্যমে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ সাতটি সুপারিশ করেছেন।
সুপারিশগুলো হলো - ই-কমার্স খাতের নৈরাজ্য বন্ধে নীতিমালা ও নির্দেশিকার পাশাপাশি আইন প্রণয়ন জরুরি, ই-কমার্স খাতে বিদ্যমান নৈরাজ্য অনুসন্ধান ও আইনী কাঠামো তৈরির জন্য একটি কমিশন গঠন করা,জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অনলাইন কেনাকাটায় বিভিন্ন প্রতারণায় অভিযুক্তদের দৃশ্যমান শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রহকের অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা করা,দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রতিযোগিতা কমিশন ও ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের বিদ্যমান আইনের আওতায় প্রতারিত গ্রাহকরা কীভাবে আইনী প্রতিকার পেতে পারেন তা জনগণকে অবহিত করা,ইভ্যালি বা ই-অরেঞ্জসহ অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যারা প্রতারিত হয়েছে তাদের সঠিক তালিকা ও অর্থের পরিমাণ জানার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি কমিটি গঠন করা, প্রতারণার সাথে জড়িত কাউকে ই-ক্যাব বা অন্য কোন ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্য না করা এবং ইতোমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রতারণায় অভিযুক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশাসক বসিয়ে তাদের সম্পত্তি বিক্রির মাধ্যমে যতটা সম্ভব ক্ষতিগ্রস্ত গ্রহকের অর্থ ফেরত দেয়া।
আরও পড়ুন: ই-কমার্সে বিলিয়ন ডলারের মার্কেট রয়েছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
এ কে আজাদ আরও বলেন, সরকারি ব্যাংকগুলোতে ক্রমবর্ধমান হারে ঋণ খেলাপির সংখ্যা বাড়ছে। সরকারি ব্যাংকে ঋণ খেলাপির পরিমাণ ২০-২৫ শতাংশ। প্রতিবছর সরকার ঋণ খেলাপের কারণে ছয় হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে। অথচ বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি ব্যাংকগুলোতে ঋণখেলাপি এক শতাংশের বেশি নয়।বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেও ঋণখেলাপির সংখ্যা বৃদ্ধি উদ্বেগজনক। ব্যাংকিং খাতে সুশাসন ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা না গেলে আর্থিক খাতে বিপর্যয় আসতে পারে।
তিনি বলেন,করোনার অভিঘাতে বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থান কমেছে। অন্যদিকে সরকারি খাতেও দীর্ঘদিন নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। ফলে দেশে বেকার তরুণের সংখ্যা বাড়ছে। শিক্ষার গুণগত মান নিম্নমুখী হওয়ার কারণে তরুণরা শ্রমবাজারের চাহিদার আলোকে নিজেকে তৈরি করতে পারছে না। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশের করোনার ভ্যাকসিন সনদ পৃথিবীর অনেক দেশ গ্রহণ করছে না।
প্রতিযোগিতায় ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিকে পরাজিত করে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি এর বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হয়। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মাঝে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
৩ বছর আগে