বাজেট ২০২২-২৩
এটি লুটের বাজেট: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের আগামী বছরে জনগণের টাকা লুটপাটের সুযোগ বাড়াতে নতুন জাতীয় বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরই আমরা বাজেট নিয়ে আমাদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে আসি, কিন্তু এবার আমরা কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে চাই না...এই বাজেট কে দিচ্ছে? তারা জনগণের প্রতিনিধি নয়।’
কাফরুল থানাধীন ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপির চারটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলে ফখরুল আরও বলেন, বাজেট পেশ করার অধিকার যাদের নেই তারাই এই বাজেট দিয়েছে।
তিনি বলেন, তারা (সরকার) শুধু লুটপাটের জন্য বাজেট তৈরি করে। তারা ভবিষ্যতে কত টাকা লুট করবে তার একটি হিসাব করে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছে। এখন তারা সেখান থেকে কত টাকা লুটপাট করবে তার একটি হিসাব করবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, জাতীয় বাজেট নিয়ে তিনি বেশি কথা বলতে আগ্রহী নন, কারণ এই বাজেট কেবল ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের লুটের সুযোগ বাড়িয়ে দেবে।
ফখরুল বলেন, যারা ক্ষমতা দখল করে দেশের মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে, পুরো জাতি খারাপ সময় পার করছে। শুধু তাই নয় তারা দেশে লুটের রাজত্ব কায়েম করেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি বাংলাদেশের ৫১তম বাজেট এবং তার চতুর্থ বাজেট।
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে উন্নয়নের হারানো গতি ফিরিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ নিয়ে নতুন অর্থবছরের জন্য ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট রেখেছেন কামাল।
পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: উৎসবের আমেজ ফিরল সংসদে
বাজেট ২০২২-২৩: দেশে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে
বাজেট ২০২২-২৩: পাচার হওয়া অর্থ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ
২ বছর আগে
বাজেট ২০২২-২৩: কৃষিযন্ত্রে বিশাল ভর্তুকি
খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং এ খাতে শ্রম নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যে কৃষি আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার সংসদে অডিও-ভিজ্যুয়াল বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, সরকার কৃষিযন্ত্রে কৃষকদের ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি প্রদান করছে।
তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকে কম্বাইন্ড হারভেস্টার, রিপার, ক্লিপার, পাওয়ার টিলারসহ প্রায় ৭১ হাজার ৫০২টি যন্ত্র বিতরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: উৎসবের আমেজ ফিরল সংসদে
এটি কৃষকদের কৃষি-শ্রমিকের অভাব মোকাবিলা এবং উৎপাদন খরচ কমাতে সাহায্য করেছে।
মন্ত্রী বলেন, “এছাড়া আমরা তিন হাজার ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘মেকানিজশন অব এগ্রিকালচার ওয়ার্ক থ্রু ইন্টিগ্রেটেড ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি যা ২০২০-২০২৫ সালের মধ্যে ১২টি বিভাগে ৫১ হাজার ৩০০ ইউনিট কৃষি-যন্ত্র বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।”
২ বছর আগে
বাজেট ২০২২-২৩: দেশে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল নতুন অর্থবছর (২০২২-২৩) থেকে দেশে একটি সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।
তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার পর ২০২২ সালের মধ্যে এই গুরুত্বপূর্ণ খসড়া আইনটি সংসদে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে-ইনশাআল্লাহ।’
তিনি উল্লেখ করেছন যে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন প্রাতিষ্ঠানিক সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক উভয় ক্ষেত্রের বিপুল সংখ্যক নাগরিককে নিয়ে আসবে।
মন্ত্রী বলেন, এর ফলে বিদ্যমান সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলোকে ধীরে ধীরে কমিয়ে আনার সুযোগ থাকবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার এখনই উপযুক্ত সময় কারণ বর্তমানে কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা বয়স্ক জনসংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি।
পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: উৎসবের আমেজ ফিরল সংসদে
বয়স্ক এবং দরিদ্র সম্প্রদায়ের সামাজিক সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় সরকার প্রায় ১ দশমিক ১৫ কোটি সুবিধাভোগীকে ভাতা প্রদান করছে।
সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের কথা মাথায় রেখে বয়স্ক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য একটি টেকসই সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী নিশ্চিত করতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করতে ‘ইউনিভার্সাল পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২২’ প্রণয়নের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি টেকসই এবং সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় বয়স্ক নাগরিকদের জন্য বার্ধক্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জাতীয়ভাবে একটি সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে সরকার জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলপত্রে একটি ব্যাপক, সমন্বিত এবং অংশগ্রহণমূলক পেনশন প্রকল্প তৈরির প্রস্তাব করে।
এর আগে ২০১৯-২০২০ বাজেট বক্তৃতায় সর্বজনীন পেনশন প্রকল্পের রূপরেখা দেয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, সরকার আগামী অর্থবছর থেকে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের শ্রমবাজারের প্রায় ৮৫ শতাংশ কর্মশক্তি অনানুষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত।
অনানুষ্ঠানিক খাত এবং প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামো না থাকায় তাদের বৃদ্ধ বয়সে জীবিকা নির্বাহের অনিশ্চয়তার সম্ভাবনা রয়েছে।
পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: পাচার হওয়া অর্থ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ
বাজেট ২০২২-২৩: মূল্যস্ফীতিকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন অর্থমন্ত্রী
২ বছর আগে
বাজেট ২০২২-২৩: যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে ও কমতে পারে
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে বিভিন্ন পণ্যের ওপর ভ্যাট ও শুল্ক পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছেন, যা কিছু পণ্য ও সেবার দামের ওঠানামা করবে।
যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে
যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-মোবাইল ফোন সেট, কোভিড-১৯ টেস্ট কিট, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং পিপিই, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত/তাপানুকুল সার্ভিসের পাশাপাশি প্রথম শ্রেণির রেল পরিষেবা, মেডিটেশন পরিষেবা, তামাকজাত পণ্য, কম্পিউটার প্রিন্টার, টোনার, পনির এবং দই, কার্বন ডাই-অক্সাইড, আমদানি করা পেপার কাপ এবং প্লেট, আমদানি করা শিকারী পাখি, উটপাখি, আমদানি করা মোবাইল এবং অন্যান্য ব্যাটারি চার্জার, ক্যাশ রেজিস্টার, আমদানি করা ল্যাপটপ এবং পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্র।
যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে
যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে তার মধ্যে রয়েছে- স্থানীয়ভাবে তৈরি ফ্রিজ এবং ফ্রিজার, স্থানীয়ভাবে তৈরি মোটর কার, ২৫০০ সিসি পর্যন্ত যানবাহন, চিনি, হুইল চেয়ার, টাওয়েল, রেস্তোরাঁয় খাবার, পোলট্রি ও গোখাদ্য এবং কাজু বাদাম।
পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: পাচার হওয়া অর্থ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ
বাজেট ২০২২-২৩: স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ৫.৪ শতাংশ
বাজেট ২০২২-২৩: মূল্যস্ফীতিকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন অর্থমন্ত্রী
২ বছর আগে
বাজেট ২০২২-২৩: পাচার হওয়া অর্থ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ
দেশ থেকে বিদেশে পাচার করা অর্থ কর দিয়ে বৈধ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বাজেট উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি এবং বিশ্বের কিছু অংশে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে আগামী অর্থবছরে আমাদের কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হতে পারে। সেই জন্য আমাদের রাজস্ব নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে আরও বিচক্ষণ এবং দূরদর্শী হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘অর্থনীতিকে সচল রাখতে একদিকে যেমন সরকারি খরচের জন্য আরও বেশি রাজস্বের যোগান দিতে হবে, অন্যদিকে বেসরকারি খাতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে আরও প্রাণবন্ত ও গতিশীল করতে হবে।’
এ অবস্থায় মন্ত্রী বিদেশে অর্জিত অর্থ এবং অর্জিত সম্পদ অর্থনীতির মূলস্রোতে আনার মাধ্যমে নতুন তহবিল এবং বিনিয়োগের প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এ একটি নতুন বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব করেন।
প্রস্তাবিত বিধান অনুযায়ী, আয়কর কর্তৃপক্ষসহ কোনো কর্তৃপক্ষ বিদেশে অবস্থিত কোনো সম্পদের উৎস সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করবে না যদি কোনো করদাতা এই ধরনের সম্পদের ওপর কর দেন।
বিদেশে অর্জিত স্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে আনা না হলে ১৫ শতাংশ, বিদেশে থাকা অস্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে আনা না হলে ১০ শতাংশ এবং বাংলাদেশে পাঠানো নগদ অর্থের ওপর ৭ শতাংশ করারোপের প্রস্তাব করেন মন্ত্রী।
কামাল বাজেট বক্তব্যে বলেন, এই সুযোগটি ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ৫.৪ শতাংশ
বাজেট ২০২২-২৩: মূল্যস্ফীতিকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন অর্থমন্ত্রী
পদ্মা সেতু যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটাবে: কামাল
২ বছর আগে
বাজেট ২০২২-২৩: উৎসবের আমেজ ফিরল সংসদে
করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণের ফলে বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য অর্থমন্ত্রীর বাজেট প্রস্তাব পেশের সময় সংসদ যেন তার পুরনো পরিবেশ ফিরে পায়।
করোনার স্বাস্থ্যবিধি বলবৎ থাকলেও জাতীয় বাজেটের অডিও-ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা শোনা ও দেখার সময় সংসদ সদস্যদের নিরুদ্বেগ দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি বাংলাদেশের ৫১তম বাজেট এবং তার চতুর্থ বাজেট।
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে উন্নয়নের হারানো গতি ফিরিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ নিয়ে নতুন অর্থবছরের জন্য ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট রেখেছেন কামাল।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত ব্যয় বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১৪ দশমিক ২৪ শতাংশ বেশি। এই অর্থের পরিমাণ বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১৫ দশমিক ২৩ শতাংশের সমান।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: দেশে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে
এর আগে সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে বাজেট অনুমোদনের পর বৈধতার জন্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এতে স্বাক্ষর করেন।
তিনি বঙ্গভবন থেকে সংসদ ভবনে আসেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল সংসদ ভবনের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ভবনে একসঙ্গে হেঁটে যান। এ সময় অর্থমন্ত্রীর হাতে একটি মেরুন রঙের ব্রিফকেস ছিল।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ করোনা মহামারির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব বাজারকে অস্থিতিশীল করেছে।
মার্কিন ডলারের ক্রমাগত বৃদ্ধিতে খাদ্য ও জ্বালানির দাম বাড়া অব্যাহত থাকায় অর্থনীতিতে চাপ পড়েছে।
মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে থাকায় অনেক দেশ মন্দার কবলে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্বব্যাংক।
নানা চাপের মধ্যেও দেশকে মহামারি-পূর্ব উন্নয়নের ধারায় ফিরিয়ে নিতে এবারের বাজেট পরিকল্পনা তৈরি করেছেন অর্থমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: পাচার হওয়া অর্থ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ
সাধারণত বাজেট পেশের দিন সংসদ ভবনজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। কিন্তু গত দুই বছরের চিত্র ছিল ভিন্ন।
সংসদ ভবন এলাকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল এবং প্রধান ভবনে স্বল্পসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী দায়িত্ব পালন করেছেন।
এমনকি অধিবেশনের সময়ও সেই উৎসবের আমেজ দেখা যায়নি দুই বছর ধরে। সর্বত্র কঠোর সতর্কতা ছিল। সংক্রমণ এড়াতে জনসমাবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল।
এবার দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। সংসদের প্রায় সব আসন সাংসদদের দ্বারা পূর্ণ ছিল।
তবে গত দু’বারের চেয়ে এবার অধিবেশন কক্ষে সংসদ সদস্যের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি।
গত দুই বছর ধরে সংসদের সদস্যদের তালিকা করে সংসদে স্থান দেয়া হয়।
এবার করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ সনদ পাওয়া সব সাংসদই সংসদে ছিলেন। সংসদ ভবনে ২৬০ জন সাংসদ ছিলেন।
এমপিরা অবশ্য সবাই মাস্ক পরেছিলেন। সংসদ ভবনের প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে এমপি লবিসহ সব প্রবেশপথে স্যানিটাইজার রাখা হয়েছে।
সংসদ ভবনে প্রবেশ করলে প্রত্যেককেই জ্বরের জন্য তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে হয়।
রাষ্ট্রপতি হামিদ গ্যালারিতে তার জন্য নির্ধারিত স্থান বসে বাজেট উপস্থাপন দেখেন। অধিবেশনের শুরুতে রাষ্ট্রপতির উপস্থিতির কথা সংসদকে জানান স্পিকার।
৫ জুন শুরু হওয়া বাজেট অধিবেশনে প্রবেশের জন্য ‘কোভিড নেগেটিভ’ সনদ বাধ্যতামূলক।
২০২০ সালে বাজেট বক্তৃতা দিতে ৪৮ মিনিট সময় নিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। গত বছর বাজেট এক ঘণ্টারও বেশি সময় পেশ করা হলেও তিনি তা পড়েন মাত্র ১৫ মিনিট। বাকি সময় তার বাজেট প্রস্তাব পাওয়ার পয়েন্ট এবং অডিও-ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনায় উপস্থাপন করা হয়।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ৫.৪ শতাংশ
এবারও তিনি স্পিকারের অনুমতি নিয়ে স্বাগত বক্তব্য দিয়ে অডিও-ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনায় বাজেট পেশ করেন।
শুরুতে প্রায় পাঁচ মিনিট বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী।
শেষে তিনি দাঁড়িয়ে প্রায় দুই মিনিট কথা বলেন। দুই ঘণ্টা ১০ মিনিটের বাজেট উপস্থাপনায় সব মিলিয়ে মাত্র সাত মিনিট বক্তব্য রাখেন তিনি।
বাজেট পেশের পর অর্থমন্ত্রী অর্থ বিল-২০২২ সংসদে উত্থাপন করেন। এরপর স্পিকার ১২ জুন দুপুর ১২টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করেন।
গত দুই বছরের মতো এবারও বাজেট উপস্থাপনা দেখার জন্য কোনো অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
এর আগে বাজেট পেশের সময় কূটনীতিক ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকতেন।
সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাজেট পেশের পর ২০২১-২২ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা হবে।
সম্পূরক বাজেট পাস হবে ১৩ জুন। এরপর সংসদ সদস্যরা নতুন অর্থবছরের বাজেট নিয়ে আলোচনা করবেন।
নতুন অর্থবছরের অর্থবিল পাস হবে ২৯ জুন। বাজেট পাস হবে ৩০ জুন এবং তা কার্যকর হবে জুলাইয়ের প্রথম দিনে।
গত দুই বছর বাজেট অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হলেও এবার শুক্র ও শনিবার ছাড়া বাকি সব দিন সংসদ বসবে। গত বছর সংসদ অধিবেশন চলেছিল ১২ কার্যদিবস। আগের বছর ৯ কার্যদিবস এবং এটিই ইতিহাসে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ততম অধিবেশন।
শুক্রবার বিকাল ৩টায় ওসমানী মিলনায়তনে প্রথাগত বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেবেন অর্থমন্ত্রী।
২ বছর আগে
বাজেট ২০২২-২৩: শিক্ষায় বরাদ্দ মোট জিডিপির ২ শতাংশের কম বাড়বে
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ৫ শতাংশ বেশি বরাদ্দের কথা জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ ৯৪ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৯ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ শিক্ষায় বরাদ্দ মোট প্রস্তাবিত বাজেটের ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ।
তবে, প্রযুক্তি ছাড়া শুধুমাত্র শিক্ষার জন্য বরাদ্দ ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭১ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা হয়েছে। শিক্ষা খাতে বরাদ্দ এখনও দেশের জিডিপির দুই শতাংশেরও কম।
প্রস্তাবিত বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের জন্য ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের জন্য ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিপরীতে ১৬ হাজার ৬১৩ কোটি টাকা এবং আইসিটি খাতের জন্য এক হাজার ৯১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার শিক্ষাখাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং শিক্ষাকে উন্নয়নের অন্যতম প্রধান কৌশল হিসেবে গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার শিক্ষা খাতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিস্তারের কারণে ২০২০ সালের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছিল। তবে, সরকার শিক্ষা কার্যক্রমকে মহামারির নেতিবাচক প্রভাব থেকে মুক্ত রেখে একাডেমিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।’
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ৫.৪ শতাংশ
বাজেট ২০২২-২৩: ল্যাপটপ ও বিলাসবহুল মোটর গাড়ির দাম বাড়বে
২ বছর আগে
বাজেট ২০২২-২৩: স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ৫.৪ শতাংশ
স্বাস্থ্যখাতকে শক্তিশালী করা সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বললেও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে দেশের স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ সামান্যই বাড়িয়েছেন।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ খাতে ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেন, যা গত বছরের চেয়ে মাত্র ৪ হাজার ১৩২ কোটি টাকা বেশি। বিদায়ী অর্থবছর ২০২১-২০২২ এ বরাদ্দ ছিল ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা।
নতুন বরাদ্দের মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতে মোট বাজেটের ৫.৪ শতাংশ পাওয়া গেছে যা গত বছরের বাজেটে ছিল ৫.২ শতাংশ।
মন্ত্রী বলেন, এই বরাদ্দ স্বাস্থ্য খাতের সার্বিক উন্নয়নের জন্য।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতের সংস্কারের মাধ্যমে জীবন রক্ষা এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
জনস্বাস্থ্যে কোভিড-১৯ এর প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে কামাল বলেন, কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যবিধি এখনও কঠোরভাবে পালন করা, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া, পরিকল্পনা প্রণয়ন করা এবং স্বাস্থ্য খাতের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ছয়টি অগ্রাধিকার খাতের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল- ‘মানবস্বাস্থ্য, আত্মবিশ্বাস, কর্মসংস্থান, আয় এবং অর্থনৈতিক অবস্থা স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরিয়ে আনতে কোভিড-১৯ থেকে দ্রুত পুনরুদ্ধার’। এই এজেন্ডাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সরকার জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক রেখে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে জনগণের আস্থা বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: মূল্যস্ফীতিকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন অর্থমন্ত্রী
পদ্মা সেতু যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটাবে: কামাল
বাজেট ২০২২-২৩: রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা
২ বছর আগে
বাজেট ২০২২-২৩: ল্যাপটপ ও বিলাসবহুল মোটর গাড়ির দাম বাড়বে
দেশীয় কম্পিউটার প্রস্তুতকারকদের উৎসাহিত করতে ল্যাপটপ আমদানিতে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল।
তিনি বলেন, ‘ল্যাপটপ কম্পিউটার আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতি রয়েছে। এতে দেশীয় কম্পিউটার নির্মাতারা অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে। এসব পণ্যের মোট কর হার এখন ৩১ শতাংশ করা হবে।’
বিশ্বব্যাপী ‘মেড ইন বাংলাদেশ’- ব্র্যান্ড এর প্রচার করতে এবং দেশীয় উৎপাদন শিল্পের বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য তিনি প্রিন্টার ও টোনার কার্টিজ আমদানিতে ছাড় প্রত্যাহারেরও প্রস্তাব করেন।
তিনি সংসদে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করার সময় বলেন, এটি স্থানীয় নির্মাতাদের ডিজিটাল ডিভাইস রপ্তানির লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করবে।
দেশীয় কম্পিউটার, ল্যাপটপ এবং আইসিটি পণ্য প্রস্তুতকারকদের সুরক্ষার জন্য অর্থমন্ত্রী কম্পিউটার আনুষাঙ্গিক এবং আইসিটি শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে ছাড়ের সুবিধা সম্প্রসারণের প্রস্তাব করেন।
তিনি হাই-টেক পার্কের জন্য বিদ্যমান এসআরওতে কম্পিউটার এবং কম্পিউটার সরঞ্জাম উৎপাদনে ব্যবহৃত আরও কয়েকটি কাঁচামাল অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেন।
তিনি বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচাতে, বিলাস দ্রব্যের আমদানি নিরুৎসাহিত ও নিয়ন্ত্রণ করতে এবং কোভিড-পরবর্তী অর্থনীতির পুনর্গঠনের জন্য বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক আরোপের মাধ্যমে মোট কর প্রবণতা বাড়ানোর সুপারিশ করেন।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: দাম বাড়বে মোবাইল ফোন সেটের
বাজেট ২০২২-২৩: মূল্যস্ফীতিকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন অর্থমন্ত্রী
২ বছর আগে
বাজেট ২০২২-২৩: সম্পূর্ণ অডিও-ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা করেছেন অর্থমন্ত্রী
প্রথমবারের মতো অডিও-ভিজ্যুয়াল ফরম্যাটে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট জাতীয় সংসদে উন্মোচন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত এ এম এ মুহিত সীমিত আকারে বাজেটের অডিও-ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা প্রথম চালু করলেও সংসদের সভাপতিত্বে থাকা স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর অনুমতি নিয়ে কামাল ডিজিটাল অগ্রগতির এ সুযোগ নেন।
প্রায় দুই ঘণ্টার অডিও-ভিজ্যুয়াল বাজেট উপস্থাপনের শুরুতে এবং শেষে কালো মুজিব কোট পরা অর্থমন্ত্রী কয়েক মিনিট বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: মূল্যস্ফীতিকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন অর্থমন্ত্রী
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের চাহিদা মেটাতে ২০২৫ সালের মধ্যে ৬০ হাজারেরও বেশি এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এক লাখ তরুণ-তরুণীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কর্তৃপক্ষ।
অর্থমন্ত্রী বাজেট উপস্থাপনে বলেন, সর্বস্তরের মানুষ এখন বিশ্বাস করে তাদের দোরগোড়ায় সব ধরনের সেবা পাওয়া সম্ভব। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে এই আস্থা অর্জনই সরকারের সবচেয়ে বড় অর্জন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটাবে: কামাল
২ বছর আগে