আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপ ২০২২
টি-২০ বিশ্বকাপ ২০২২: টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, দলে মিরাজ
চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমেছে বাংলাদেশ।
অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য মাঠের তুলনায় সিডনিতে স্পিানাররা বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন। সেইজন্য দু’দুলই তাদের একাদশে একজন করে বাড়তি স্পিনার যুক্ত করেছে।
বাংলাদেশ একাদশে ইয়াসির আলীর পরিবর্তে স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
অপরদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার লুঙ্গি এনগিডির পরিবর্তে স্পিনার তাবরেজ শামসিকে নেয়া হয়েছে।
২৪ অক্টোবর সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্সেকে ৯ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে খারাপ আবহাওয়ার কারণে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে আগের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছিল।
পড়ুন: টি-২০ বিশ্বকাপ ২০২২: পেসারদের ওপর আস্থা বেড়েছে সাকিবের
বাংলাদেশ একাদশ: নাজমুল হোসেন শান্ত, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, নুরুল হাসান, মোসাদ্দেক হোসেন, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, মুস্তাফিজুর রহমান
দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশ: কুইন্টন ডি কক (উইকেটরক্ষক), টেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), রাইলি রুশো, এইডেন মার্করাম, ডেভিড মিলার, ট্রিস্টান স্টাবস, ওয়েইন পার্নেল, কেশব মহারাজ, কাগিসো রাবাদা, অ্যানরিচ নর্টজে, তাবরেজ শামসি
২ বছর আগে
২০২২ আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপের সেরা ৬ ক্যাপ্টেন
প্রতিটি ম্যাচের হারজিতের জন্য প্রাথমিকভাবে দায়ী থাকেন দলনায়ক। খেলার মাঠে জটিল মুহূর্তগুলোতে সিদ্ধান্ত দিয়ে স্কোয়াডের শক্তিগুলো কাজে লাগান তিনি। পাশাপাশি নিজের ভাগের কাজটুকুর প্রতিও তাকে নিরঙ্কুশ খেয়াল রাখতে হয়। টি-২০-এর মত দ্রুততম ক্রিকেট ফরম্যাটে অধিনায়কের দায়িত্ব আরো দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায়। কারণ এখানে পুরো ম্যাচ ঘুরে যাওয়ার ধাক্কাটা আসে প্রতি বল ও ব্যাটে। দলের প্রতিটি খেলোয়ারের সম্মিলিত প্রয়াস স্বাভাবিকভাবেই দলকে সাফল্যের দিকে নিয়ে যায়। তবে কখনো কখনো একজনের হাতেই পুরো ম্যাচ জয়ের শাতকাহন রচিত হয়। আর সেই একজনটা যদি হয় স্বয়ং দলপতি, তখনি সৃষ্টি হয় ইতিহাস। আজকের নিবন্ধে ২০২২ আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপের সেরা ৬ ক্যাপ্টেন বাছাই করা হয়েছে, তাদের বিগত জয় এবং নিজ নিজ পারফর্মেন্সের পরিসংখ্যান যাচাই করে।
আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপ ২০২২ এর শীর্ষ ৬ ক্যাপ্টেন
রোহিত শর্মা | ভারত
অধিনায়কত্বে সবচেয়ে বেশি ২০ ওভারের ম্যাচ জয় এবং ব্যক্তিগত পারফর্মেন্সের পরিসংখ্যানের দিক থেকে শীর্ষস্থানীয় নামটি হচ্ছে মাহেন্দ্র সিং ধনী। তার ৪১টি ম্যাচ জয়ের রেকর্ডটি এখনো স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ আছে। ২০০৭ থেকে ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করে অধিনায়কত্ব পাওয়ার আগ পর্যন্ত ৮৯টি স্বল্পদৈর্ঘ্য খেলায় তার সংগ্রহ ছিল গড়ে ৩০.৬১ রান। আর নেতৃত্ব অর্জনের পর থেকে ৪৫টি খেলায় ব্যাট করে তিনি সংগ্রহ করেছেন গড়ে ৩৪.৭১ রান।
আরও পড়ুন: আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপ ২০২২: বাংলাদেশ দলের সোয়াট (SWOT) বিশ্লেষণ
সামগ্রিকভাবে বলতে গেলে তার ভালো দিনগুলোতে তার সমকক্ষ কেউই নেই। চাপ সামলাতে জানা এই ব্যাটসম্যান যে কোন ইনিংসকে বহুদূর টেনে নিয়ে যেতে পারদর্শী। বিরাট কোহলির পর থেকে রোহিতের অধীনে ভারত ৪৫টির মধ্যে জয় পেয়েছে মোট ৩৫টি ম্যাচে। অর্থাৎ জয়ের সংখ্যা শতকরা ৭৭.৭৮ ভাগ। এবার তিনি ভারতকে জয়ের পথে নিয়ে যেতে পারেন কিনা সেটাই দেখার বিষয় হবে।
সাকিব আল হাসান | বাংলাদেশ
সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ ২০২২ এর ঠিক আগে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পরিবর্তে সাকিব আল হাসানকে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। টি-টোয়েন্টিতে সাকিব আল হাসান এ পর্যন্ত ১০৩ ম্যাচে ১২১.৪৯ স্ট্রাইক রেটে ২১৩১ রান করেছেন। বোলিংয়ে ৬.৭১ ইকোনোমির পাশাপাশি ১২২ উইকেট শিকার করেছেন।
সাকিবের নেতৃত্বে এশিয়া কাপে বাংলাদেশ ভালো করতে পারেনি, বাদ পড়েছে গ্রুপ পর্ব থেকেই। তবে সেই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ভালো কৌশল কী হওয়া উচিত সে সম্পর্কে কিছু ধারণা পেয়েছেন সাকিব।
আরও পড়ুন: ২০২২ আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপ: ভেন্যু ও প্রাইজ মানি
সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে বাংলাদেশ দল ভালো করছে না, ফলে সাকিবের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সমস্যাগুলো সমাধান করা এবং বড় দলের বিপক্ষে জয়ের অভ্যাস তৈরি করা। বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার একজন স্মার্ট ক্রিকেটার হিসেবে জানেন যে কীভাবে সমস্যাগুলো সমাধান করতে হয়।
বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে অন্যান্য অধিনায়কদের তুলনায় সাকিবকে সম্ভবত খেলোয়াড় হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব নিতে হবে। তবে বাংলাদেশ যখনই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে তখনই সাকিব তা করেছেন।
বাবর আজম | পাকিস্তান
৫৬টির মধ্যে ৩৪টিতেই জয়; অর্থাৎ জয়ের শতাংশ ৬০.৭১। পরিসংখ্যানটি মধ্যম ক্যাটাগরির জন্য দারুণ একটি রেকর্ড। ২০১৯ থেকে দলের ভার পাওয়ার পর থেকে এই রেকর্ডটাই অর্জন করেছেন বাবর আজম। ২১ শতকে পাকিস্তানের জন্য সেরা উপহার ছিল ২০০৯ এর টি-২০ বিশ্বকাপ জয়।
আরও পড়ুন: আমাদের উন্নতি করতে হবে: সাকিব
কিন্তু ২০১০ এর পর কিছু উল্লেখযোগ্য খেলোয়াড়ের বিদায় গোটা দলের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ২০১৬ তে ক্রিকেট অঙ্গনে পা রাখেন আজম। অতঃপর গত ২ বছর ধরে তার অধিনায়কত্বে দলটি মোটামুটি আত্মবিশ্বাসের সাথেই খেলছে। দলের বোলিং সামঞ্জস্যতাকে বাবর খুব ভালো ভাবে কাজে লাগাতে পারেন। হারিস রউফ কোন ওভারে বল করবেন আর কোন ওভারে শাহীন করবে, তা তিনি জানেন। এছাড়া টি-২০ আন্তর্জাতিক র্যাংকিং-এ ৩য় স্থান অধিকার করা তাদের পুনরায় বিশ্বকাপ জয়ের আগ্রহটাকে ন্যায্যতা দিয়েছে।
অধিনায়কত্ব পাওয়ার আগে ৩৩ ইনিংসে বাবরের গড় রান ছিল ৪৯.৬২, যেটি অধিনায়ক হওয়া পর হয়ে যায় ৫১ ইনিংসে ৪১.১১। তাই ব্যক্তিগত পারফর্মেন্সের দিক থেকে একটু শঙ্কা থেকেই যায় এই ডান হাতি ব্যাটসম্যানকে নিয়ে।
অ্যারন ফিঞ্চ | অস্ট্রেলিয়া
স্বল্পদৈর্ঘ্য ম্যাচ জয়ের শীর্ষ তালিকায় ৩য় অবস্থানটিতে রয়েছে এই অসি ক্রিকেটার। ২০১৪ তে ক্যাপ্টেন হওয়ার পর থেকে ৭১টি ম্যাচের ৩৯টিতে জয় পেয়ে তিনি ৫৪.০৫ শতাংশ জয়ের সম্মানজনক অবস্থানটি ধরে রেখেছেন। এছাড়া বর্তমান টি-২০ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ান হওয়ার কৃতিত্বটাও এসেছে অ্যারন ফিঞ্চের পরিচালনায়। ব্যাট হাতেও তার জুড়ি মেলা ভার। মাঠ কাঁপানো অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তিনি এখনকার সবচেয়ে পরিচিত ব্যক্তিত্ব।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জার্সি অনলাইনে বিক্রির পরিকল্পনা বিসিবির
২০১১ তে ক্রিকেটের ভূবনে অবতরণ করে অধিনায়ক হওয়ার আগ পর্যন্ত ২৭ ইনিংসে তিনি সংগ্রহ করেন গড়ে ৪০.১৮ রান। কিন্তু নেতৃত্ব দানের সময় ৭১ ইনিংসে তার গড় রান দাড়ায় ৩২.৫৫। এই ধারাবাহিকতায় স্বাভাবিক ভাবেই তার রানের গ্রাফটা আরো অধ্বঃগামী হওয়ার কথা। কিন্তু সম্প্রতি মার্কি ইভেন্টের ইতিহাস পুরো বিশ্ববাসীকে একদম ভিন্ন ছবি দেখিয়েছে। আর এই অফুরন্ত সম্ভাবনাটি নিশ্চয়তায় রূপান্তর হবে, যদি তিনি টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার-১২ স্টেজে অস্ট্রেলিয়াকে একটি শক্তিশালী সূচনা এনে দিতে পারেন।
কেন উইলিয়ামসন | নিউজিল্যান্ড
অনেক ক্রিকেট বোদ্ধারাই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, যে টেস্ট খেলোয়াররা খেলার এই সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে টিকে থাকতে পারবেন না। কারণ তাদের কাছে নাকি টি-২০ মাত্রার পাহাড়সম স্ট্রাইকিং রেট সৃষ্টির দক্ষতা নেই। তাদের এই ধারণাকে শক্ত হাতে বাউন্ডারির ওপারে নিক্ষেপ করেছেন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।
২০১১ তে ক্রিকেটে পদার্পণ করার পরের বছরেই পুরো দলের দায়িত্ব পেয়ে যান। একজন সাধারণ অল রাউন্ডার হিসেবে ক্যারিয়ারের প্রথম বছরটিতে তিনি ১৬ ইনিংসে ৩২.৪৬ গড় রান সংগ্রহ করেছিলেন। আর বোলিংয়ে রান দিয়েছিলেন গড়ে ৫০। এরপর অধিনায়কত্বের দীর্ঘ ১০ বছরে ৬১ ইনিংসে সংগৃহিত ৩২.১৩ এবং বোলিংয়ে প্রদানকৃত ১৬ রানের গড় ধরে রেখেছেন। উইলিয়ামসন নিউজিল্যান্ডের জন্য এখন একজন নির্ভরযোগ্য ক্যাপ্টেন।
আরও পড়ুন: শেষ ম্যাচও হারল বাংলাদেশ
বিগত টি-২০ বিশ্বকাপে ব্ল্যাক ক্যাপদের ফাইনাল পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার অবদান অনস্বীকার্য। তার দীর্ঘ নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ড ৬১টি খেলায় ৩১টিতে জয়ের মুখ দেখেছে। অর্থাৎ জয়ের সংখ্যা ৫০.৮২ শতাংশ, যেটি এবারের শিরোপা জয়ের নিমিত্তে কোন ভাবেই উপেক্ষনীয় নয়।
দাসুন শানাকা | শ্রীলঙ্কা
২০১৫ থেকে ক্যারিয়ারের শুরু; ২০১৯ এ দলপতি হওয়া, অতঃপর মোট নেতৃত্ব দেয়া ম্যাচের অর্ধেকটিতে দলকে জয় এনে দেয়া। এই বৃত্তান্ত এই সময়কার স্বনামধন্য অল রাউন্ডার দাসুন শানাকার। ক্যাপ্টেন হওয়ার আগের ৪ বছরে নিজেকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে গড়েছেন শানাকা। ৩৯ ইনিংসে রানের গড় ১৫.৩৮ আর বোলিংয়ে রানের গড় সীমাবদ্ধ রেখেছেন ২০.৬৪-এ। পরিসংখ্যানটি আহামরি না হলেও ক্যাপ্টেন হওয়ার পর তার রানের গড় বেড়ে হয়েছে ২৮.৮২ (৩১ ইনিংসে)। দুভার্গ্যজনকভাবে বোলিংয়েও গড়টা বেড়ে ২৮.১১ হয়েছে।
কিন্তু তার বোলিংয়ে আছে ম্যাচের ভাগ্য বদলানোর যাদু। পাওয়ার প্লের সময় বোলিং করেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া ম্যাচে তিনি ভারসাম্য ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারেন। এবারের এশিয়া কাপে সবাই যখন ভারত-পাকিস্তান নিয়ে ব্যস্ত, তখন সবার অলক্ষ্যে সুকৌশলে তিনি লঙ্কানদের এনে দিলেন এশিয়া কাপের শিরোপা। শুধুমাত্র এই আত্মবিশ্বাসটাই এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তার আধাআধি জয়ের পাল্লাটাকে ইতিবাচক দিকে ভারী করে দিতে পারে।
আরও পড়ুন: ২০২২ আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপ আয়োজক ৭ শহর ভ্রমণ
শেষাংশ
আইসিসি টি-২০ ২০২২ বিশ্বকাপের সেরা ৬ ক্যাপ্টেন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এই সুপার খেলোয়াররা বিশ্বজুড়ে ক্রিকেটপ্রেমিদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু থাকবেন। যুক্তির মাপকাঠিতে সংখ্যার ভবিষ্যদ্বাণী কখনো বিফলে যায় না। কিন্তু এরপরেও ক্রিকেট যুদ্ধের এক বিশাল বলয় জুড়ে রয়েছে অদৃষ্ট। ভাগ্যের বিভ্রমে খেলার মাঠে যে কোন কিছুই ঘটে যেতে পারে। সেই দিক থেকে টি-২০ আন্তর্জাতিক র্যাংকিং-এ ২য় অবস্থানে থাকা ইংল্যান্ডের নতুন ক্যাপ্টেন জস বাটলারকেও ছোট করে দেখা যাবে না। ঠিক যেভাবে একদমই মুছে ফেলা যাবে না টাইগার দলনেতা বিশ্বসেরা অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসানের নাম।
২ বছর আগে
২০২২ আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপ আয়োজক ৭ শহর ভ্রমণ
পুরো একটি বছর পার করে আবারো বসতে যাচ্ছে আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপের আসর। তাও আবার মন্ত্রমুগ্ধ কর দ্বীপ দেশ অস্ট্রেলিয়ার। অস্ট্রেলিয়ার ৭টি সুন্দর শহরে (সিডনি, মেলবোর্ন, অ্যাডিলেড, জীলং, হোবার্ট, পার্থ এবং ব্রিসবেন) আয়োজিত হবে বিশ্বনন্দিত ক্রিকেট উৎসবের ৮ম আসর। শুধু স্টেডিয়াম-ই নয়, ভ্রমণপিপাসু ক্রিকেটপ্রেমিদের জন্য অনেক চমক নিয়ে অপেক্ষা করছে ওশেনিয়া মহাদেশের এই বৃহত্তম দেশটি। সূর্যস্নাত সৈকত এবং মনোরম বন থেকে শুরু করে বিদেশি বন্যপ্রাণী ক্রিকেট ভক্তদের সফরটিকে নিমেষেই পরিপূর্ণ করে তুলতে পারে। শহরগুলোর নান্দনিকতা এবং প্রাণবন্ত সংস্কৃতি প্রতিটি ভ্রমণকারির উপলব্ধ অভিজ্ঞতা চিরস্মরণীয় করে রাখতে পারে। সেই সূত্রে, অস্ট্রেলিয়ামুখী পরিব্রাজকদের উদ্দেশ্যেই ২০২২ আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপ আয়োজক অস্ট্রেলিয়ার ৭টি শহরের বিস্তারিত নিয়ে এবারের নিবন্ধ।
২০২২ আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপ আয়োজক ৭টি শহর
অ্যাডিলেড
সংস্কৃতি, খাবার, উৎসব এবং বিনোদনে ভরপুর অ্যাডিলেড মানেই ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে ভিন্ন ভিন্ন উৎসবের আমেজ আর নতুন নতুন সব মজার অভিজ্ঞতা।
অভ্যন্তরীণ-শহরের মুল দর্শনীয় স্থানগুলো সব পায়ে হাটা দূরত্বে। ঝকঝকে শহরতলি থেকে ২০ মিনিট এগোলেই দৃশ্যমান হতে শুরু করবে সৈকত ও পাহাড়ের প্রাকৃতিক বিস্ময়গুলো। স্টেডিয়াম ওভালের দক্ষিণে হাল্কা ম্যারাথন করলেই পৌছে যাওয়া যাবে অপূর্ব রিভারব্যাঙ্ক ব্রিজ এবং নতুন পুনর্নির্মিত ফেস্টিভাল সেন্টারে। অ্যাডিলেড বোটানিক গার্ডেন এবং ন্যাশনাল ওয়াইন সেন্টার পেরনোর সময় চোখে পড়বে উত্তর টেরেসের সাংস্কৃতিক বুলেভার্ড বরাবর দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার আর্ট গ্যালারি, স্টেট লাইব্রেরি এবং দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ান যাদুঘর।
অ্যাডিলেড সেন্ট্রাল মার্কেট দক্ষিণ গোলার্ধের মধ্যে বৃহত্তম। শহরের রাস্তাগুলো ভোজনশালায় ভরা। ইতালীয়-অনুপ্রাণিত অস্টেরিয়া ওগি এবং ফুগাজি থেকে শুরু করে আফ্রিকোলায় খাবারের পসড়া, শোবোশোর গুঞ্জন এবং ফিশব্যাঙ্কে পরিশ্রুত সামুদ্রিক খাবার। রান্ডেল, হাট, এবং গাউজার রাস্তাগুলো রাতের খাবারের জন্য নির্ধারিত।
অ্যাডিলেড ভিত্তিক দর্শনার্থীদের জন্য ডে-ট্রিপ এবং সাপ্তাহিক ছুটির সুযোগ প্রচুর। ক্যাঙ্গারু দ্বীপের প্রাকৃতিক নৈসর্গে প্রাচীন পৃথিবীর খোঁজে হারিয়ে যেতে সাদরে আমন্ত্রণ জানায় ফ্লিন্ডার রেঞ্জ এবং আউটব্যাক। আর এখানকার নিখুঁত সৈকত এবং ফ্লিন্ডার চেজ ন্যাশনাল পার্কের মধ্যে কোনটা আগে দেখবেন, তা নিয়ে পর্যটকরা প্রায়ই দ্বিধায় পড়ে যান।
পড়ুন: আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপ ২০২২: বাংলাদেশ দলের সোয়াট (SWOT) বিশ্লেষণ
ব্রিসবেন
ভূরিভোজন করানোর দিক থেকে এই শহরের রেস্তোরাঁগুলোও পিছিয়ে নেই। তবে তার আগে অবশ্যই আউটডোর কার্যক্রমগুলো শেষ করে নিতে হবে। কারণ সেগুলো নিরতিশয় রোমাঞ্চকর। অ্যাবসেইলিং, স্টোরি ব্রিজে আরোহণ, হেলিকপ্টারে দ্বীপ ভ্রমণ বা নৌকায় করে পিকনিক করতে যেয়ে বেশ হাপিয়ে উঠতে হবে। ব্রিসবেনের ৫-তারকা বিলাসবহুল হোটেল বা আকাশক্ষত তারার নিচে ক্যাম্পিং নিমেষেই ভুলিয়ে দিতে পারে সেই ক্লান্তি।
২ বছর আগে
আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপ ২০২২: বাংলাদেশ দলের সোয়াট (SWOT) বিশ্লেষণ
দামামা বাজছে আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপ ২০২২-এর। আগামী ১৬ অক্টোবর এ ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে প্রত্যাশিত উৎসবটির উদ্বোধনের অপেক্ষায় এখন গোটা পৃথিবী। যাদেরকে ঘিরে এই অনুষ্ঠানের এতো আবেগ-উৎকন্ঠা, সেই ১৬টি দলের মধ্যেও পুরোদমে চলছে প্রস্তুতির তোড়জোড়। সুপার ১২ পর্বের আটটি দলের তালিকায় ইতোমধ্যে নিজের নামটি উঠিয়ে নিয়েছে গর্বিত বাংলাদেশ। পুরো সুপার ১২ জুড়ে বাংলাদেশের একে একে খেলা হবে দক্ষিণ আফ্রিকা, প্রথম রাউন্ডের গ্রুপ বি বিজয়ী, ভারত এবং পাকিস্তানের সঙ্গে। কিন্তু এই ক্রিকেট লড়াইয়ে বাংলাদেশের অবস্থানটা ঠিক কোথায়? চলুন, বাংলাদেশ দলের সোয়াট (SWOT) বিশ্লেষণের মাধ্যমে তা জেনে নেয়া যাক।
আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপ ২০২২-এ বাংলাদেশ স্কোয়াড
বাংলা টাইগারদের টি-২০ বিশ্বকাপের এই অষ্টম আসরে যাত্রা শুরু হবে আগামী ২৪ অক্টোবর প্রথম রাউন্ডে গ্রুপের রানার্স-আপ দলের বিপক্ষে হোবার্টের ব্যালেরিভ ওভালে নামার মধ্য দিয়ে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি ) কর্তৃক নির্ধারিত বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য ১৫ সদস্য বিশিষ্ট স্কোয়াডে থাকছে তিন জন ব্যাট্সম্যান, দুজন উইকেট কিপার, পাঁচ জন অল রাউন্ডার এবং পাঁচ জন বোলার। অভিজাত এই অভিযানে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য থাকছেন বিশ্বমানের অল রাউন্ডার শাকিব আল হাসান। সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করবেন নুরুল হাসান সোহান। ১৫ সদস্যের বাইরে অপেক্ষমান হিসেবে দলের সফর সঙ্গী হবেন সৌম্য সরকার, শরিফুল ইসলাম, রিশাদ হোসেন এবং মেহেদি হাসান।
মূল বিশ্লেষণে যাবার আগে চলুন এক নজরে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের এবারের স্কোয়াডটি দেখে নেয়া যাক।
সাকিব আল হাসান, তাসকিন আহমেদ, সাব্বির রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, নাজমুল হোসেন শান্ত, আফিফ হোসেন, লিটন দাস, মোসাদ্দেক হোসেন, ইয়াসির আলী, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, নুরুল হাসান, হাসান মাহমুদ, এবাদত হোসেন এবং নাসুম আহমেদ।
আরও পড়ুন: ত্রিদেশীয় সিরিজ: ৮ উইকেটের বড় হার বাংলাদেশের
২০২২ আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সোয়াট (SWOT) বিশ্লেষণ
শক্তি (Strength)
অস্ট্রেলিয়ায় পেস বোলিং পিচের জন্য মুস্তাফিজ, তাসকিন, সাইফুদ্দিন, এবাদত এবং হাসানের বোলিং অর্ডারটা বেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ। আর সিডনি, ব্রিসবেন, অ্যাডিলেডের মত পিচের জন্য রীতিমত বুদ্ধিদ্বীপ্ত নির্বাচন বলা যেতে পারে। সুপার ১২ পর্বের দক্ষিণ আফ্রিকানদের জন্য ব্যাপারটি খুব আশ্চর্যজনক না হলেও, এ কথা অনস্বীকার্য যে বাংলাদেশ দ্রুত গতি বোলিংয়ে দক্ষ হয়েছে।
অন্যদিকে, স্পিনারদের সংখ্যা লঘিষ্ঠতাটি পূরণ করে দিতে পারে অলরাউন্ডাররা। নাসুম, মিরাজ এবং শাকিবের সমর্থনে, আফিফ এবং মোসাদ্দেক বেশ ভালো স্পিন বুহ্য তৈরি করতে পারে।
এশিয়া কাপ স্কোয়াডের অন্যতম স্পিনার ছিলেন হলেন মাহেদী হাসান। কিন্তু এবার ১৫ তে তিনি জায়গা করে নিতে পারেননি। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের কোচ শ্রীরামের মতে নাসুম এবং মেহদির মাঝে অনায়াসেই অদল-বদল করা যায়। এবারো সে সুযোগ থাকায় নিদেনপক্ষে অফ-স্পিন নিয়ে বাংলাদেশকে তেমন মাথা ঘামাতে হবে না।
তাছাড়া বিশাল সাপোর্ট হিসেবে সাকিব তো থাকছেই। এবারে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি সাকিব আর মুস্তাফিজু। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে উল্লেখযোগ্য চড়াই-উৎড়াই থাকলেও, দলে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ অল-রাউন্ডার থাকা মানে এক বিরাট নির্ভরতা। যে কোন সময় ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিতে পারেন ব্যাট ও বল উভয় হাতেই ম্যাচজয়ী এই ক্রিকেটার। অধিনায়কত্বের চাপ সামলিয়ে নিজের সেরাটা উপহার দিতে পারলে তিনি একাই যথেষ্ট সেমিফাইনাল পর্যন্ত দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
সাকিবের মতো মুস্তাফিজও বল হাতে ম্যাচজয়ী। তার মাঝারি পেস বোলিংয়ের নৈপুণ্যে তাবড় তাবড় ব্যাটসম্যানদের ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যেতে দেখতে অভ্যস্ত তার ভক্তরা। এছাড়া তার কম ডেলিভারি দেয়া দ্রুত গতির বলগুলোও বেশ বিধ্বংসী হয়ে থাকে। অস্ট্রেলিয়ায় পিচে বল হাতে মুস্তাফিজের ঝলসে ওটা শুধু দর্শকদের জন্যই নয়; দলের জন্যও দারুণ চমক হতে পারে। সম্প্রতি কয়েকটি ম্যাচে তার যথেষ্ট প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। এর সঙ্গে ক্রিকেটপ্রেমিরা এও বুঝে গেছে যে যেকোন পরিস্থিতিতে দল তার ওপর পূর্ণ আস্থা রাখতে পারে।
সাইফুদ্দিন, মেহেদি ও আফিফরা ফুল ফর্মে থাকায় শাকিবের নেতৃত্বে চমৎকার কোয়াড্রুপলেট তৈরি হতে পারে ব্যাটিং ও বোলিং দুই ইনিংসেই। পাওয়ার প্লেতে তাদের সাম্প্রতিক বোলিং ও ব্যাটিং আক্রমণগুলো বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ ছিল।
আরও পড়ুন: ২০২২ আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপ: ভেন্যু ও প্রাইজ মানি
দুর্বলতা (Weakness)
মেধা বা অভিজ্ঞতা; বাংলাদেশের এর কোনটার কমতি আছে বলা হলে ভুল হবে। সাব্বির, মিরাজ, আফিফ, মোসাদ্দেক, লিটন দাস, তাসকিন আর এবাদতকে অনেক বছর ধরেই বাংলাদেশ একাদশে দেখা যাচ্ছে। তাই বেশ তরুণ হলেও তাদের কেউই অনভিজ্ঞ নন। তবে সমস্যা হলো এ দীর্ঘ সময়ে তাদের পারফরম্যান্স এখনো নির্দিষ্ট মাত্রায় এসে দাঁড়ায়নি। দুঃখজনক হলেও সত্য যে এই অসংলগ্নতা বাংলাদেশ ক্রিকেটের চিরায়ত সঙ্গী।
প্রতিবারই দুর্দান্ত সূচনাকারি খেলোয়াররা নানা ধরনের আন্তর্জাতিক ইভেন্টগুলোতে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছে। সৃষ্টি হয়েছে ফুলেল সম্ভাবনার। অথচ এই সম্ভাবনাগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ পারফরম্যান্সে রূপান্তর হয়নি। আগে বলা হয়েছিল তাদের অভিজ্ঞতার অভাব ছিল। কিন্তু সেই অজুহাত এখন দেয়া যাবে না, কারণ তারা বহু বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে। দুর্ভাগ্যবশত প্রত্যেকেরই নামের পাশে দুয়েকটি সেরা ম্যাচ থাকছে, কিন্তু সেগুলোকে ছাপিয়ে সামনের খেলাগুলোতে তারা অধিক ভালো করা তো দূরে থাক; বিগত পারফরমেন্সটিই ধরে রাখতে পারছে না। ফলে ম্যাচ জিততে এখনও নির্ভর করতে হচ্ছে শুধু শাকিব ও মুস্তাফিজের ওপর।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা তাদের ব্যাটিং অর্ডার। মুলত দলের প্রয়োজনের সময় টিকে থাকতে না পারলে পাহাড়সম স্ট্রাইক রেট কোনো কাজে আসে না। পাশাপাশি টাইগারদের স্পিনার ভীতি আছে। তাই তারা অস্ট্রেলিয়ার মতো জায়গায় বড় বাউন্ডারির সুবিধা নিতে পারবে না।
এশিয়া কাপ মিস করায় অস্ট্রেলিয়ায় টুর্নামেন্টের জন্য নাজমুল হোসেন শান্তকে ১৫ জনের দলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ওপেনিং অর্ডারে তার দুর্দান্ত রেকর্ড নেই। আর সর্বসাকূল্যে ৯টি টি-২০ তে তার সংগৃহীত রানের গড় ১৮ দশমিক পাঁচ, যেখানে একটিও ৫০শের বেশি স্কোর নেই।
নুরুল হাসান এবং ইয়াসির আলী মিডল-অর্ডারে যোগ হয়েছেন। ফলে বাংলাদেশের কাছে ওপেনিং অর্ডারে বিকল্পের অভাব পড়ছে। নাজমুল অথবা এশিয়া কাপের সময়ের ন্যায় মিরাজ লিটন দাসের সঙ্গে ওপেন করতে পারে। কিন্তু তাতে নির্ভরযোগ্য কোনো ইনিংসের সূচনা হবে কিনা তা দেখার বিষয়।
নাজমুল বেশ ভালো বিকল্প, কিন্তু এশিয়া কাপে বাদ পড়ার কারণে বাংলাদেশের শীর্ষ একাদশে তার অবস্থানটা একটু নড়বড়ে হতে পারে। আর মূল স্কোয়াডের বাইরে থাকায় ওপেনার সৌম্য সরকারের কথা ভাবার কোনো অবকাশই নেয়।
আরও পড়ুন: আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ
সম্ভাবনা (Opportunity)
সাম্প্রতিক মাসের ম্যাচগুলোর কথা ধরা হলে দল হিসেবে বাংলাদেশ খুবই হতাশাজনক। তাদের জিম্বাবুয়ে সফরের অনাকাঙ্ক্ষিত ফলাফল এবং আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে এশিয়া কাপ থেকে ফিরে আসাটা খুব ভালো ব্যাকগ্রাউন্ড রাখেনি। সেই হিসেবে অবশ্য এবারে বিশ ওভারের বিশ্বকাপে সুপার ১২ স্টেজে তালিকাভুক্ত হওয়া বাংলাদেশের জন্য বিরাট পাওয়া।
কিন্তু দর্শকদের আকস্মিক চমকে দেয়াটা বাংলাদেশের জন্য নতুন নয়। বরঞ্চ বাংলাদেশের বর্তমান দলটি সেই চমক দেয়ার জন্য পুরোদস্তুর ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে। খেলার ফরম্যাট যখন ২০-২০, তখন আকাশচুম্বী স্ট্রাইক রেট আর বলের ভেল্কিতে ব্যাট্সম্যানকে ধরাশায়ী করাটাই আসল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জার্সি অনলাইনে বিক্রির পরিকল্পনা বিসিবির
হুমকি (Threat)
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ যে পারফরম্যান্স ধস হয়েছে তার একটি প্রধান কারণ হলো আত্মবিশ্বাসের অভাব। মাঠে নামাকালীন তাদের বিভ্রান্তিকর চেহারা শুধু তাদের ভক্তদেরই কষ্ট বাড়ায় না, অপর পক্ষের সমর্থকদেরও বুঝিয়ে দেয় যে তারা হয়ত চমকপ্রদ কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখতে যাচ্ছে না। এছাড়া সমসাময়িক খেলাগুলোতে অধিনায়কত্ব নিয়ে বাড়তে থাকা জটিলতা এই সমস্যাগুলোকে আরও বেগবান করেছে।
বর্তমান সময়কার তাদের স্পিন বোলিংয়ের রেকর্ডগুলো ক্রমেই অবদমিত হচ্ছে। অন্যদিকে, প্রতিপক্ষের আক্রমণাত্মক মানসিকতায় বাংলাদেশিদের নিজের জায়গায় শক্ত হয়ে দাঁড়ানোর অবস্থা নেই। এ অবস্থায় বিশাল রানের টার্গেট তাদের ব্যাটিং অর্ডার সুসজ্জিত থাকলেও নিমেষেই ভেঙে গুড়িয়ে যেতে পারে।
আশা করা হচ্ছে যে তাসকিন, মুস্তাফিজ এবং সাইফুদ্দিন শীর্ষ একাদশে থাকবেন আর এই থাকাটা অবশ্যই তারা নিজের সেরাটা দিয়ে আরও মজবুত করবেন। কিন্তু তাদের কাছাকাছি সময়ের আন্তর্জাতিক ২০ ওভারের ইনিংসগুলো তেমন ভালো আশা দেখায় না।
আর বাংলাদেশি পেসারদের অস্ট্রেলিয়ার পিচ থেকে অতিরিক্ত সুবিধা পাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হওয়া উচিত। তবে পৃথিবী কাঁপানো কিছু পাওয়ার হিটারের মুখোমুখি হওয়ার জন্য তাদের ভালোভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: আমাদের উন্নতি করতে হবে: সাকিব
পরিশিষ্ট
গত ৫ অক্টোবর এই বিশ্বনন্দিত স্পোর্টস ইভেন্টটির জন্য বাংলাদেশ দলের স্কোয়াডও ঠিক হয়ে গেলো। এবার শুধু মাঠে নামার পালা। ২০-২০ ওভারের দুই ইনিংসে অনেক কিছুই ঘটে যেতে পারে। পাশাপাশি এও ঠিক যে সারা পৃথিবীর কোটি জোড়া চোখ তাকিয়ে এই ২২ গজের মঞ্চে। তাই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে বহুজাতির বিশ্বকাপ চলছে, সে চাপটিকেও সুনিপুনভাবে সামলানোর গুরুদায়িত্বটা পালন করতে হবে টাইগারদের। ২০২২ আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সোয়াট (SWOT) বিশ্লেষণের নির্যাসে যে কথাটি উঠে আসে তা হচ্ছে পুরোনো অভিজ্ঞতাকে ছাপিয়ে যেতে হলে দলের প্রতিটি সদস্যের সম্মিলিত ভূমিকা অবধারিত।
২ বছর আগে