১০০ বিলিয়ন ডলার
১০০ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনুন: টিপু মুনশি
১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শুধু পোশাক শিল্পের ওপর নির্ভর না করে পণ্য রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বুধবার(৮ নভেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) আয়োজিত জাতীয় রপ্তানি ট্রফি ২০২০-২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুন্সী বলেন, আরও অনেক পণ্য রপ্তানি করা যেতে পারে এবং দেশের শুধু তৈরি পোশাক খাতের ওপর নির্ভর করা উচিত নয়।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা পণ্যবৈচিত্র্য আনতে পারে এবং আরও অনেক দেশ বাংলাদেশের রপ্তানি গন্তব্য হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘(এভাবে) সামগ্রিক বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং দেশ সমৃদ্ধি লাভ করবে। রপ্তানি থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব হবে।’
আরও পড়ুন: কৃষি ব্যবসা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে রপ্তানি সম্প্রসারণ ও এলসি নিয়ে আলোচনা রাষ্ট্রদূতের
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রী ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সকল ব্যবসায়ীকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ের ভিত্তিতে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ২৮টি ক্যাটাগরিতে ৭৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে রপ্তানি ট্রফি দিয়েছে ইপিবি।
আরও পড়ুন: ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার পোশাক রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রয়োজন দ্বিগুণ ডেনিম রপ্তানি
১১ মাস আগে
২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার পোশাক রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রয়োজন দ্বিগুণ ডেনিম রপ্তানি
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ২০৩০ সাল নাগাদ ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পোশাক রপ্তানির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তা অর্জন করতে বাংলাদেশের ডেনিম রপ্তানি দ্বিগুণ করতে হবে।
বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর ১৫তম আসরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। কিন্তু ডেনিম রপ্তানিতে আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষস্থানে; এমনকি আমাদের অবস্থান চীনের চেয়েও উপরে।’
আরও পড়ুন: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছে
তিনি আরও বলেন, ‘ডেনিম রপ্তানিতে বাংলাদেশের এই সাফল্যের পেছনে বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর বিশাল অবদান রয়েছে।’
প্রধান অতিথি হিসেবে আজ ঢাকায় বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর ১৫তম সংস্করণের উদ্বোধনকালে বাণিজ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে ছিলেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, বিজিএমইএ’র বর্তমান সভাপতি ফারুক হাসান, বিজিএমইএ’র সিনিয়র সহসভাপতি এস এম মান্নান কচি এবং বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মোস্তাফিজ উদ্দিন।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানির প্রায় এক-চতুর্থাংশ আসে ডেনিম ও ডেনিম সম্পর্কিত পণ্য রপ্তানি থেকে। সুতরাং, ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পোশাক রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে ডেনিম রপ্তানি বাড়িয়ে দ্বিগুণ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এটা সম্ভব। কারণ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং সাসটেইনিবিলিটির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যে দৃষ্টান্তমূলক অগ্রগতি হয়েছে, তাতে আমরা বিশ্বাস করি যে ব্র্যান্ড এবং খুচরা বিক্রেতারা তাদের পছন্দের পোশাক সোর্সিং গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশকে বেছে নেবে।’
ফারুক হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশে ইউনাইটেড স্টেটস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) থেকে লিড সনদপ্রাপ্ত ২০৩টি সবুজ পোশাক কারখানা রয়েছে। বিশ্বের সর্বোচ্চ সংখ্যক সবুজ কারখানার উপস্থিতি সাসটেইনিবিলিটির প্রতি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের দূঢ় প্রতিশ্রুতি প্রমাণ করে।’
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের সেরা ১০০টি সবুজ কারখানার মধ্যে এখন ৫৩টি বাংলাদেশে অবস্থিত।
এস এম মান্নান কচি বলেন, ‘বর্তমানে বিজিএমইএ ও সরকার দেশে পোশাক শিল্প যাতে নির্বিঘ্নভাবে পরিচালিত হতে পারে, সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে। বাংলাদেশে যে নিরাপদ ব্যবসায়িক পরিবেশে বিরাজমান, বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর ১৫তম আসরের সফল আয়োজন তাই প্রমাণ করে।’
এইচঅ্যান্ডএমের বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ইথিওপিয়ার রিজিওনাল কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউর রহমান বলেন, এইচঅ্যান্ডএম ২০৩০ সালের মধ্যে ৫৬ শতাংশ কার্বন ডাইঅক্সাইড কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। কোম্পানির জন্য বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক করতে এইচঅ্যান্ডএম একটি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি সই করার উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি রিসাইক্লিয়ের জন্য আরও নিয়মিত পরিকল্পনা গ্রহণের উপর গুরোত্বারোপ করেন। এ ছাড়াও, উদ্ভাবনের ও নতুন কৌশলসমূহ যেগুলো পোশাক শিল্পের জন্য অত্যাবশ্যক সেগুলো আয়ত্ত্ব করার উপর জোর দেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের রিজার্ভ-সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা করছে আইএমএফ
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন যে, হ্যান্ড এইচঅ্যান্ডএম গ্রিন সংক্রান্ত উদ্ভাবনের জন্য জিআইএফ এর সঙ্গে কাজ করছে।
অধিকন্তু, কার্বন নির্গমন ও পানি ব্যবহার কমাতে নতুন প্রযুক্তির প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ ছাড়াও তিনি পোশাক শ্রমিকদের উচ্চ মজুরি সম্পর্কে উল্লেখ করেন এবং এ বিষয়ে আলোচনা করার জন্য মন্ত্রীদের আমন্ত্রণ জানান।
মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘ডেনিম শিল্পে বাংলাদেশের রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। ডেনিম শিল্পের সেই অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর ১৫তম আয়োজনে ১২টি দেশের মোট ৮০ টি প্রদর্শক অংশ নিচ্ছে। আজ বুধবার থেকে শুরু হওয়া ২ দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীতে অংশ নিতে দেশ-বিদেশের প্রায় পাঁচ হাজার দর্শনার্থী নিবন্ধন করেছেন।
ডেনিম এক্সপোর এবারের আসরে মোট চারটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়া হাই কমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি (ইকোনমিক) জোশুয়া গাকুটান; বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক কাজী ফাইয়াজ মুরশিদ, বিজিএমইএ’র সাবেক সহসভাপতি ও তুসুকা গ্রুপের চেয়ারম্যান আরশাদ জামাল দিপু; পুমার বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শাখা ব্যবস্থাপক মঈন হায়দার চৌধুরী; মুনির আহমেদ, পরিচালক, এম অ্যান্ড জে গ্রুপ; মোহাম্মদ আনিস আগুং নুগরোহো, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, বেটার ওয়ার্ক বাংলাদেশ; মিস ক্যাথারিনা মায়ার, রিজিওনাল সিআরএম ম্যানেজার, ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট এবং তুরস্ক, ব্লুসাইন টেকনোলজিস এজি; এবং টাকার আসানো, ওয়াইকেকে বাংলাদেশ পিটিই লিমিটেডের বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর ‘২০৩০ সালে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের অবস্থান ও সামনের পথ’ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেবেন।
'১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মানব সম্পদের উন্নয়ন ও সদ্ব্যবহার’শীর্ষক সভায় আলোচনা করবেন- জিয়াউর রহমান, রিজিওনাল কান্ট্রি ম্যানেজার, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ইথিওপিয়া, এইচএন্ডএম; ড. বার্ন্ড স্প্যানিয়ার, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেপুটি হেড অব মিশন; শরীফ জহির, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অনন্ত গ্রুপ; ড. শাহরিয়ার মাহমুদ, চিফ সাসটেইনেবিলিটি অফিসার, স্পিননোভা; সারওয়াত আহমেদ, সিনিয়র এডভাইজার, জিআইজেড; এবং ড. রবিচন্দ্রন এল, ডিরেক্টর - (প্রোডাক্ট ইনোভেশন/বিজনেস), আটলান্টিক কেয়ার কেমিক্যালস।
থিস উডস্ট্রা, বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর, আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, পরিচালক, বিজিএমইএ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক, টিম গ্রুপ; শফিউর রহমান, কান্ট্রি ম্যানেজার, জি-স্টার র; শামস মাহমুদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শাশা ডেনিমস লিমিটেড এবং সাবেক সভাপতি, ডিসিসিআই; মাত্তেও উরবিনি, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সোকো কেমিক্যালস; এবং আন্দ্রেয়া ভেনিয়ার, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, অফিসিনা+৩৯ 'ডেনিম শিল্পের টেকসই পরিবর্তন' বিষয়ক প্যানেল আলোচনা করবেন।
শিল্পের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনে করণী’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় বক্তাদের মধ্যে রয়েছে- আলী মুশতাক বাট, বাংলাদেশে ডেনমার্কের দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর অ্যান্ড হেড অব ট্রেড মিশন; মোহাম্মদ হাতেম, নির্বাহী সভাপতি, বিকেএমইএ; শহিদ উল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি, বিজিএমইএ; লুথমেলা ফরিদ, পরিচালক, প্যাসিফিক জিন্স; আদিব সাজ্জাদ, কান্ট্রি ম্যানেজার, সলভেই৮; এবং দীপক শাহ, গ্রুপ সিইও (বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনাম), টেক্স ফাস্টেনারস।
আরও পড়ুন: ড্রাইভারদের জন্য সাবস্ক্রিপশন প্যাকেজ চালু করল উবার
১১ মাস আগে
এশিয়া প্যাসিফিককে সহায়তা করতে আগামী দশকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের নতুন তহবিল উন্মোচন এডিবির
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বুধবার মূলধন ব্যবস্থাপনা সংস্কারের অনুমোদন দিয়েছে। এটি এই অঞ্চলের ওভারল্যাপিং, সমকালীন সংকট মোকাবিলায় আগামী এক দশকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের নতুন তহবিল অনুমোদন দিয়েছে।
জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় বিলিয়ন থেকে ট্রিলিয়ন ডলারে স্থানান্তরের জন্য বেসরকারি ও অভ্যন্তরীণ মূলধন সংগ্রহের মাধ্যমে তহবিলের সম্প্রসারণ আরও বাড়ানো হবে।
আরও পড়ুন: ২০২২ সালে বৈশ্বিক বাণিজ্যিক আর্থিক ঘাটতি ২.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত: এডিবি
ম্যানিলা থেকে পাওয়া এক বার্তায় বলা হয়, এডিবির ক্যাপিটাল অ্যাডিকোয়েন্সি ফ্রেমওয়ার্কের (সিএএফ) আপডেটের মাধ্যমে এই সংস্কার চালু করা হয়েছে।
তারা ব্যাংকের বার্ষিক নতুন প্রতিশ্রুতির ক্ষমতা ৩৬ বিলিয়নেরও বেশি প্রসারিত করেছে। অর্থাৎ প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৪০ শতাংশ বাড়িয়েছে।
সামগ্রিক ঝুঁকি রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি এডিবির প্রত্যাশিত বিবেচ্য মূলধনের মাধ্যমে এই সম্প্রসারণ অর্জন করা হয়।
এই সংস্কারগুলো অপ্রত্যাশিত সংকট মোকাবিলা করতে এডিবির উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোকে (ডিএমসি) সহায়তা করার জন্য একটি কাউন্টারসাইক্লিকাল লেন্ডিং বাফার তৈরি করে।
আগামী এক দশকে এডিবি তার ডিএমসি এবং বেসরকারি খাতের ক্লায়েন্টদের নিজস্ব অর্থায়নের ৩৬০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত সরবরাহ করতে সক্ষম হবে। যা এডিবি তার এএএ ক্রেডিট রেটিং বজায় রাখবে এবং ডিএমসিগুলোকে স্বল্প খরচে এবং দীর্ঘ মেয়াদে তহবিল সরবরাহের ক্ষমতা নিশ্চিত করবে।
সংস্কারগুলো একটি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা প্রবর্তনের মাধ্যমে এডিবির এএএ ক্রেডিট রেটিংকে আরও সুরক্ষিত করে। এটি আর্থিক চাপের সময় মূলধন কমে যাওয়া রোধ করবে। এডিবির ক্যাপিটাল অ্যঅডিকোয়েন্সি ফ্রেমওয়ার্ক প্রতি ৩ বছর পর পর পর্যালোচনা করা হয়।
এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া বলেন, এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রচেষ্টায় এডিবির সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে সম্প্রসারিত করবে।
তিনি বলেন, আমাদের সম্পদ দিয়ে আরও বেশি ও দ্রুত কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংকগুলোকে (এমডিবি)। সেই আহ্বানে এডিবি'র সাড়া দেওয়ার অংশ হিসেবেই আমাদের আজকের এই সিদ্ধান্ত। এসব সম্পদ এই অঞ্চলের বেশকিছু জটিল সংকট মোকাবিলা করতে সহায়তা করবে। যেমন- লিঙ্গ বৈষম্য মোকাবিলা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অস্তিত্বগত চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে মৌলিক চাহিদাগুলো সরবরাহ করতে সহায়তা করবে। এই অতিরিক্ত ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা আরও প্রসারিত হবে এবং বেসরকারি ও অভ্যন্তরীণ মূলধন সংগ্রহ এবং আমাদের কাজের প্রভাব সর্বাধিক করার জন্য নতুন প্রচেষ্টার মাধ্যমে আরও বাড়ানো হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ১০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি
এডিবি'র সর্বশেষ প্রতিবেদন: ২০২৪ অর্থবছরকে বাংলাদেশের জন্য একটি ভালো বছর হিসেবে পূর্বাভাস
১ বছর আগে
কপ ২৭: উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুত ১০০ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা চায় বাংলাদেশ
ইউক্রেনের যুদ্ধ, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, খাদ্যসহ বহু প্রতিযোগিতামূলক সংকটের মধ্যে মিশরের শারম এল শাইখে ৬-১৮ নভেম্বর চলছে জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করার শেষ সুযোগ হিসাবে বিবেচিত জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু আলোচনা।
বাংলাদেশের জন্য জলবায়ু অর্থায়ন হলো জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের ২৭তম সম্মেলনে আলোচনা করা প্রধান বিষয়গুলির মধ্যে একটি।
বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল বলেছে, তারা উন্নত দেশগুলিকে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার অর্থ প্রদানের জন্য বোঝানোর চেষ্টা করবে যা তারা আগে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলিকে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি দলের সদস্য ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক জিয়াউল হক ইউএনবিকে জানান, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল সেই ২০১৫ সালে। এরপর ওই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য গাইডলাইন বা রুলবুক প্রণয়নের কাজ চলছিল এত বছর ধরে। সেটিও সম্পন্ন হয়ে অনুমোদন হয়ে গেছে গত বছরের গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলনে। পাশাপাশি প্যারিস জলবায়ু চুক্তির আলোকে গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলনে বৈশ্বিক গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমাতে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়। এরমধ্যে অন্যতম ছিল ২০৩০ সালের মধ্যে ধাপে ধাপে কয়লার ব্যবহার বন্ধ করা, মিথেন গ্যাস নিঃসরণ কমানো এবং বন উজাড় বন্ধ করা।
এছাড়া বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখতে ২০৩০ সালের কার্বন নিঃসরণ ২০১০ সালের চেয়ে ৪৫ শতাংশ কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। কিন্তু গত এক বছরে সেই সব প্রতিশ্রুতির ধারেকাছেও কোন দেশ বিশেষ করে উন্নত দেশগুলো এখনও যায়নি।
আরও পড়ুন: বহুবিষয়ে অগ্রগতি নেই, তবে কপ২৭ সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের যোগদান আশাপ্রদ: তথ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ইউএনবিকে বলেন, উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি দেয়া শুরু হয়েছিল সেই ২০০৯ সালে কোপেনহেগেন জলবায়ু সম্মেলন থেকে। এরপর জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী উন্নত দেশগুলোর পক্ষ থেকে একের পর এক প্রতিশ্রুতি এসেছে। আবার এসব প্রতিশ্রুতি আদায় করতেও বাংলাদেশে মতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। এতে জলবায়ু সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর সমঝোতাকারীদের অনেক সময় ও শ্রম ব্যয় হয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিশ্রুতিই আজ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আরও বলছেন, ২০০৯ সালেই উন্নত দেশগুলো কোপেনহেগেন অ্যাকর্ডে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ২০২০ সাল থেকে প্রতিবছর ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ১০০ বিলিয়ন ডলার করে দিবে। ২০২০ সাল গিয়ে ২০২২ সালও চলে যাচ্ছে। এখন সময়ের পরিবর্তনে ১০০ বিলিয়ন ডলারের চাহিদা ৫০০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু মূল প্রতিশ্রুতিই এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি। এর আগে ২০১০ সাল থেকে ফাস্ট ট্র্যাক ফাইন্যান্স হিসেবে উন্নত দেশগুলো তিন বছরে ৩০ বিলিয়ন ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু সেই প্রতিশ্রতিও তারা ( উন্নত দেশগুলো ) বাস্তবায়ন করেনি। উল্টো পুরনো দেয়া ঋণ ও অনুদানকে গোজামিল দিয়ে হিসাব দিয়েছিল ২০১৩ সালে জলবায়ু সম্মেলনে।
এ প্রসঙ্গে সম্মেলন পর্যবেক্ষণকারী জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মো. সামছুদ্দোহা ইউএনবিকে বলেন, সেই কোপেনহেগেন অ্যাকর্ডে উন্নত দেশগুলোর চাপে সিদ্ধান্ত হয়েছিল বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। ওই সম্মেলনে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি কোর কমিটির মাধ্যমে গুরত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছিলেন। বাংলাদেশের দাবি ছিল ২ ডিগ্রি নয়, তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমিত রাখতে হবে। বাংলাদেশের সেই দাবিও কোপেনহেগেন অ্যাকর্ডে ঠায় পেয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে জলবায়ু পরিবর্তনের মাত্রা বেডে যাওয়ায় বিশ্ব জোরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের তীব্রতা বেড়ে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর পক্ষ থেকে জোরালো দাবি উঠে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি নয়, ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা করা আন্তঃসরকার প্যানেল আইপিসিসি তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করে জানায়, জলবায়ু পরিবর্তন যেভাবে ঘটছে তাতে পৃথিবীকে রক্ষার জন্য তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যেই রাখতে হবে। জাতিসংঘ তাতে মত দেয়। শেষ পর্যন্ত উন্নত দেশগুলো তাদের ২ ডিগ্রি দাবি থেকে সরে আসে। ফলে প্যারিস চুক্তিতে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত মানছে না উন্নত দেশগুলো। তাদের কারণে বর্তমানে যে হারে কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে তাতে এই শতাব্দী শেষে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি পৌঁছাবে। এই তথ্য খোদ জাতিসংঘ বিভিন্ন সংস্থার।
তিনি আরও বলেন, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের এই বাস্তবতার প্রেক্ষিতে তাই এবারের জলবায়ু সম্মেলনের উদ্যোক্তারা নতুন প্রতিশ্রুতি বাদ দিয়ে পুরনো ‘প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে’ উদ্যোগী হয়েছেন। তাই এবারের জলবায়ু সম্মেলনেকে প্রতিশ্রুতি বাস্তবাস্তবায়ের সম্মেলন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সম্মেলনের শুরু থেকে নতুন দরকষাকষিতে না গিয়ে আগের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে জোর দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে মিশর প্রেসিডেন্সির সঙ্গে জাতিসংঘ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। সম্মেলনে ১০০টি দেশের বেশি শীর্ষ নেতারা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। সকলেই একবাক্যে তাদের দেয়া বক্তব্যে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করার তাগিদ দিয়েছেন।
ইতোমধ্যে সম্মেলনে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অনুসঙ্গ হিসেবে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে দুর্যোগের আগাম সতর্কতা ব্যবস্হা জোরদার করা। কারণ বিদ্যমান প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন খুবই জরুরি।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসে এই আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা কার্যক্রম উদ্ভোধন করেছেন। একইসঙ্গে তিনি আরও উদ্ভোধন করেছেন, বিশ্বে কার্বন নিঃসরণের প্রকৃত তথ্য উদঘাটনের জন্য গ্রিন হাউজ গ্যাস ইনভেন্টরি কার্যক্রম। এর মাধ্যমে বিশ্বে কার্বন নিঃসরণের প্রকৃতপক্ষে তথ্য জানা যাবে।
বর্তমানে বিভিন্ন সংস্থার দেয়া কার্বন নিঃসরণ তথ্যের সঙ্গে প্রকৃত তথ্যের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। ফলে অর্থায়ন ও অভিযোজনের ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়ছে। তাই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য কার্বন নিঃসরণের প্রকৃত তথ্য জানা জরুরি হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য উন্নত দেশগুলোই দায়ী: তথ্যমন্ত্রী
রুশ রাষ্ট্রদূত আশা করছেন শিগগিরই ইউক্রেনে যুদ্ধ শেষ হবে: তথ্যমন্ত্রী
১ বছর আগে