বিদেশি কূটনীতিক
'বিএনপি বুঝুক বা না বুঝুক, প্রত্যেক মানুষের জীবনই গুরুত্বপূর্ণ': বিদেশি কূটনীতিকদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গত ২৮-২৯ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াতের 'নৃশংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞের' কথা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরে সংবিধান অনুযায়ী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় টিকিয়ে রাখতে 'দৃঢ় ও অটল' অবস্থানের কথা জানিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে যথাসময়ে 'অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য' নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথাও জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আজ বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কূটনীতিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ডব্লিউএইচও’র আঞ্চলিক পরিচালক নির্বাচন: সায়মা ওয়াজেদকে সমর্থনের জন্য থাইল্যান্ডের প্রতি বাংলাদেশের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মোমেন
তিনি বলেন, ‘আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, প্রত্যেক মানুষের জীবনই গুরুত্বপূর্ণ- আমাদের বিএনপির বন্ধুরা তা বুঝুক বা না বুঝুক। আমরা সর্বোচ্চ ধৈর্য ধরব এবং সংযত থাকব।’
ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রদান, জনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইনগত মানদণ্ডের মধ্যে সবকিছু করতে হবে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত ও সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস, দেশকে অস্থিতিশীল করা বা গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়াগুলোর ক্ষতি করার যেকোনো প্রচেষ্টা ব্যর্থ করতে হবে।
ড. মোমেন বলেন, জাতিকে আতঙ্কিত করা এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্য হচ্ছে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা এবং অসাংবিধানিক শক্তিকে উৎসাহিত করা। তিনি বলেন, ‘বিএনপির ভয় দেখানো ও কূটচালের কৌশল আগেও কার্যকর হয়নি, এখনও হবে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আগামী নির্বাচন ২০২৩ সালের শেষে অথবা ২০২৪ সালের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে এবং এটি 'অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ' হবে।
তিনি বলেন, 'কে আসবে, কে আসবে না সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন মানে জনগণের অংশগ্রহণ। জনগণের অংশগ্রহণ থাকলে তা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।’
আরও পড়ুন: 'মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা' দাবি করা ব্যক্তিকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা উচিত: মোমেন
আইনমন্ত্রী বলেন, কূটনীতিকদের প্রশ্ন করার সুযোগ দেওয়া হলেও তারা কোনো প্রশ্ন করেননি।
তিনি বলেন, ‘আমরা বুঝতে পেরেছি যে আমরা যে ব্যাখ্যা দিয়েছি তা স্পষ্ট ছিল। তারা সন্তুষ্ট কি না, তা বলা তাদের দায়িত্ব।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে অবশ্যই সাংবিধানিক পথ অনুসরণ করতে হবে।
তিনি বলেন, ২৮ ও ২৯ অক্টোবর যা ঘটেছিল তার একটি লিখিত সংস্করণসহ হত্যা, পুলিশ ও সাংবাদিকদের উপর হামলা এবং প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলাসহ অন্যান্য ঘটনার ভিডিও ফুটেজ এবং স্থির চিত্রের সংকলন তাদের দিয়েছেন।
ব্রিফিংয়ের কয়েক ঘণ্টা আগে ঢাকায় অবস্থিত কূটনৈতিক মিশনগুলো অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিতে 'সংযম, সহিংসতা পরিহার ও একযোগে কাজ' করার জন্য সব স্টেকহোল্ডারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
দুই দেশের দূতাবাস ও হাইকমিশনের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, 'অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, নরওয়ে, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সরকার ২৮ অক্টোবর ঢাকায় রাজনৈতিক সমাবেশের সময় রাজনৈতিক সহিংসতায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
কূটনীতিকদের উদ্দেশে মোমেন বলেন, 'গত ২৮ অক্টোবর ও গতকাল যা ঘটেছে তাতে আমরা মর্মাহত। তবে আমরা বিস্মিত নই, কারণ আমরা অতীতে বিএনপি-জামায়াতের ভয়াবহ সহিংসতার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি।’ তিনি আরও বলেন, বিএনপি ও তার মিত্রদের সহিংসতা ও আগ্রাসনের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।
২০০০ সালের গোড়ার দিকে বিএনপি-জামায়াত সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের পরিবেশ তৈরি করেছিল। বিশেষ করে ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনের সময় ব্যাপক সহিংসতা ও ভোট কারচুপির মতো ঘটনা ঘটিয়েছিল।
নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা লুটপাট, ধর্ষণ ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। তাদের লক্ষ্য ছিল বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।
আরও পড়ুন: চ্যালেঞ্জ নিতে চাই এবং মোকাবিলা করতে প্রস্তুত: মোমেন
২০১৩ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে বিএনপি ও তার মিত্ররা কয়েক হাজার গাড়ি ভাঙচুর করে এবং পেট্রোলবোমা ব্যবহার করে অনেক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। গাড়ির ভেতরে আটকে থাকা যাত্রীদের জীবন্ত পুড়িয়েও মেরেছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এখনও ভয়াবহ ক্ষত ও ট্রমা নিয়ে বেঁচে আছেন।
সে সময় পেট্রোলবোমা ও হ্যান্ড গ্রেনেড হামলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ২০ কর্মকর্তাসহ চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়।
১ বছর আগে
করদাতাদের টাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা সেবা দেওয়া হবে না: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ঢাকায় কোনো বিদেশি কূটনীতিককে অতিরিক্ত নিরাপত্তা সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকার বৈষম্য করতে চায় না, তবে অর্থের বিনিময়ে তারা এ ধরনের সুবিধা পেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ পাঁচ-ছয়টি দেশের রাষ্ট্রদূত এ ধরনের অতিরিক্ত নিরাপত্তা সেবা পান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার সন্ধ্যায় ইউএনবিকে ফোনে বলেন, ‘যদি তারা এটি চায়, তাহলে তারা অর্থপ্রদানের বিনিময়ে এটি পেতে পারে। আমরা করদাতাদের অর্থ দিয়ে আর এই বাড়তি এসকর্ট (নিরাপত্তা) সার্ভিস দেবো না।’
এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, পাঁচ থেকে ছয়জন কূটনীতিক এ ধরনের সেবা পেয়ে থাকেন এবং এখন অন্যান্য কূটনীতিকেরাও এই সুবিধা চান।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংকের কাছে বাংলাদেশ একটি মডেল দেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিয়মিত নিরাপত্তা সেবা চালু থাকায় সরকার জনগণের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে রাজি নয়।
মোমেন বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোতে কোনো সরকারই এ ধরনের বাড়তি সুযোগ-সুবিধা দেয় না।’
মন্ত্রী বলেন, দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি হয়নি যে এ ধরনের সেবা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কিছু কিছু গণমাধ্যমে ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বা বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি কুটনীতিকদের নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য আমাদের নজরে এসেছে।
উল্লেখ্য যে প্রতিটি দূতাবাসেই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা বিধান অব্যাহত রেখেছেন এবং রাষ্ট্রদূতদের পুলিশ প্রদত্ত গানম্যান নিয়োজিত আছেন। এই কারণে নিরাপত্তা প্রত্যাহার সম্পর্কিত এই বিভ্রান্তকর খবরটি সঠিক নয়।
বাংলাদেশ বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য আন্তর্জাতিক আইন এবং প্রচলিত রীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সাধারণত বাংলাদেশ পুলিশ বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তার গুরু দায়িত্বটি সবসময় পালন করে থাকে।
আরও পড়ুন: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে মোমেনের ফলপ্রসূ বৈঠক
কিন্তু বাংলাদেশের কয়েক বছর আগের একটি ঘটনাপরবর্তী সময় থেকে কয়েকজন বিদেশি কূটনীতিককে অলিখিতভাবে গাড়িসহ মূলত নিয়মিত ট্রাফিক মুভমেন্টের সহায়তার জন্য বাড়তি কিছু লোকবল দেওয়া হয়েছিল।
বর্তমানে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে আছে। তাই তাদেরকে বাড়তি নিরাপত্তা প্রদানের কোনো আবশ্যকতা নাই।
পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর কাজের পরিধি বৃদ্ধির জন্য এই বাড়তি সুবিধাটি এখন অব্যাহত রাখা যাচ্ছে না।
এখানে স্মরণ করা যেতে পারে যে পৃথিবীর কোনো দেশেই বাংলাদেশের কোনো রাষ্ট্রদূতকে বাড়তি নিরাপত্তা ও চলাচলের ক্ষেত্রে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো সুবিধা দেওয়া হয় না।
আরও উল্লেখ করা যায় যে সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু দূতাবাস থেকে একই ধরনের সুবিধার জন্য অনুরোধ করার একটি প্রবণতা আমরা লক্ষ্য করছি। এ লক্ষ্যে তাদের সকলের সুবিধার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ আনসার বাহিনীতে একটি চৌকস দল তৈরি করেছে।
বিদেশি কূটনীতিকরা তাদের খরচে এ সুবিধাটি গ্রহণ করতে পারবেন। কোনো দূতাবাস আনসার সদস্যদের এই সুবিধা অব্যাহত রাখতে চাইলে বা বাড়তি সুবিধা নিতে চাইলে আমাদেরকে লিখিতভাবে জানালে আমরা সেই ব্যবস্থাটি গ্রহণ করব।
খুব শিগগিরই সরকারের এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সকল বিদেশি দূতাবাসকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ পানি সম্মেলনের প্লেনারি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন
১ বছর আগে
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ঢাকাস্থ বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আয়োজিত এ পিঠা উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
আরও পড়ুন: ডিএসসিসিতে প্রথমবারের মতো পিঠা উৎসব
বাংলাদেশের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠার সঙ্গে বিদেশি কূটনীতিকদের পরিচয় করিয়ে দিতে এ পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়।
এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব পিঠা উপভোগের জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের স্বাগত জানান।
পিঠা উৎসবে বিদেশি অতিথিরা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পিঠার স্বাদ গ্রহণ করে মুগ্ধ হন এবং বাংলাদেশি খাবারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
১ বছর আগে
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিলের ১০ শতাংশ দাবি করবে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মানবিক সংস্থাগুলো ধীরে ধীরে ভাসানচরে স্থানান্তরিত এক লাখ রোহিঙ্গাদের পরিষেবা না দিলে বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গাদের নামে তারা যে পরিমাণ তহবিল সংগ্রহ করেছে তার ১০ শতাংশ দাবি করবে বাংলাদেশ। এক সাক্ষাত্কারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এ কথা জানিয়েছেন।
শুক্রবার তার বাসভবনে ইউএনবিকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, 'হ্যাঁ, তাদের অর্থ প্রদান করতে হবে। কেননা তহবিল আসছে রোহিঙ্গাদের জন্য। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের পরিষেবা দিতে না চাইলে আমরা ১০ শতাংশ তহবিল দাবি করব।'
কক্সবাজার জেলায় ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সরকার ১ লাখ রোহিঙ্গাকে ধীরে ধীরে ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছে যার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা শিবিরে অগ্নিকাণ্ড: আইওএমকে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিচ্ছে কোরিয়া
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা কোথায় বাস করছেন তা নিয়ে মানবিক সংস্থাগুলোর মাথাব্যথা হওয়া উচিত নয়।
ড. মোমেন বলেন, 'রোহিঙ্গারা কুতুপালং, কক্সবাজার, বরিশাল কিংবা ভাসানচরে বাস করছে কিনা তা বিষয় নয়। এটা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা হওয়া উচিত নয়। তাদের মাথাব্যথা হওয়া উচিত রোহিঙ্গাদের পরিষেবা প্রদান করা নিয়ে। তারা যেখানেই থাকুক না কেন পরিষেবা প্রদানে তারা বাধ্য।'
তিনি বলেন, যদি মানবিক সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের পরিষেবা না দেয় তবে সদস্য রাষ্ট্রগুলো তহবিল সরবরাহ করবে না। ফলে তারা তীব্র কষ্টের মুখে পড়বে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউএনএইচসিআর এবং অন্যান্য সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের ও হোস্ট সম্প্রদায়ের নামে অর্থ সংগ্রহ করার পরেও তারা জানে না কীভাবে অর্থ ব্যয় করে।
ভাসানচরের প্রযুক্তিগত দলের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'তাদের পর্যবেক্ষণ খুব ভালো ও ইতিবাচক। সংক্ষেপে, তারা একটি ইতিবাচক পর্যবেক্ষণ জানিয়েছেন।'
তিনি বলেন, তারা তাদের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে একটি ১০-পৃষ্ঠার প্রতিবেদন হস্তান্তর করবে এবং ইতোমধ্যে তারা দুই পৃষ্ঠার একটি সারসংক্ষেপ জমা দিয়েছে।
১ লাখ রোহিঙ্গাদের জন্য আবাসন সুবিধা সম্পর্কে সরাসরি ধারণা লাভ করতে জাতিসংঘের ১৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গত মার্চে ভাসানচর পরিদর্শন করে।
তাদের দুই পৃষ্ঠার সারসংক্ষেপে দলটি তিনটি বিষয় নির্দেশ করেছে- রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য শিক্ষা, বেড়িবাঁধের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা।
আরও পড়ুন: ৬ষ্ঠ দফায় ভাসানচরের পথে ২৪৯৫ রোহিঙ্গা
ড. মোমেন বলেন, রোহিঙ্গাদের শিক্ষা প্রদানে বাংলাদেশের কোনো সমস্যা নেই। তবে, সেটি মিয়ানমারের ভাষাতেই হওয়া উচিত।
'রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে। সুতরাং, রোহিঙ্গারা দেশে ফিরলে সহজেই তাদের সমাজে মিশে যেতে মিয়ানমারের পাঠ্যক্রমের শিক্ষা সহায়তা করবে,' তিনি বলেন।
বেড়িবাঁধের উচ্চতা আরও বাড়ানোর বিষয়ে ড. মোমেন বলেন, তারা অবশ্যই তাদের নিজস্ব প্রয়োজনে এটি করবে।
যোগাযোগ ব্যবস্থার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা সন্দ্বীপ হয়ে ভাসানচরে যেতে পারবেন। কেননা এই পথে সময় লাগবে ৩০ মিনিট। 'ভাসানচরের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না।'
তিনি বলেন, ভাসানচর বাংলাদেশের ৭৫টি দ্বীপের একটি এবং এটি সেন্টমার্টিন দ্বীপের চেয়েও ১০ গুণ বড়।
কূটনীতিকদের সফরের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, তারা সেখানে দৃঢ় কাঠামো ব্যবস্থা দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। 'তারা এই ব্যবস্থার খুব প্রশংসা করেছে। তারা এটা পছন্দ করেছে।'
'দু'জন কূটনীতিকের সাথে আমার আলোচনা হয়েছিল। তারা ভাসানচর পছন্দ করেছে,' পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন।
বর্তমানে ভাসানচরে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা ৩ এপ্রিল বিদেশি কূটনীতিকদের সাথে আলাপকালে তাদের স্বদেশ মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে।
তারা ভাসানচরে বিদ্যমান সুবিধাগুলো সম্পর্কে তাদের 'উচ্চ সন্তুষ্টি' জানিয়েছিলেন, যাকে তারা কক্সবাজারের জঞ্জাল শিবিরের তুলনায় নিরাপদ, সুরক্ষিত অপরাধ মুক্ত বলে বিবেচনা করেছিলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আঞ্চলিক, বহুপাক্ষিক উদ্যোগ চায় ঢাকা
মিয়ানমার থেকে গণ প্রস্থানের পর থেকে রোহিঙ্গাদের অনুকরণীয় মানবিক সহায়তার জন্য রোহিঙ্গারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশ সরকারকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানায়।
ভাসানচরে আসা কূটনীতিকদের উদ্দেশে এক রোহিঙ্গা প্রতিনিধি বলেন, 'আমি চাই আমার সন্তানরা তাদের নিজস্ব জাতীয় পরিচয় নিয়ে তাদের দেশে বেড়ে উঠুক।'
কিছু রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য শিক্ষার সুবিধা সম্প্রসারণ এবং তাদের কৃষিকাজ ও মাছ ধরার সুযোগ প্রদানের প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন যা তাদের কর্মঠ হতে সহায়তা করবে।
তুরস্ক, ইইউ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নেদারল্যান্ডস- দশটি দূতাবাস-প্রতিনিধি দলের মিশনের প্রধানদের জন্য ভাসানচরে দিনব্যাপী এই পরিদর্শনের আয়োজন করেছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ভাসানচরে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া রোহিঙ্গা স্থানান্তর তাদের প্রত্যাবাসন বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সামগ্রিক প্রচেষ্টারই অংশ।
৩ বছর আগে
জনগণের প্রতি বিএনপির আস্থা নেই বলেই বিদেশিদের কাছে নালিশ: কাদের
দেশের জনগণের প্রতি বিএনপির আস্থা নেই বলেই তারা বিদেশিদের কাছে নালিশ করছে বলে সোমবার মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
৪ বছর আগে
কূটনীতিকদের দায়িত্ববোধের পরিচয় দেয়া উচিত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর জন্য বিদেশি কূটনীতিকদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। তার মতে, কূটনীতিকদের আচরণবিধি মেনে চলা এবং দায়িত্ববোধের পরিচয় দেয়া উচিত।
৪ বছর আগে
বিদেশি কূটনীতিকদের সিটি নির্বাচনের পরিবেশ জানাল বিএনপি
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন উপলক্ষে ক্ষমতাসীন দলের আচরণবিধি লঙ্ঘন, প্রার্থীদের ওপর হামলাসহ নির্বাচনের সামগ্রিক পরিবেশ রবিবার ঢাকায় অবস্থিত কূটনীতিকদের অবহিত করেছে বিএনপি।
৪ বছর আগে