বার্সা
নাটকীয় বেনফিকা-বার্সা ম্যাচে হলো যেসব রেকর্ড
ফুটবলপাড়ায় গতরাতের পাগলাটে ম্যাচের রেশ এখনও পুরোপুরি কাটেনি। বার্সেলোনা সমর্থকদের অনেকে এখনও স্বপ্নের মধ্যে ডুবে আছেন। এর মাঝে চলুন দেখে নেই, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ওই ম্যাচটি কতগুলো রেকর্ডে নাম তুলল।
বেনফিকাকে ৫-৪ গোলে হারানোর রাতে জোড়া গোল করেন রাফিনিয়া। এর মাধ্যমে চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তার গোলসংখ্যা বেড়ে হলো ৮টি। এর ফলে চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে বসেছেন তিনি। ৯ গোল করে তালিকার শীর্ষে তারই সতীর্থ রবের্ট লেভানডোভস্কি। তিনিও ম্যাচটিতে পেয়েছেন জোড়া গোলের দেখা।
গোল করায় দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও গোলে অবদান রাখার তালিকায় সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড। আট গোলের পাশাপাশি তিনটি অ্যাসিস্টের কল্যাণে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চলতি আসরে মোট ১১ গোলে অবদান রেখেছেন তিনি।
রাফিনিয়ার প্রথম গোলটি ছিল ডি-বক্সের বাইরে থেকে হেডারে করা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসের মাত্র তৃতীয় গোল। সেটিও দেখা গেল এক যুগ পর। সবশেষ ২০০৩ সালে আয়াক্সের বিপক্ষে বক্সের বাইরে থেকে হেডারে লক্ষ্যভেদ করেন ক্লাব ব্রুজের নরওয়ে স্ট্রাইকার রুনে লাঙ্গে।
আরও পড়ুন: ভাগ্যের পালাবদলের রাতে ৯ গোলের থ্রিলারে শেষ হাসি বার্সেলোনার
গতরাতে পেনাল্টি থেকে জোড়া গোল আদায় করে নতুন উচ্চতায় উঠেছেন রবের্ট লেভানডোভস্কি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে পেনাল্টি থেকে গোল করায় লিওনেল মেসিকে (১৮) ছাড়িয়ে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর রেকর্ড স্পর্শ করেছেন এই পোলিশ। স্পট কিক থেকে গোল করার রেকর্ডে ১৯ গোল নিয়ে রোনালদোর সঙ্গে এখন যৌথভাবে শীর্ষে রয়েছেন লেভা। সামনের ম্যাচগুলোতে পেনাল্টি গোলে রূপান্তর করতে পারলেই সবাইকে ছাড়িয়ে যাবেন তিনি।
ইউরোপীয় এই প্রতিযোগিতার নাম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ করার পর থেকে মাত্র পঞ্চম খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়েও ম্যাচ হেরেছেন ভাঙ্গেলিস পাভলিদিস।
২০০৩ সালে সর্বপ্রথম এমন দুর্ভাগ্যজনক কীর্তি গড়েন ব্রাজিল কিংকদন্তি রোনালদো নাজারিও। সে বছর ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে হ্যাটট্রিক করেও রিয়াল মাদ্রিদকে ম্যাচ জেতাতে ব্যর্থ হন তিনি; ৪-৩ গোলে ম্যাচটিতে জয় পায় ইউনাইটেড। এরপর ২০১০ সালে সান সিরোতে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেও টটেনহ্যামকে জেতাতে পারেননি গ্যারেথ বেল; ওই ম্যচটিও ৪-৩ গোলে শেষ হয়। ২০২০ সালে তুরস্কের মিডফিল্ডার ইরফান কাভেচি ইস্তানবুল বাসাকসেহিরের জার্সিতে হ্যাটট্রিক করেন, তবুও লাইপসিগের কাছে ৪-৩ গোলে হারে তার দল। পরের বছর কপাল পোড়ে ক্রিস্তোফার এনকুঙ্কুর। ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ক্লাব ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক পেলেও লাইপসিগ ম্যাচটি হারে ৬-৩ ব্যবধানে। এ মৌসুমে সেইসব অভাগাদের দলে নাম লেখালেন পাভলিদিস।
ম্যাচ হারলেও গতরাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাসের তৃতীয় দ্রুততম হ্যাটট্রিক (৩০ মিনিট) করেছেন এই গ্রিক ফরোয়ার্ড। এই তালিকায়ও শীর্ষে রয়েছেন লেভানডোভস্কি। ২০২২ সালে রেডবুল জালৎসবুর্গের বিপক্ষে ৭-১ গোলে বায়ার্নের জয়ের ম্যাচে মাত্র ২৩ মিনিটে হ্যাটট্রিক করেন এই স্ট্রাইকার। এছাড়া ১৯৯৬ সালে এসি মিলানের হয়ে ২৪ মিনিটে নরওয়ের ক্লাব রোজেনবর্গের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন ইতালিয়ান স্ট্রাইকার মার্কো সিমোনে।
আরও পড়ুন: ধ্রুপদী ফুটবলের রাতে গৌরবময় সময়ে ফেরার ইঙ্গিত বার্সেলোনার
চার গোল হজম করেও ইউরোপের এই এলিট লিগের ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় দল হিসেবে গতরাতে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়েছে বার্সেলোনা। এর আগে ২০০৪ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে টটেনহ্যামকে একই স্কোরলাইনে হারিয়ে রেকর্ড গড়ে আর্সেনাল।
তবে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এই প্রথম কোনো ম্যাচ জিতল বার্সেলোনা।
এছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ম্যাচ জয়ের ক্ষেত্রে (অন্তত ১০ ম্যাচ) এখন সবার উপরে হান্সি ফ্লিক। বায়ার্ন মিউনিখ ও বার্সেলোনা মিলিয়ে ২৪ ম্যাচ খেলেছে তার দল, যার ২১টিই জিতেছেন তিনি; এছাড়া ড্র করেছেন একটি ও হেরেছেন মাত্র দুটি ম্যাচ। সব মিলিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এখন পর্যন্ত ৮৮ শতাংশ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড এই জার্মান কোচের।
৫৮ দিন আগে
বার্সেলোনা ছাড়ার কারণ ও ক্যারিয়ারের গল্প বললেন নেইমার
২০১৭ সালের ২ আগস্ট, বার্সেলোনাভক্তদের হৃদয়ে আজও দিনটি অমলিন হয়ে আছে। সেদিন লিওনেল মেসির উত্তসূরি হিসেবে যাকে ভাবা হচ্ছিল, সেই নেইমারই ক্লাব ছাড়ার ঘোষণা দেন। তারপর থেকে গুঞ্জন ছিল বিশ্বসেরা ফুটবলার হতেই মেসির ছায়া থেকে বের হতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে এত বছর পর সেইসব গুঞ্জনে জল ঢেলেছেন এই ব্রাজিলীয় তারকা।
সম্প্রতি ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার রোমারিওর একটি পডকাস্টে বার্সেলোনা ও পিএসজিতে থাকাকালে নিজের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন নেইমার। ওই আলাপচারিতায় উঠে আসে তার বার্সেলোনা ছেড়ে পিএসজিতে যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গটি।
২০১৭ সালে ঠিক কী হয়েছিল, মেসি তোমার (পিএসজিতে) চলে যাওয়ার বিষয়টি কীভাবে নিয়েছিল?— রোমারিওর এমন প্রশ্নের উত্তরে ব্রাজিলিয়ান প্রিন্স বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, বিশ্বসেরা ফুটবলার হওয়ার ইচ্ছায় আমি বার্সেলোনা ছাড়িনি।’
‘বার্সায় আমার শেষ সপ্তাহে মেসি নিজেই আমাকে ডেকে বলেছিল— কেন চলে যাচ্ছ? কারণটি যদি এমন হয় যে, তুমি বিশ্বের সেরা ফুটবলার হবে, তাহলে আমিই তোমাকে বিশ্বসেরা বানাব।’
‘আমি মেসিকে বলেছিলাম যে, বিষয়টি তা নয়। এটি ব্যক্তিগত এবং তোমাকে নিয়ে আমার মধ্যে এমন কোনোকিছু নেই।’
পিএসজির বিরাট অঙ্কের আর্থিক প্রস্তাব যে অনেকটাই প্রভাবিত করেছিল, তা স্বীকার করে নেইমার বলেন, ‘ওদের প্রস্তাবটি বার্সেলোনায় আমি যা উপার্জন করতাম, তার চেয়ে অনেক বড় ছিল।’
‘তাছাড়া নতুন দলে (পিএসজিতে) বেশ কয়েকজন ব্রাজিলীয় ফুটবলার ছিল। সেখানে আগে থেকেই থিয়াগো সিলভা ছিল। দানি আলভেস মাত্রই যোগ দিয়েছে তখন, আর মার্কিনিয়োস ও লুকাস (মৌরা) আমার বন্ধু। আমি ওদের সঙ্গে খেলতে চেয়েছিলাম।’
‘নিজেকে বলেছিলাম, আমার চারপাশে কিছু ব্রাজিলীয় (ফুটবলার) চাই। বার্সায় এখন আর কোনো ব্রাজিলীয় নেই।’
নেইমারের কথায়, ‘মেসিকে আমি আরও বলেছিলাম— আমি যাচ্ছি, একটা চান্স নিয়েই দেখি। তবে বিশ্বসেরা হতে আমি তাকে (মেসি) ছেড়েছি, কথাটা ঠিক নয়।’
৬৩ দিন আগে
বিলবাওকে হারিয়ে সুপার কাপের ফাইনালে বার্সেলোনা
হান্সি ফ্লিকের অধীনে দুর্দান্তভাবে মৌসুম শুরু করলেও বছরের শেষদিকে এসে খেই হারিয়েছিল বার্সেলোনা। তবে পুরনো ক্লেশ ঝেড়ে ফেলে নতুন বছরে ফের জয়যাত্রা শুরু করেছে দলটি।
শনিবার কোপা দেল রের ম্যাচে চতুর্থ স্তরের দল বারবাস্ত্রোকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে বছর শুরু করা বার্সেলোনার সামনে দ্বিতীয় ম্যাচেই ছিল শক্ত প্রতিপক্ষ— আথলেতিক বিলবাও। তবে সেই পরীক্ষাতেও সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে নতুন বছরে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছে নানা সমস্যায় জর্জরিত কাতালানরা।
বুধবার রাতে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত স্প্যানিশ সুপার কাপের প্রথম সেমিফাইনালে বিলবাওকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা।
ম্যাচের ১৭তম মিনিটে গোল করে বার্সেলোনাকে এগিয়ে নেন গাভি। অসংখ্য সুযোগ হাতছাড়া করার মাঝে ৫২তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি করেন লামিন ইয়ামাল। সুযোগ পেয়েছিলেন বিলবাওয়ের খেলোয়াড়রাও তবে বার্সার অফসাইডের ফাঁদ আর নিজেদের ভুলের খেসারত দিতে হয়েছে দলটির।
আরও পড়ুন: হেরে ১২৬তম বছর শুরু বার্সেলোনার
এদিন ম্যাচের প্রথম থেকেই বিলবাওয়ের ওপর ছড়ি ঘোরাতে থাকে বার্সেলোনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে চতুর্থ মিনিটেই পাল্টা আক্রমণে উঠে পরপর দুটি সুযোগ তৈরি করেন জুল কুন্দে-রাফিনিয়ারা। তবে ফিনিশিংয়ের অভাবে দুটিই মাঠে মারা যায়।
ম্যাচের প্রথম দশ মিনিট ৭০ শতাংশ সময় বলের নিয়ন্ত্রণ রেখে মাঠে একক আধিপত্য বিস্তার করে বার্সেলোনা। তবে এর পর খানিকটা ঝিমিয়ে যায় তারা। এ সময় সুযোগ কাজে লাগানোর পরিবর্তে ধীর লয়ে খেলতে থাকে বিলবাও-ও। ফলে ম্যাচের গতি বেশ পড়ে যায়। অবশ্য এর মধ্যেই ম্যাচর সপ্তদশ মিনিটে চকিতে আক্রমণে উঠে গোল আদায় করে নেয় হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
পেদ্রির লং পাস ধরে বাঁ পাশ দিয়ে এগিয়ে গিয়ে বিলবাওয়ের ডিফেন্স চিরে ছয় গজ বক্সের মধ্যে নিচু ক্রস দেন আলেহান্দ্রো বালদে। আর দুই ডিফেন্ডারের চ্যালেঞ্জ সামলে তা থেকে গোল আদায় করে দলকে এগিয়ে নেন গাভি।
গোল পাওয়ার পর ফের উজ্জীবীত ফুটবলে ফেরে বার্সেলোনা। আরও পিছিয়ে পড়া ঠেকাতে মনোযোগী হয় এরনেস্তো ভালভের্দের শিষ্যরাও। ফলে আবারও জমে ওঠে ম্যাচ।
ম্যাচের ২৩তম মিনিটে বিলবাও গোলরক্ষক উনাই সিমোনকে একা পেয়েও ফিনিশিংয়ের অভাবে নিশ্চিত গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন রাফিনিয়া। তবে রাফিনিয়ার শট সিমোন ঠেকিয়ে দিলে তা চলে যায় পেছনে থাকা লামিনের কাছে। তিনি দুর্বল শট নিলে সেটিও প্রতিহত করে দলকে বিপদমুক্ত করেন সিমোন।
প্রথমার্ধের শেষের মিনিট দশেক সমতায় ফিরতে জোর চেষ্টা চালায় বিলবাও। একের পর এক আক্রমণেও ওঠে তারা। তবে ফিনিশিংয়ের ব্যর্থতা আর বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তাদের আর গোলের মুখ দেখা হয়ে ওঠেনি। ফলে ব্যবধানে ধরে রেখেই বিরতিতে যায় কাতালানরা।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয়ার্ধের চরম নাটকীয়তা শেষে ডর্টমুন্ড বধ বার্সেলোনার
প্রথমার্ধে ৫৩ শতাংশ সময় বলের দখল রেখে ৬টি শট নেয় বার্সেলোনা, যার চারটিই লক্ষ্যে রাখতে সক্ষম হয় তারা। অপরদিকে, বিলবাও পাঁচটি শট নিলেও তার মাত্র একটি লক্ষ্যে ছিল।
৭২ দিন আগে
লেভানডোভস্কির হ্যাটট্রিকে দারুণ জয় বার্সেলোনার
হান্সি ফ্লিকের তত্ত্বাবধায়নে উড়তে থাকা বার্সোনার প্রতাপ দেখল এবার আলাভেস। রবের্ট লেভানডোভস্কির হ্যাটট্রিকে ক্লাবটিকে উড়ে দিয়েছে বার্সা।
লা লিগায় রবিবার আলাভেসকে তাদের মাঠেই ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছে বার্সেলোনা। দলের হয়ে প্রথম ৩২ মিনিটের মধ্যে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন লেভানডোভস্কি।
এর ফলে চলতি মৌসুমে লিগে ৯ ম্যাচে ১০ গোল ও ২ অ্যাসিস্টসহ মোট ১২ গোলে অবদান রাখলেন তিনি। এছাড়া পিচিচির দৌড়ে নিজেকে আরও উপরে তুললেন ৩৬ বছর বয়সী এই পোলিশ স্ট্রাইকার।
দুই অর্ধে অবশ্য দুটি গোল পেয়েছিল আলাভেস, তবে অফসাইডের কারণে দুবারই হতাশ হতে হয় তাদের। অবশ্য বার্সেলোনার একটি গোলও অফসাউডে কাটা পড়ে।
এদিন বল দখলের লড়াইয়ে পরিষ্কার এগিয়ে ছিল বার্সেলোনা। ৭২ শতাংশ সময় নিজেদের দখলে বল রেখে মোট ১৫টি শট নেয় তারা যার ৯টিই ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে, প্রথমার্ধে একবারও লক্ষ্যে রাখতে না পারা আলাভেসের ১১টি শটের মধ্যে লক্ষ্যে ছিল মাত্র দুটি।
আরও পড়ুন: বার্সেলোনাকে খুশি করে সমতায় শেষ মাদ্রিদ ডার্বি
প্রতিপক্ষের মাঠে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণে উঠতে থাকে বার্সেলোনা। এরই ধারাবাহিকতায় রাফিনিয়ার গোলে চতুর্থ মিনিটেই এগিয়ে যায় কাতালানরা। তবে মাঝমাঠ থেকে লং পাস ধরে রাফিনিয়াকে বাড়ানোর আগে অফসাইডে ছিলেন লামিন ইয়ামাল। ফলে গোলটি বাতিল হয়ে যায়।
তবে এর দুই মিনিট পর পায়ের পেশিতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বার্সা উইঙ্গার ফেররান তোরসকে। তার বদলি হিসেবে এরিক গার্সিয়াকে মাঠে নামান হান্সি ফ্লিক।
এরপর সপ্তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় বার্সা। ডান পাশে প্রতিপক্ষের বক্সের অনেকটা বাইরে ফ্রি কিক আদায় করেন লামিন, তা থেকে গোলমুখে দারুণ একটি ক্রস দেন রাফিনিয়া। এরপর লাফিয়ে উঠে চমৎকার হেডারে ঠিকানা খুঁজে নেন রবের্ট লেভানডোভস্কি।
ম্যাচের ২২তম মিনিটে দ্বিতীয় গোল করে ব্যবধান বাড়ান লেভানডোভস্কি। বাঁ পাশ দিয়ে বক্সে ঢুকেই পেনাল্টি স্পটের সামনে থ্রু বল বাড়ান রাফিনিয়া, এরপর এগিয়ে গিয়ে গোলরক্ষককে বোকা বানান লেভানডোভস্কি।
দুই মিনিট পর ব্যবধান আরও বাড়াতে পারতেন রাফিনিয়া। তবে বাঁ পাশ থেকে কাছের পোস্টে তিনি নিচু শট নিলে গোলরক্ষক তা ঠেকিয়ে দেন।
৩২তম মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন লেভানডোভস্কি। লেভাকে বক্সে ঢুকতে দেখে রক্ষণচেরা অসাধারণ একটি পাস দেন এরিক গার্সিয়া, তা ধরে কিছুটা ডান দিকে সরে গিয়ে পড়ে যাওয়ার মুখে দূরের পোস্টের দিকে আচমকা বল ঠেলে দেন লেভানডোভস্কি। গোলরক্ষক বিষয়টি একেবারেই আঁচ করতে না পেরে কাছের পোস্টের দিকে এগিয়ে এসেছিলেন। ফলে শটে গতি না থাকলেও বলের গড়িয়ে গড়িয়ে জালে জড়িয়ে যাওয়া দেখতে হয় তাকে।
এর ফলে প্রথম গোল করার ২৫ মিনিটের মধ্যে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ৩৬ বছর বয়সী এই পোলিশ।
৩৯তম মিনিটে ড্রিবল করে এগিয়ে গিয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে শট নেন পেদ্রি, তবে সহজেই তা লুফে নেন আলাভেস গোলরক্ষক আন্তনিও সিভেরা।
দুই মিনিট পর চতুর্থ গোল পেতে পারতেন লেভানডোভস্কি, তবে সতীর্থের বাড়ানো পাসে গতি বেশি থাকায় এগিয়ে এসে বলের নিয়ন্ত্রণ নেন সিভেরা।
প্রথমার্ধের এক মিনিট বাকি থাকতে আক্রমণে ওঠে আলাভেস। এরপর দুই কর্নারের পর ৪৫তম মিনিটে একটি গোল পেয়ে যায় স্বাগতিকরা, কিন্তু অফসাইডে গোলটি বাতিল হয়ে যায়। ফলে হতাশ হয়ে ৩-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আলাভেস।
১৬৬ দিন আগে
বড় জয়ে অপরাজেয় যাত্রা অব্যাহত বার্সেলোনার
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর লিগ ম্যাচে ফের জ্বলে উঠল বার্সেলোনা। হারের হতাশা ভুলে ভিয়ারিয়ালের মাঠ থেকে বড় জয় নিয়ে ফিরল হান্সি ফ্লিকের দল।
এস্তাদিও দে লা সিরামিকায় স্থানীয় সময় রবিবার রাতে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে ৫-১ ব্যবধানে জিতেছে বার্সেলোনা।
প্রথমার্ধে রবের্ট লেভানডোভস্কি জোড়া গোল করে দলকে এগিয়ে নিলে বিরতির পরই ব্যবধান বাড়ান চলতি মৌসুমে প্রথমবার শুরুর একাদশে জায়গা পাওয়া বার্সেলোনা মিডফিল্ডার পাবলো তোরে। এরপর আরও দুই গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন পুরো ম্যাচজুড়ে আলো ছড়ানো রাফিনিয়া। অন্যদিকে, প্রথমার্থে ভিয়ারিয়ালের একমাত্র গোলটি করেন আয়োসে পেরেস।
অবশ্য হ্যাটট্রিক করতে পারতেন লেভানডোভস্কি, তবে পেনাল্টি মিস করায় সে গৌরব থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এই পোলিশ তারকা। দুই গোলে লা লিগায় ৬ ম্যাচে ৬ গোল ও দুটি অ্যাসিস্ট হলো তার। এছাড়া পাঁচ গোল করে লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠেছেন রাফিনিয়া।
আরও পড়ুন: শুরুতেই লাল কার্ড, হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শুরু বার্সেলোনার
এই দুজনের পাশাপাশি লামিন ইয়ামালের কথা উল্লেখ না করলেই নয়; চলতি মৌসুমে সব মিলিয়ে ৭ ম্যাচ খেলে প্রতি ম্যাচে অন্তত একটি গোলে অবদান রেখেছেন ১৭ বছরে পা দেওয়া এই স্প্যানিশ তরুণ। গোল-অ্যাসিস্ট মিলিয়ে (লেভানডোভস্কির সমান আটটি) সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছেন তিনি। লিগে এখন পর্যন্ত তিন গোলের পাশাপাশি পাঁচটি অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি।
স্কোরলাইন দেখে ম্যাচটি একপেশে মনে হলেও পুরো ম্যাচজুড়ে এক মুহূর্তের জন্যেও বার্সেলোনাকে ছেড়ে কথা বলেনি ভিয়ারিয়াল। বার্সা একবার আক্রমণে উঠলে পরমুহূর্তে আক্রমণে উঠেছে মার্সেলিনোর শিষ্যরা। তবে অফসাইড আর ভাগ্যের ফেরে বল পোস্টে লাগায় বেশ কয়েকটি গোলবঞ্চিত হয়েছে তারা।
ম্যাচজুড়ে বার্সেলোনার ১৬টি শটের বিপরীতে ১৪টি শট নেয় ভিয়ারিয়াল। তবে শট লক্ষ্যে রাখার ক্ষেত্রে ভিয়ারিয়ালকে পেছনে ফেলেছে বার্সেলোনা; তাদের ১০ শট লক্ষ্যে থাকলেও মাত্র চারটি শট গোলমুখে রাখতে পারে ভিয়ারিয়াল।
শুক্রবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে বড় ভুলের পর ম্যাচ হারায় টের স্টেগেনকে অনেকে কাঠগড়ায় তুললেও এ ম্যাচের শুরু থেকেই চমক দেখাতে থাকেন এই গোলরক্ষক। তবে প্রথমার্ধের খেলা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে দলকে নিশ্চিত গোল খাওয়া থেকে বাঁচাতে গিয়ে চোট পান তিনি। মাঠে প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে সুস্থ না হওয়ায় পরে স্ট্রেচারে শুয়ে তাকে মাঠ ছাড়তে হয়।
১৮০ দিন আগে
রাফিনিয়ার হ্যাটট্রিক, ৭-০ ব্যবধানে জিতল বার্সেলোনা
হান্সি ফ্লিকের ছোঁয়ায় নতুন দিনের স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে বার্সেলোনা সমর্থকরা। আর্থিক সংকটের কারণে চাহিদামতো খেলোয়াড় কিনতে না পারা এবং চোটজর্জর দল নিয়েও লিগের প্রথম চার ম্যাচে জয় পেয়েছে ক্লাবটি। তবে চতুর্থ ম্যাচে বিরাট জয়ে ভক্তেদের প্রত্যাশা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে তার দল।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বার্সেলোনার অলিম্পিক স্টেডিয়ামে রিয়াল ভায়াদোলিদের বিপক্ষে ৭-০ গোলের বিশাল জয় পেয়েছে কাতালুনিয়ার ক্লাবটি।
এই ম্যাচে ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক করেছেন বার্সার ব্রাজিল ফরোয়ার্ড রাফিনিয়া। এছাড়া শুরুতেই পিচিচির দৌড়ে থাকা রবের্ট লেভানডোভস্কি, দানি অলমো, ফেররান তোরেস ও জুল কুন্দে পেয়েছেন একটি করে গোলের দেখা। তবে গোল না পেলেও এদিন দুটি অ্যাসিস্ট করে নিজের প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন লামিন ইয়ামাল।
আরও পড়ুন: বার্সার দায়িত্ব নিয়ে শিরোপা জিততে বদ্ধপরিকর ফ্লিক
এদিন ম্যাচের ২০তম মিনিটে রাফিনিয়ার গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ৩-০ ব্যবধান গড়ে বিরতিতে যায় বার্সেলোনা। বিরতির পর তারা প্রতিপক্ষের জালে আরও চারবার বল পাঠায়।
ম্যাচের দশম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত বার্সেলোনা, কিন্তু অফসাইডের কারণে দানি অলমোর গোলটি বাতিল হয়ে যায়।
বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া রাফিনিয়ার বুলেট শট প্রতিহত করলেও তা ধরে রাখতে ব্যর্থ হন ভায়াদোলিদ গোলরক্ষক কার্ল হাইন। বল তার কাছ থেকে সামনে চলে আসলে এগিয়ে গিয়ে তা জালে জড়িয়ে দেন অলমো, কিন্তু ভিএআর রিভিউতে রেফারির অফসাইডের সিন্ধান্ত বহাল থাকলে হতাশ হয় বার্সার সমর্থকরা।
চতুর্দশ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে রবের্ট লেভানডোভস্কির শট ঠেকিয়ে দেন হাইন। ষোড়শ মিনিটে তার আরও একটি হেডার পোস্টের বাইরে বেরিয়ে যায়। তবে ২০তম মিনিটে রাফিনিয়ার চমৎকার এক গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা।
মাঝ মাঠ থেকে রাফিনিয়ার দৌড় দেখেই শূন্যে ভাসিয়ে লং পাস দেন পাউ কুবারসি। এরপর প্রতিপেক্ষের বক্সের বেশ বাইরে থেকে বুক দিয়ে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কোনাকুনি এগিয়ে গিয়ে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ২৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।
২০২ দিন আগে