ওসমান হাদি
হাদির হামলাকারীদের ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে সরকার।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িত আসামিদের ধরিয়ে দিতে পারলে তার জন্য সরকার ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে। আপনারা সবাই ওসমান হাদির জন্য দোয়া করবেন, উনি ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে আছে। আমাদের সবার দোয়ায়, আল্লাহ দিলে উনি আবার ফিরে আসতে পারবেন।
তিনি বলেন, ওসমান হাদির ওপর আক্রমণের ঘটনা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস বলে আমরা মনে করি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার যে কোনো ধরনের অপচেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই অভ্যুত্থানে সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখ সারির যোদ্ধা ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। এ বিষয়টিকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। অনতিবিলম্বে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, অতি দ্রুত দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারব।
৪ ঘণ্টা আগে
হাদিকে গুলি: সহিংসতা ঠেকাতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চায় বিএনপি
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনার মতো সহিংসতার পুনরাবৃত্তি ঠেকানো এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তড়িৎ ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘ওসমান হাদির ওপর হামলা, প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের ওপর হামলা। এটা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা বলে আমরা মনে করি না। নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে ১০ তারিখ, তার পরের দিনই বাংলাদেশে একজন সম্ভাব্য জাতীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর ওপরে প্রাণবিনাশী হামলা হলো। হামলার ধরন দেখে বোঝা যায়, এটা পেশাদার খুনির কাজ।’
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের আলোচনা হলো, আমরা ফ্যাসিবাদরিবোধী জাতীয় ঐক্য অটুট রাখব। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক বিতর্ক হতে পারে। সামনে নির্বাচন, বিভিন্ন রাজনৈতিক বিতর্ক হবে। কিন্তু ঐক্য বিনষ্ট হয়—আমরা ঐ পর্যায়ে বিতর্ক করব না।’
‘আমাদের চেতনা হচ্ছে জুলাই, ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের চেতনা। এটাকে আমরা ঊর্ধ্বে তুলে ধরব। আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য দিয়ে একে (ফ্যাসিবাদ) প্রতিহত করব। এই জায়াগাতে আমাদের কোনো আপোস নেই।’
তিনি বলেন, ‘যারা বাংলাদেশে নির্বাচন চায় না এবং নির্বাচনকে যারা গণতন্ত্রে উত্তোরণের পথ হিসেবে দেখতে চায় না… প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধের শক্তি, তাদেরই কাজ এটা (হামলা)। তারা বাংলাদেশে আছে, দেশের বাইরেও আছে।’
‘প্রতিটি ফ্যাসিবাদকে আমরা এই বার্তা দিতে চাই, এ জাতীয় কোনো ধরনের হামলা করে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তোরণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। আমরা সকল ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐক্যে অটুট থাকব এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনকে আমরা যেকোনো মূল্যে অর্থবহ ও বিশ্বাসযোগ্য করব। এমন একটি বিশ্বাসযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে, যা সারা বিশ্বে স্বীকৃত হবে। সে জন্যে আমরা কাজ করছি।’
এ সময় হাদির ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে আয়োজিত জাতীয় প্রতিরোধ সভায় ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বানে বিএনপি সাড়া দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমাদের ভেতরে যেন এমন একটি ঐক্য থাকে, যাতে করে আমরা সকল রাজনৈতিক দল ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যকে সবাই মিলে আমরা আঁকড়ে ধরি। তাহলে জাতীয়ভাবে আমরা এই সন্ত্রাসকে মোকাবিলা করতে পারব।… আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আহ্বান জানিয়েছি।’
এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদুল্লাহর ওপরে প্রাণবিনাশী হামলা হয়েছে। কিন্তু তারপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ওই ঘটনার যথাযথ তদন্ত করে যদি সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা যেত, তাহলে হয়তো এমন ঘটনা আর ঘটাতে উৎসাহিত হতো না। যারা এগুলো করছে, তারা যখন মনে করছে, তারা নিরাপদ থাকতে পারে, তখন এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটে।’
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এ জন্য আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আরও বেশি সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যেন প্রধান উপদেষ্টা নেন। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি—আমরা এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।’
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পল্টনের বিজয়নগর এলাকায় মোটরসাইকেলে এসে দুই দুর্বৃত্ত শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সেখানেই চলছে তার চিকিৎসা।
হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিদের ধরতে এরই মধ্যে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, র্যাপিড অ্যানকশন ব্যাটালিয়নসহ (র্যাব) যৌথবাহিনী।
৫ ঘণ্টা আগে
হাদির পরিবারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ, সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিতের আশ্বাস
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় ওসমান হাদির ভাই আবু বকর সিদ্দীক, বোন মাসুমা এবং ইনকিলাব মঞ্চের তিন নেতা—আব্দুল্লাহ আল জাবের, ফাতিমা তাসনিম জুমা ও মো. বোরহান উদ্দিন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
এ সময় ওসমান হাদির সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সারা দেশ তার জন্য দোয়া করছে। তার সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিতে সবাই চেষ্টা করছে। শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় যদি তাকে দেশের বাইরে পাঠাতে হয়, সেক্ষেত্রে যেখানে পাঠানোর প্রয়োজন হবে, সরকার সেখানেই তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে।’
ওসমান হাদির বোন বলেন, ‘সে ছোটবেলা থেকেই দেশকে মনেপ্রাণে ভালোবাসে। ছোটবেলা থেকেই সে বিপ্লবী। বিদ্রোহী কবিতা তার প্রিয়, সে বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি করতে ভালোবাসে। তার একটি ১০ মাসের সন্তান আছে। হাদি আমাদের মেরুদণ্ড।’
তিনি বলেন, ‘ওর অনেক কাজ, ওকে বেঁচে থাকতে হবে। আপনারা বিপ্লবী সরকার, যে করেই হোক জুলাই বিপ্লবীদের বাঁচিয়ে রাখবে হবে। তা না হলে এদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব হুমকিতে পড়বে।’
৬ ঘণ্টা আগে