বৈদেশিক-সম্পর্ক
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউট পরিদর্শন করেছেন ভুটানের রাজা
বাংলাদেশে সফররত ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউট পরিদর্শন করেছেন।
মঙ্গলবার সকালে ভুটানের রাজাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের সেবা কার্যক্রম ঘুরিয়ে দেখান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
পরিদর্শন শেষে ভুটানের রাজা স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবার ভূয়সী প্রশংসা করেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক।
বাংলাদেশে একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করার ব্যাপারে আগ্রহও প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও ভুটানের রাজার শ্রদ্ধা
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ শেষে ভুটান সরকার প্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করায় ভুটান রাজার প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
ভুটানের চিকিৎসকদের বাংলাদেশে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে রাজার কাছে প্রস্তাব দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ভুটানের রাজাও এ ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
পরিদর্শনকালে রাজার সঙ্গে বাংলাদেশে ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনসিলসহ ভুটানের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ভুটানের রাজার সফর বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের সাক্ষ্য: যৌথ বিবৃতি
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউট পরিদর্শনে আসেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ এবং তার নেতৃত্বে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি প্রতিনিধি দল। পরিদর্শনের আগে সায়মা ওয়াজেদের নেতৃত্বে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি দলটি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ক্রমবর্ধমান উন্নয়নশীল ও জনবসতিপুর্ণ একটি দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক মিস সায়মা ওয়াজেদ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউট পরিদর্শন করায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ ও অন্যান্য প্রতিনিধিদের বিশেষ ধন্যবাদ জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
আলাপকালে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন, বার্ন ইন্সটিটিউট সেবা ঢাকার বাইরে বৃদ্ধিকরণ এবং বাংলাদেশের এই বার্ন চিকিৎসার ধরন ভুটানসহ অন্যান্য সহযোগী দেশে কীভাবে ছড়িয়ে দেওয়া যায় সে ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ও প্রতিনিধি হিসেবে সায়মা ওয়াজেদ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়া বাংলাদেশে ভ্যাক্সিন প্লান্ট নির্মাণ কাজে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সার্বিক সহায়তার কথাও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেলেন সায়মা ওয়াজেদ
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) হাইকমিশনে দিবসটি উপলক্ষ্যে নানা আয়োজন করা হয়। আয়োজনের প্রথম পর্বে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান সকালে প্রবাসী বাংলাদেশি এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
এরপর, তিনি উপস্থিত সবাইকে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
হাইকমিশনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কর্মসূচিসহ অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও ভুটানের রাজার শ্রদ্ধা
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ, প্রামাণ্যচিত্রের প্রদর্শনী, আলোচনা সভা ও বিশেষ মোনাজাত।
অনুষ্ঠানের মূল আলোচনা পর্বে, হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান তার বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং ঐতিহাসিক এই দিনটির প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সারাজীবন তার স্বপ্নের সোনার বাংলার জন্য সংগ্রাম করেছেন। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্ব ও অসাধারণ ব্যক্তিত্ব সমগ্র বাঙালি জাতিকে এক সুতায় সংযুক্ত করে ৯ মাসে বাংলাদেশের দীর্ঘ লালিত স্বাধীনতা অর্জনে সহায়তা করেছে।’
হাইকমিশনার বলেন, বঙ্গবন্ধুর 'সোনার বাংলা' নির্মাণের স্বপ্নকে অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি সমৃদ্ধ ও জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বদ্ধপরিকর।
গৌরবময় স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের এই আনন্দঘন অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ঐক্যের আহ্বান জানান এবং মিশনের কাঙ্খিত সেবা সম্প্রসারণে আন্তরিক সহযোগিতা ও পরামর্শ কামনা করেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের 'সোনার বাংলা' এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার 'উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ' গড়তে প্রবাসীদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ায় বসবাস করা বাংলাদেশ কমিউনিটি, রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক ও হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের বীরদের সাহসিকতার প্রতি সজীব ওয়াজেদের সম্মান
স্বাধীনতা দিবসে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে ইউএই নেতাদের অভিনন্দন
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) নেতারা।
দেশটির দৃষ্টিনন্দন ও বিশেষ ভবনগুলোতে বাংলাদেশের পতাকা প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ঢাকায় সংযুক্ত আরব আমিরাত দূতাবাস।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী এবং দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন।
এছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট, উপপ্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্সিয়াল কোর্টের মন্ত্রী মনসুর বিন জায়েদ আল নাহিয়ান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পৃথক শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন।
বার্তায় তারা বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সুস্বাস্থ্য কামনা করেন এবং বন্ধুপ্রতীম দেশ ও জনগণের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি, সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনা করেন।
বাংলাদেশ-চীনের রয়েছে গভীর রাজনৈতিক আস্থা ও সহযোগিতা: শি জিনপিং
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, বাংলাদেশ ও চীনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘দৃঢ় ও গভীর’ রাজনৈতিক আস্থা এবং ‘ফলপ্রসূ কার্যকর সহযোগিতা’ রয়েছে। যা দুই দেশের জন্য বাস্তব কল্যাণ বয়ে আনবে।
তিনি আরও বলেন, গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশ তার স্বাধীনতা দৃঢ়ভাবে সমুন্নত, অর্থনীতির উন্নয়ন ও জনগণের জীবনযাত্রার উন্নয়নে প্রচেষ্টা চালিয়েছে এবং 'সোনার বাংলা'র স্বপ্ন বাস্তবায়নের দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করে উল্লেখযোগ্য অর্জন করেছে।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে অভিনন্দন জানিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও ভুটানের রাজার শ্রদ্ধা
চিঠিতে শি জিনপিং উল্লেখ করেন, চীন ও বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী এবং দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব দৃঢ় থেকে দৃঢ় হয়েছে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, তিনি চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্ব দেন এবং উচ্চমানের বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতা আরও এগিয়ে নিতে ও চীন-বাংলাদেশ কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছেন।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে ইউএই নেতাদের অভিনন্দন
একই দিনে চীনের স্টেট কাউন্সিলের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং এবং সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে অভিনন্দন বার্তা পাঠান।
আরও পড়ুন: চলমান অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বাংলাদেশের অংশীদার হতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত: ব্লিঙ্কেন
অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বাংলাদেশের অংশীদার হতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত: ব্লিঙ্কেন
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ব্লিঙ্কেন এই বিশেষ দিনে সকল বাংলাদেশিকে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানান।
এক বিবৃতিতে ব্লিঙ্কেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আগামী দিনগুলোতে দুই দেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব ও জনগণ থেকে জনগণের সম্পর্ক জোরদারের প্রত্যাশায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয় যুক্তরাষ্ট্র: মুখপাত্র
তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, অর্থনৈতিক উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়া, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটে সাড়া দেওয়া, বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সহায়তা ও বৈশ্বিক স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাসহ চলমান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদার হতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত।’
ব্লিঙ্কেন বলেন, অবাধ, উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিশ্চিত করতে এই অংশীদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীনতার আরও এক বছর উদযাপন করছে, তাই আমরা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা জোরদার ও মানবাধিকার রক্ষায় আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি। এই প্রচেষ্টাগুলোই বাংলাদেশের সমৃদ্ধি আরও বাড়াবে।’
আরও পড়ুন: ঢাকায় পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ, স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও ইউএসএআইডির প্রতিনিধি দল
ধানমন্ডি ৩২-এ বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভুটানের রাজার শ্রদ্ধা
ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক।
এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি।
এছাড়াও জাদুঘরের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেন রাজা ও রানি জেটসুন পেমা। তাদের সঙ্গে ছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ।
রাজা সেখানে দর্শনার্থী বইয়েও স্বাক্ষর করেন।
সামাজিক মাধ্যমে নিজ অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে সায়মা বলেন, ‘আমি ও আমার খালা ভুটানের রাজা ও রানিকে ধানমন্ডিতে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর) আমাদের পারিবারিক বাড়ি দেখিয়েছি।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘এই বাড়ি আমার মা ও খালার জীবনে অনেক সুখের জায়গা ছিল। এটি অবশ্যই আমাদের সবচেয়ে বড় বেদনার স্থান।’
সায়মা আরও লিখেছেন, ’রাজা-রানিকে সেই চার দেয়ালের মধ্যে থাকা সমস্ত ভালোবাসার সম্পর্কে জানাতে পারা ও দেখাতে পারাটা একটি সৌভাগ্যের বিষয় ছিল।’
রিয়াদে গণহত্যা দিবস পালিত
সোমবার (২৫ মার্চ) সৌদি আরবের রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযথ মর্যাদায় জাতীয় গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
এছাড়া অনুষ্ঠানের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধে নিহত সব শহীদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আরও পড়ুন: আজ গণহত্যা দিবস
দূতাবাসের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন, যা তৎকালীন ইপিআর ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাংলার মানুষ।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ১৯৭১ সালে সংঘটিত ভয়াবহ গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি জরুরি। আর এ স্বীকৃতি আদায়ে সরকারের পাশাপাশি বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি কমিউনিটি, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
দূতাবাসের কাউন্সেলর মো. বেলাল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মিশন উপ প্রধান মো. আবুল হাসান মৃধা, ডিফেন্স অ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফারুক বক্তব্য দেন।
এ ছাড়া বক্তব্য দেন রিয়াদে বাংলাদেশি কমিউনিটির বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, ব্যবসায়ী এম আর মাহাবুব।
আরও পড়ুন: ২৫ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে প্রেস ক্লাবে আলোচনা সভা
বক্তারা সবাই ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে সংঘটিত ভয়াল গণহত্যার বিচার ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি করেন।
অনুষ্ঠানে জহির রায়হানের স্টপ জেনোসাইড চলচ্চিত্রটি প্রদর্শন করা হয়।
ভুটানের রাজার সফর বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের সাক্ষ্য: যৌথ বিবৃতি
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
তিনি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। এ সময় পুষ্পস্তবক অর্পণ, পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর এবং একটি গাছের চারা রোপণ করবেন।
ভুটানের রানী জেটসুন পেমা ওয়াংচুকও রাজার সঙ্গে থাকবেন।
ভুটানের রাজা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের আমন্ত্রণে ২৫ থেকে ২৮ মার্চ বাংলাদেশ সফর করছেন।
সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ভুটানের রাজার বাংলাদেশ সফর দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বড় সাক্ষ্য।
এতে বলা হয়, রাজা ও রানীর বাংলাদেশ সফর দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব, সহযোগিতা ও সুসম্পর্কের ঐতিহাসিক বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করেছে।
রাজা ও রানী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। রাষ্ট্রপতি রাজার সম্মানে মঙ্গলবার একটি ভোজের আয়োজন করবেন।
সোমবার রাজা ও রানী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সফরকালে থিম্পুতে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপনে সহযোগিতা এবং স্বাস্থ্য সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওএমএস) স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে ভুটানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতার জন্য, বাংলাদেশের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং ভুটানের প্রতিযোগিতা ও ভোক্তাবিষয়ক কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই
এছাড়াও বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে সাংস্কৃতিক সহযোগিতামূলক চুক্তি নবায়ন করা হয়েছে।
বাংলাদেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে এমবিবিএস কোর্সে ভুটানের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক ভর্তির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় উভয় পক্ষই সন্তোষ প্রকাশ করেন।
সহযোগিতার বিদ্যমান গতি আরও সুসংহত করার জন্য, ভুটানের শিক্ষার্থীদের জন্য বার্ষিক এমবিবিএস আসন সংখ্যা ২২ থেকে বাড়িয়ে ৩০ করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ।
আনুষ্ঠানিক বৈঠকে উভয় পক্ষ বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যকার সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে, যা অভিন্ন ইতিহাস, ভৌগোলিক নৈকট্য এবং সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য জনগণের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষার উপর ভিত্তি করে একটি বিশেষ বিষয়।
রাজা জিগমে তাকে এবং তার প্রতিনিধিদলের সদস্যদের আন্তরিক অভ্যর্থনা ও উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য গভীর প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভুটানের তৃতীয় রাজা জিগমে দর্জি ওয়াংচুক এবং সেদেশের জনগণের অমূল্য সমর্থনের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ।
প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম দেশ হিসেবে ভুটানের কথা স্মরণ করেন।
বাংলাদেশ ও ভুটান ২০২৩ সালের মার্চ মাসে ট্রাফিক-ইন-ট্রানজিট চলাচল চুক্তি এবং এর প্রটোকল স্বাক্ষর করেছে, যা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও যোগাযোগের জন্য নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। এ নিয়ে দুই পক্ষই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: বাণিজ্য-যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত ঢাকা-থিম্পু
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, এই চুক্তি এবং এর প্রটোকল কেবল দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের জন্যই অভূতপূর্ব হবে না বরং আন্তঃসংযুক্ত দক্ষিণ এশিয়ার পথ প্রশস্ত করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও কাজ করবে।
আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগ অর্থনৈতিক সংহতি এবং ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম বলে উভয় পক্ষই সম্মতি প্রকাশ করেছে।
সড়ক, রেল ও জলপথের মাধ্যমে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি আঞ্চলিক সংহতি এবং দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে বলে আশা করছে দুটি দেশই।
উন্মোচিত হলো নতুন এক দিগন্ত
ভুটানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর জিলেফু থেকে ১৯০ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের 'কুড়িগ্রামে' 'বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল' আয়োজনের প্রস্তাব দেওয়ায় ভুটান বাংলাদেশকে সাধুবাদ জানায়।
এই অর্থনৈতিক অঞ্চল দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এবং দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বৃহত্তর সমৃদ্ধি অর্জনে নতুন দিগন্ত যোগ করবে।
দুই পক্ষই ভুটান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে জ্বালানি খাতে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।
এই অঞ্চলের অভিন্ন শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে উভয় পক্ষই বৈঠকে জানিয়েছে।
রাজা ২৬ মার্চ ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করবেন এবং সেখানকার কর্মকর্তা, চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলবেন।
বাংলাদেশ থিম্পুতে একটি বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপন করতে যাচ্ছে, যা স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার আরেকটি মাইলফলক হবে।
আরও পড়ুন: ভুটানের রাজাকে ঢাকায় লাল গালিচা সংবর্ধনা
কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে দৃষ্টান্তমূলক যোগাযোগ থাকায় উভয় পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
তারা ভুটানের হিমালয়কে বাংলাদেশের কক্সবাজারের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের সঙ্গে যুক্ত করে বাংলাদেশ ও ভুটানের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ আরও জোরদার করার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
এ সফরে রাজা জিগমে পদ্মা সেতু পরিদর্শন করবেন, যা সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশ সরকারের স্ব-অর্থায়ন প্রচেষ্টার মাধ্যমে নির্মিত একটি স্মরণীয় অবকাঠামোগত সাফল্য।
অসাধারণ এই অবকাঠামো প্রকল্পটি যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জোরদারে বাংলাদেশের অঙ্গীকারের সাক্ষ্য বহন করে।
রাজা জিগমে আড়াইহাজারের একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন এবং সেখানকার অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা প্রত্যক্ষ করবেন।
ঢাকায় অবস্থানকালে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী নেতা এবং সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও মত বিনিময় করবেন রাজা।
ভুটানের রাজা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে ভুটান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে ভারত: হাছান মাহমুদ
ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে ভারত: হাছান মাহমুদ
নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে ভারত যেভাবে সহযোগিতা করেছে, সেভাবে ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতেও সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ।
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এ বৈঠক হয়।
বাংলাদেশ ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে চায় এবং ভারতের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ আনতে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
জলবিদ্যুৎ আমদানি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে এই সফরে চুক্তি হচ্ছে না। ভারত যেভাবে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে সহায়তা করেছে, ভুটান থেকে আমদানির ক্ষেত্রেও ভারত সহায়তা করবে।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের আগেই ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দানকারী দেশ ভুটানের রাজার সঙ্গে অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করাই বিএনপির উদ্দেশ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে ভুটানকে আবার বিবিআইএন (বাংলাদেশ-ভুটান-ইন্ডিয়া-নেপাল ইনিশিয়েটিভ) -এ যোগদানের জন্য এবং এয়ার-কানেক্টিভিটি বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা-থিম্পু পথে এখন সপ্তাহে মাত্র দুটি ফ্লাইট আছে। এটি বাড়ানো প্রয়োজন, কারণ ভুটান অত্যন্ত সুন্দর দেশ। আমি কয়েকবার গেছি, বর্তমান রাজার বিয়ে উৎসবেও যোগ দিয়েছি। গত বছর তিনি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার সময় যাত্রাবিরতিতে আমি তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানিয়েছিলাম।’
মানুষ যাতে সড়ক পথে গাড়ি নিয়ে যেতে পারে, সে নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান হাছান মাহমুদ।
কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য ভুটানকে জায়গা দেওয়া হবে সে বিষয়টিও উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ দিন ভুটানের রাজার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ভুটানের থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা, কুড়িগ্রামে ভুটানের জন্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তা সুরক্ষায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি পুনর্নবায়নের কথা উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই
২৫-২৮ মার্চ সফরে সোমবার ঢাকায় আসেন ভুটানের রাজা। এ দিন ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শন করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের পাশাপাশি তিনি পদ্মা সেতু, শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতাল ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন।
শেষদিন ২৮ মার্চ কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন শেষে বিকেলে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে রাজা বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন। ভুটানের রানী, পরিবারের সদস্য, মন্ত্রী ও পদস্থ কর্মকর্তারা রাজার সফরসঙ্গী হিসেবে সফরে যোগ দিয়েছেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তিতে গুরুত্ব দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া
বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) বিষয়ক আলোচনা ত্বরান্বিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়াং-সিক।
তিনি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের আগে বাংলাদেশের হাতে খুব বেশি সময় নেই।
তিনি বলেন, ‘২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে বাংলাদেশের আসন্ন উত্তরণ এবং পরে জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স (জিএসপি) সুবিধা হারানো কোরিয়া-বাংলাদেশ বাণিজ্য ব্যবস্থার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।’
রবিবার সন্ধ্যায় নিজ বাসভবনে কূটনৈতিক সংবাদ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এশিয়া প্যাসিফিক ট্রেড এগ্রিমেন্টের (আপটা) কিছু অংশ জিএসপির সঙ্গে যুক্ত এবং বাংলাদেশ যদি এলডিসি স্ট্যাটাস থেকে উত্তরণ করে, তবে আপটার আওতায় কোনো ট্যারিফ সুবিধা না পাওয়ায় কিছু পণ্য শুল্ক পরিশোধ করতে হবে।
কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত বলেন, শুধু জিএসপি সুবিধা বাড়ানো দিয়ে সব সমস্যার সমাধান হতে পারে না। উভয় পক্ষকে ইপিএর মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান করতে হবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) বিভিন্ন নাম রয়েছে যেমন ইপিএ বা কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (সিইপিএ)। ‘আমার দৃষ্টিতে, এই ধরনের এফটিএ একই।’
কোরিয়ায় এফটিএ চালুর জন্য জাতীয় সংসদের অনুমোদনসহ অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ইপিএ শুরু হবে বলে আশা করছেন তারা।
রাষ্ট্রদূত পার্ক বলেন, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ইপিএ নিয়ে ২০২৩ সালের শুরু থেকেই আলোচনা চলছে তবে বাস্তব কোনো অগ্রগতি হয়নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাপানের সঙ্গে যৌথ গবেষণা শেষ করেছে এবং চীনের সঙ্গে এটি শেষ করার কাছাকাছি পৌঁছেছে এবং ভারতের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করছে।
এর আগে রাষ্ট্রদূত ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিক্যাব) সদস্যদের সঙ্গে এক ইফতার-কাম-নৈশভোজের আয়োজন করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই
ডিক্যাব সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব আন্তঃকোরীয় সম্পর্ক, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক কূটনীতি, সফট পাওয়ার অ্যান্ড কালচার, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি এবং বহুপাক্ষিক যোগাযোগের মতো আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার ভূমিকা সম্পর্কে কূটনৈতিক সাংবাদিকদের জানাতে দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করেন।
১৯৭২ সালের ১২ মে কোরিয়া বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ২০২৩ সালে তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি হয়েছে।