একই সাথে বেসরকারি টিভি চ্যানেল একাত্তরে সোমবার প্রচারিত পিকে হালদারের সাক্ষাৎকার এবং মধ্যরাতে প্রচারিত টক-শোর ভিডিও ক্লিপ তলব করেছে উচ্চ আদালত।
এটি ১০ জানুয়ারির মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার বরাবর জমা দিতে টিভি চ্যানেলটির কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
আরও পড়ুন: পিকে হালদারকে ফেরাতে কী পদক্ষেপ, জানতে চায় আদালত
এর আগে, মঙ্গলবার আদালতে খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘সোমবার রাতে একজন পলাতক আসামির সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া তাদের রাতের টক-শোতেও ওই আসামিকে লাইভে এনেছে। আমাকেও সংযুক্ত করেছিল। আমি তার কথা শুনে লাইভ থেকে বেরিয়ে এসেছি। কারণ আমি তো পলাতক আসামির সঙ্গে টক-শো করতে পারি না। প্রথম কথা হলো, পিকে হালদার পলাতক, আর দ্বিতীয় হলো তার বিষয়ে এ আদালতে একটা সুয়োমোটো মামলা বিচারাধীন। এ অবস্থায় তার প্রচারিত সাক্ষাৎকারে কী আছে তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এ আদালত সেই ভিডিও সাক্ষাৎকার তলব করে দেখতে পারে। এরপর প্রয়োজনীয় আদেশ দিতে পারে।’
এ বিষয়ে আদালত লিখিত আকারে আবেদন করতে বললে সে অনুসারে বুধবার লিখিত আবেদন করে দুদক।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখে পিকে হালদারকে বিদেশ থেকে ফেরাতে এবং গ্রেপ্তার করতে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে ১৯ নভেম্বর স্বপ্রণোদিত আদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। ওই আদেশ অনুসারে দুদক গত ২ ডিসেম্বর একটি প্রতিবেদন দাখিল করে।
আরও পড়ুন: টাকা উদ্ধারে সহযোগিতা করতে দেশে ফিরতে চান পিকে হালদার
গত ৯ ডিসেম্বর পিকে হালদারের কাজিন পিপলস লিজিংয়ের সাবেক পরিচালক অমিতাভ অধিকারী এবং পিকে হালদারের সাবেক সহকর্মী ও পিপলস লিজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দীকে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলায় পক্ষভুক্ত করা হয়। একই সাথে পিকে হালদারের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইন্টারপোলের কাছে পাঠানো এবং তার বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চেয়ে ৩ জানুয়ারি পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করে হাইকোর্ট।
এর মধ্যে গত ২০ ডিসেম্বর দুদক আইনজীবী জানান, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ইন্টারপোলের কাছে পাঠানো হয়েছে।
পিকে হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে দুই বিনিয়োগকারীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে এক আদেশে তাকেসহ সংশ্লিষ্ট ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।
এর মধ্যে দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করে পিকে হালদার এ বিষয়ে আদালতের কাছে আবেদন করতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের কাছে একটি পত্র দেন। এরপর কোম্পানিটি আদালতে আবেদন করে। কিন্তু ২৪ অক্টোবর তাদের আইনজীবী দুদক এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে জানান, পিকে হালদার নির্ধারিত ২৫ অক্টোবর দেশে ফিরছেন না।