এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
নিহত রেহানা পারভীন (৩৭) হাটহাজারী উপজেলার ইছাপুর এলাকার প্রবাসী জনৈক সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী।
আটক আবুল খায়ের (৪৯) রাঙ্গুনীয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের সোনারগাঁও রাস্তার মাথা এলাকার মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে। তিনি পেশায় ট্রাক চালক।
আরও পড়ুন: যশোরে ধানখেত থেকে চা দোকানির লাশ উদ্ধার
এ ঘটনায় শুক্রবার দিবাগত রাতে চট্টগ্রামের বায়োজিদ বোস্তামী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রাঙ্গামাটির কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদ উল্লাহ জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকালে রাঙ্গামাটির ঘাগড়া এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে রাঙ্গামাটি পুলিশ। পরবর্তীতে পরিচয় শনাক্ত করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শুক্রবার ওই নারীকে হত্যার অভিযোগে ট্রাক চালক আবুল খায়েরকে আটক করে কাউখালী থানা পুলিশ। পরে রাতেই তাকে চট্টগ্রামের বায়েজীদ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে যুবকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার
পুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে কাউখালী থানা পুলিশের একটি টিম ঘাগড়া এলাকা থেকে অর্ধগলিত এক নারীর লাশ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পারে, বিকাশের টাকা উত্তোলন ও মেয়ের ওষুধ আনতে গিয়ে গত এক সপ্তাহ আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন ওই নারী। রেহেনা পারভীনের বাড়ি হাটহাজারীর ইছাপুরে হলেও দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন হাশেম বাজার মসজিদ সংলগ্ন ভাড়া বাসায় থাকতেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিহতের ছেলে মাহমুদুল হাসান রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতাল মর্গে এসে তার মায়ের লাশ শনাক্ত করেন এবং ঘটনার বিস্তারিত জানান।
আরও পড়ুন: মধুখালীতে ইটের খোয়ায় চাপা দেয়া যুবকের লাশ উদ্ধার
সিএমপির বায়োজিদ থানার এসআই ইকবাল বলেন, এক সপ্তাহ আগে বায়োজিদ থানা এলাকা থেকে এক গৃহবধূ নিখোঁজ হলে তার লাশ পাওয়া যায় রাঙ্গামাটিতে। এ ঘটনায় তদন্ত করতে গিয়ে কাউখালী থানার ওসি মো. শহীদ উল্ল্যাহ ও এসআই মো. আব্দুস সালামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় রাঙ্গুনীয়ার ইসলামপুর এলাকা থেকে ঘাতক আবুল খায়েরকে আটক করে এবং আমাদের থানায় হস্তান্তর করে।
আরও পড়ুন: গোয়ালন্দে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
পরে জিজ্ঞাসাবাদে ট্রাক ড্রাইভার আবুল খায়ের জানান, রেহেনা পারভীনের সাথে প্রায় ৪/৫ বছর যাবত তার অবৈধ সম্পর্ক ছিল। রেহেনা পারভীনের স্বামী প্রবাসে থাকার সুবাধে তাদের বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতো এবং পরিবারের ঘরভাড়াসহ আনুষঙ্গিক সব খরচ সে নিজেই বহন করতো। এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার রেহেনা পারভীনের বাসায় গিয়ে অন্য পুরুষের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলেন না আবুল খায়ের। পরিকল্পনা করে তাকে হত্যা করার। সে পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১ জানুয়ারি ঢাকা থেকে ট্রাক যোগে কয়লা নিয়ে রাঙ্গুনিয়ার মগাছড়িস্থ ইটভাটাতে আসার সময় রেহেনা পারভীনকে ফোন করে টাকা দেয়ার কথা বলে ডেকে নেয়। রেহেনা পারভীন তার ফোন পেয়ে আসলে তাকে রাঙ্গামাটির পর্যটন রিসোর্টে যাওয়ার প্রস্তাব দিলে তিনি রাজি হন। পথিমধ্যে ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এসে রাত সাড়ে ৯টায় ট্রাক থামিয়ে রেহেনা পারভীনকে গলায় মাফলার দিয়ে পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ট্রাকে থাকা কাপড় দিয়ে ডেকে কেবিনের মধ্যে লুকিয়ে রাখে।
আরও পড়ুন: অপহরণের ৭ দিন পর সাভারে পোশাক শ্রমিকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার
ওইদিন রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকা থেকে নিয়ে আসা কয়লা ইটের ভাটায় আনলোড করে গভীর রাতে ঘাগড়াস্থ সিটিহাট পুলিশ ফাঁড়ি থেকে প্রায় ২০০ গজ পশ্চিমে বনের ভেতরে রেহেনা পারভীনের লাশ ফেলে দেন।
কাউখালী থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুস সালাম জানান, এ ব্যাপারে নিহতের ছেলে মাহমুদুল হাসান বাদী হয়ে চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে।