তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে হারারে স্পোর্টস ক্লাবে শুক্রবার বাংলাদেশকে পাঁচ উইকেটে হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশের দেয়া ৩০৪ রানের লক্ষ্য পাঁচ উইকেট ও ১০ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা। এর মধ্য দিয়ে ৯ বছর বা ১৯ ম্যাচ পর বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় পেল জিম্বাবুয়ে। এর আগে সর্বশেষ ২০১৩ সালে বুলাওয়েতে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল তারা। এছাড়া এই প্রথম বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩০০ বা তার বেশি রান তাড়া করে ওয়ানডে জিতল জিম্বাবুয়ে।
চাপের মুখে সিকান্দার রাজা তার চতুর্থ ওয়ানডে শতরান করেন। ১০৯ বলে আটটি চার ও ছয়টি ছক্কায় ১৩৫ রান করে অপরাজিত থাকেন এই অলরাউন্ডার। রাজার সাথে ইনোসেন্ট কাইয়াও তার প্রথম শতক তুলে নেন।
বাংলাদেশের ৩০৩ রানের জবাবে জিম্বাবুয়ে শুরুতেই দুটি উইকেট হারিয়ে ফেলে। তবে রানের চাকা সচল রাখেন স্বাগতিকদের ব্যাটাররা। তৃতীয় উইকেটে ওয়েসলি মাধভেরে এবং ইনোসেন্ট ৬০ রান যোগ করেন।
শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে ধীরে ধীরে বাংলাদেশের বোলারদের উপর চড়াও হয় জিম্বাবুয়ে। চতুর্থ উইকেট জুটিতে রাজা ও ইনোসেন্ট স্কোর বোর্ডে ১৯২ রান যোগ করেন। এক দিনের ম্যাচে এটি জিম্বাবুয়ের তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটি এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের সর্বোচ্চ ওয়ানডে জুটি।
বাংলাদেশের পক্ষে মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, মোসাদ্দেক হোসেন ও মেহেদি হাসান একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল (৬২), লিটন দাস (৮১), দীর্ঘদিন পর ওয়ানডে দলে ফেরা এনামুল হক (৭৩) এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ছুটিতে থাকা মুশফিকুর রহিমের (৫২) অর্ধশতকে স্বাগতিকদের বড় লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ।
তামিম ও লিটন ওপেনিং জুটিতে ১১৯ রান যোগ করেন। এরপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ঘরোয়া ফর্ম ফিরে পাওয়ার জন্য লড়াই করা এনামুল ফিফটি করেছেন। তিনি ৬৩ বলে ৬ চার ও তিন ছক্কায় ৭৩ রান করেন।
ব্যক্তিগত ৮১ রানের সময় সিঙ্গেল নিতে গিয়ে হ্যামস্ট্রিংয়ে ব্যথা অনুভব করেন লিটন। পরে স্ট্রেচারে শুয়ে মাঠ ছাড়েন এ ওপেনার। এরপর মাঠে নামেন মুশফিকুর রহিম। দীর্ঘদিন পর তিনিও ওয়ানডেতে অর্ধশতক করেন। শেষ পর্যন্ত ৪৯ বলে ৫২ করে অপরাজিত ছিলেন এ অভিজ্ঞ ব্যাটার। অপরদিকে মাহমুদউল্লাহও ১২ বলে ২০ করে অপরাজিত ছিলেন।
আজকের ম্যাচে বাংলাদেশের পেস বোলিং আক্রমণে ছিলেন-তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।
এর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ ১৯টি ওয়ানডের সব ক’টিতেই জিতেছিল বাংলাদেশ। এছাড়া টাইগাররা দেশে ও বিদেশে তাদের শেষ সাতটি ওয়ানডে সিরিজের ছয়টি জিতেছে।
তবে এই পরিসংখ্যান জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ভালো শুরু করতে পারেনি। বাংলাদেশের বিপক্ষে দীর্ঘদিন ধরে ওয়ানডে না জেতার খরা অবশেষে ভাঙল স্বাগতিকরা।
হারের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম বলেন, ‘আমি মনে করি না স্কোর বোর্ডে আমাদের যথেষ্ট রান ছিল। ‘আমরা আরও কিছু রান করতে পারতাম, বোর্ডে ১৫-২০ রান কম করেছি। আমরা জানতাম প্রথম ১০-১৫ ওভারে টেস্ট ম্যাচের মতো ব্যাট করতে হবে।’
হ্যামস্ট্রিং চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে বাংলাদেশের ওপেনার লিটনকে। ৮১ রানে তিনি মাঠ না ছাড়লে বাংলাদেশ স্কোর বোর্ডে আরও কিছু রান পেতে পারতো।
ম্যাচের পর অধিনায়ক ইঙ্গিত দিয়েছেন এই ব্যাটার সিরিজের বাকি ম্যাচে অংশ নিতে পারবেন না। একই ভেন্যুতে ৭ ও ১০ আগস্ট শেষ দুটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক রেজিস চাকাভা ব্যাট হাতে অসামান্য অবদানের জন্য রাজা এবং ইনোসেন্টের প্রশংসা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘শুরুতে উইকেট হারানোর পর তারা যেভাবে খেলেছে, এর চেয়ে ভালো কিছু আর হতে পারে না। কোনো উইকেট না পাওয়া সত্ত্বেও আমরা প্রথম ২০ ওভারে খুশি ছিলাম, আমাদের ধারণা ছিল যে তারা ২০-৩০ কম করেছে।’
আরও পড়ুন: চার অর্ধশতকে জিম্বাবুয়েকে ৩০৪ রানের লক্ষ্য দিল বাংলাদেশ
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ