বাংলাদেশকে হারিয়ে স্বপ্নের সেমিফাইনালে ওঠা আফগানিস্তানের সেমির যাত্রা শুরু হয়েছে দুঃস্বপ্নের মতো। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে আফগান ব্যাটিং লাইন-আপ।
ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। তবে প্রোটিয়া বোলিং তোপে মাত্র ৫৬ রানেই গুটিয়ে গেছে তাদের ইনিংস।
দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১০ রান করেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ব্যটারদের আর কেউই দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি।
দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের ঝুলিতেই গেছে আফগানদের ৭টি উইকেট। এর মধ্যে ৩ ওভারে ১৬ রান দিয়ে মার্কো ইয়ানসেন নিয়েছেন সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট। এছাড়া কাগিসো রাবাদা ও আনরিখ নর্টকিয়ার ঝুলিতে গেছে দুটি করে উইকেট। স্পিনার তাবরাইজ শামসি নিয়েছে বাকি তিনটি উইকেট।
ফলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবার ফাইনালে উঠতে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ৫৭ রান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের বিপক্ষে নাটকীয় জয়ে সেমিফাইনালে আফগানিস্তান
ম্যাচ শুরুর আগে এই মাঠের রেকর্ড বলছিল, টস জিতলে ব্যাটিং নেওয়ার মতো উইকেট এটি। ১৪০-১৫০ রান করতে পারলেই তা এই পিচের ভালো স্কোর হবে। বিশ্বকাপে এখানে ৫১ উইকেটের মধ্যে ৩৮টিই গেছে পেসারদের ঝুলিতে।
উইকেটের কথা অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেলেও সম্ভব্য রানের বিষয়টি নতুন করে লিখল দক্ষিণ আফ্রিকা।
ইনিংস শুরু করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেটের দেখা পান মার্কো ইয়ানসেন। ওভারের শেষ বলে চলতি বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফর্ম করা (৭৬, ৮০, ৬০ ও ৪৩) রহমানউল্লাহ গুরবাজ ফিরে যান রানের খাতা না খুলেই। আর চার রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় আফগানিস্তান।
পরের ওভারে কেশব মহারাজ কায়দা করতে না পারলেও তৃতীয় ওভারে ফের উইকেটের দেখা পান ইয়ানসেন। এবার তার শিকার হন তৃতীয় ব্যটার গুলবাদিন নাইব।
চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে এসেই মেইডেন ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নেন কাগিসো রাবাদা। প্রথম বলেই আফগানদের অপর ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানকে বোল্ড করে সাজঘরে পাঠান তিনি। চতুর্থ বলে নতুন নামা মোহাম্মদ নবীকেও বোল্ড করেন রাবাদা। বেচারা নবী তার তিন বল মোকাবিলা করে রানের খাতাই খুলতে পারেননি।
এর ফলে চার ওভার শেষে ২০ রানে ৪ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। তবে তাদের এই ধারা বহাল থাকে পরের ওভারেও। ইয়ানসেন নিজের তৃতীয় ওভার বোলিং করতে এসে ফের উইকেটের দেখা পান। পঞ্চম ওভারের শেষ বলে উইকেটের পেছনে নানগেলিয়া খারোতের ক্যাচ নেন ডি কক।
আরও পড়ুন: টি-টোয়েন্টিতে কামিন্সের বিরল কীর্তি
মাঝে ষষ্ঠ ওভারটি বিরাম দিয়ে পরের ওভারে ফের উইকেট হারায় আফগানিস্তান। এবার নর্টকিয়ার প্রথম ওভারেই ক্যাচ হয়ে ফেরেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। দুটি চারের সাহায্যে ১২ বলে ১০ রান করেন তিনি। এর ফলে ৭ ওভার শেষে ২৯ রানে ৬ উইকেট হারায় আফগানিস্তান।
এরপর উইকেটে রক্তক্ষরণ বন্ধের চেষ্টা করেন করিম জানাত ও রশিদ খান। দুটি ওভার ধরে খেলে সে ইঙ্গিতও দেন তারা।
তবে দশম ওভারে শামসির হাতে বল তুলে দেন আইডেন মার্করাম, আর অধিনায়কের আস্থার প্রতিদানও দেন তিনি। ওভারের তৃতীয় বলে জানাতকে এবং পঞ্চম বলে নতুন নামা নুর আহমাদকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে জোড়া উইকেট নেন তিনি।
পরের ওভারে নর্টকিয়া রশিদ খানকে বোল্ড করেন। আর দ্বাদশ ওভারে শামসি ফেরান নাভিন-উল-হককে। ফলে ১১.৫ ওভারে মাত্র ৫৬ রানে গুটিয়ে যায় প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলা আফগানিস্তান।