প্রথমে গোল পেয়ে দ্বিতীয়বার সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্ন জাগিয়েছিল চলতি ইউরো আসরে চমক জাগানো তুরস্ক। তবে ৭ মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে তাদের সে স্বপ্নযাত্রা থামিয়ে দিয়েছে নেদারল্যান্ডস।

শনিবার রাতে কোয়ার্টার ফাইনালের চতুর্থ ও শেষ ম্যাচে তুরস্ককে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে নেদারল্যান্ডস।

সর্বশেষ ২০০৪ সালে ইউরোর সেমিফাইনাল খেলেছিল ডাচরা। ২০ বছর পর আবারও সেমিফাইনালে লড়বে তারা। অন্যদিকে, ১৬ বছর পর শেষ ষোলো উৎরে গিয়েও কোয়ার্ট ফাইনালে ব্যর্থ হলো তুরস্ক।

আরও পড়ুন: টাইব্রেকারে এবারও কপাল পুড়ল সুইসদের, সেমিতে ইংল্যান্ড

এদিন ম্যাচের প্রথম ত্রিশ মিনিটে দুই দলের কেউই তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। এরপরই আক্রমণের ধার বাড়ায় তুরস্ক। এসময় বেশ কয়েকটি আক্রমণে ডাচদের বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করে তারা। তবে সেসব আক্রমণ একের পর এক সফলতার সঙ্গে রুখে দিলেও ৩৫তম মিনিটে গিয়ে আরাধ্য গোল পেয়ে যায় তুর্কিরা।

রিয়াল মাদ্রিদের ১৯ বছর বয়সী প্রতিভাবান অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার আর্দা গুলেরের দর্শণীয় একটি ক্রস বক্সের ভেতরে পেয়ে হেডারে তা গোলে পরিণত করেন সেন্টার-ব্যাক সামিত আকায়দিন। এটি ছিল কোয়ার্টারের চার ম্যাচে প্রথমার্ধে প্রথম গোল।

এরপর টনক নড়ে ডাচদের। মুহুর্মুহু আক্রমণে গিয়ে তুর্কি রক্ষণে ভীতি ছড়ায় তারা। তবে প্রথমার্ধে তাদের কোনো চেষ্টাই সফল হতে দেননি তুরস্কের ডিফেন্ডাররা। ফলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় দুই দল।

আক্রমণের ধারা অব্যাহত রেখে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই তুরস্ককে চেপে ধরে নেদারল্যান্ডস। তবে মিনিট দশেক পরই দ্বিতীয় গোল খাওয়া থেকে দলকে বাাঁচান ডাচ গোলরক্ষক বার্ট ভেরব্রুগেন।

বক্সের বেশ বাইরে পাওয়া ফ্রি কিক থেকে গুলেরের বাঁকানো শট ঝাঁপিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করেন ভেরব্রুগেন। তবে পুরোপুরি সফল না হলেও বল তার আঙুলে লেগে পোস্টে লাগে।

আরও পড়ুন: ইংল্যান্ড-সুইজারল্যান্ড: ম্যাচজুড়ে যা হলো

৬৫তম মিনিটে তুরস্কের আরও একটি প্রচেষ্টা কোনোমতে ঠেকান ভেরব্রুগেন। তবে ৭০তম মিনিটে ডাচ চাপে ভেঙে পড়ে তুরস্কের রুক্ষণ দেওয়াল। কর্নার থেকে ওয়ান-টু খেলে বক্সের মধ্যে উড়ন্ত ক্রস দেন মেম্ফিস ডিপাই, আর বক্সের মধ্যে একেবারেই আনমার্কড থাকা স্টেফান ডে ভ্রাই হেডার দিয়ে তা গোলে পরিণত করেন। এর ফলে দলকে সমতায় ফেরান ইন্টার মিলান ডিফেন্ডার।

৭৬তম মিনিটে রক্ষণের ভুলে দ্বিতীয় গোল হজম করে বসে তুরস্ক।

ডেনসেল ডুমফ্রিসের দূরপাল্লার পাস ধরে গোলে শট নেন কোডি গাকপো। তবে গোলমুখ থেকে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তা নিজেদের জালে জড়িয়ে দেন তুর্কি ডিফেন্ডার মের্ত মুলদুর। এর ফলে ইউরোর চলতি আসরে দশম আত্মঘাতী গোল দেখে দর্শক, আর ম্যাচে প্রথমবারের মতো এগিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস।

এরপর গোলের জন্য হন্যে হয়ে উঠেও আর তার দেখা পাননি তুরস্কের খেলোয়াড়রা।

শেষ সময়ে, অর্থাৎ যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে নিশ্চিত গোল থেকে তুরস্ককে বঞ্চিত করেন ভেরব্রুগেন। সতীর্থের ক্রস থেকে তুর্কি ফরওয়ার্ড সেমিহ কিলিকসয়ের শট অসাধারণ এক রিফ্লেক্সে ঠেকিয়ে দেন ডাচ গোলরক্ষক।

শেষ মিনিটে হাকান চালানোলুর শট বক্সের ভেতর থেকে কোনোমতে ফিরিয়ে দেন ডুমফ্রিস। এরপর শেষের বাঁশি বাজতেই উল্লাসে মাতোয়ারা হয়ে যায় ডাচরা।

ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বুধবার (১০ জুলাই) রাত একটায় ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ১৯৮৮ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়ন নেদারল্যান্ডস।