কৃষি বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বোরো মৌসুমে কুষ্টিয়া জেলায় ৩৩ হাজার ২৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ হয়েছে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন। তবে এবার বোরো চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে বলে কৃষকরা জানান।
জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলের মাঠ জুড়ে উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাত ও হাইব্রিড জাত ধান চাষ হয়েছে। হাইব্রিড জাতের মধ্যে সোনার বাংলা-১, গোল্ড ও জাগরণ ধানে প্রতি হেক্টরে ৪.৭ টন এবং উচ্চ ফলনশীল (উফসী) জাতের ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯, হীরা ও গাজী ধানের ক্ষেত্রে প্রতি হেক্টরে ৩.৭ টন করে চাষিরা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেন।
ধান ঘরে উঠার শেষ মুহূর্তে দুর্যোগ কিংবা প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি উৎপাদন হবে বলে প্রান্তিক কৃষক ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান। সদর উপজেলার অন্তর্গত কবুরহাট, বাড়াদি, জয়নাবাদ, বটতৈল ও মোল্লাতেঘরিয়া গ্রামের ধান ইতোমধ্যেই কাটা শুরু হয়ে গেছে।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বাড়াদি এলাকার কৃষক আব্দুল মালেক জানান, এবার বোরো ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, সার, বালাইনাশক ও সেচ সঠিকভাবে দেয়ায় ধানের ছড়া লম্বা ও ফলন ভালো হয়েছে । বিঘা প্রতি ১৫-১৬ মণ থেকে ১৮-২০ মণ পর্যন্ত ধান কৃষকের ঘরে উঠবে বলে ওই কৃষক জানান।
এদিকে করোনার কারণে এবার ধান কাটার জন্য শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। তবে খুব সহজে ধান কর্তন ও শ্রমিক সংকট এড়াতে সরকারি ভর্তুকিতে কৃষকদের দেয়া হচ্ছে কম্বাইন্ড হারভেস্টার। কুষ্টিয়ার ৬টি উপজেলার কৃষকদের জন্য ১২টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন, ৩টি রিপার মেশিন ও একটি রাইচ ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের মোট মূল্যের অর্ধেক দাম কৃষক দিবে এবং বাকি অর্ধেক ভর্তুকি হিসেবে দিবে সরকার। কৃষি বিভাগ ও সরকার গঠিত কমিটির মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভর্তুকিতে ৮টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন কৃষকরা কিনে নিয়েছেন। এছাড়া সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ধান কর্তন কার্যক্রম চলবে বলে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান।
কুষ্টিয়া কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শ্যামল কুমার বিশ্বাস জানান, বোরো আবাদের শুরু থেকেই কৃষকদের সকল পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয়া হয়েছে। এছাড়া আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার ধানের ফলনও অনেক ভালো হয়েছে।