অতিরিক্ত এ অর্থায়ন চলমান প্রমোটিং এগ্রিকালচারাল কমার্সিয়ালাইজেশন অ্যান্ড এন্টারপ্রাইজেজ (পেইস) প্রকল্পকে আরও বেগবান করবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা পল্লি কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) মাধ্যমে।
নতুন অর্থায়ন বাংলাদেশ সরকার এবং পিকেএসএফের চলমান ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এবং কৃষকদের সহায়তা করার যে উদ্যোগ তার পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে এবং কোভিড-১৯ আক্রান্ত গ্রামীণ অর্থনীতিকে ক্ষতি পুনরুদ্ধারে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন: দেশের ৮৬ শতাংশ প্রতিবন্ধী মানুষ প্রত্যক্ষভাবে কৃষিতে জড়িত: গবেষণা
২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত খামার ও খামার-বহির্ভূত খাতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসা পুনরুর্জ্জীবিত করতে এবং একই সাথে সফল ভ্যলু চেইনকে শক্তিশালী করতে এ অর্থ ব্যবহৃত হবে।
ইফাদের দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক প্রধান রাশা ওমার বলেন, ‘এ মহামারির প্রভাব দীর্ঘ মেয়াদি এবং এ জন্য অর্থনীতিকে শক্ত ভিত্তির ওপর স্থাপন করতে হবে।‘
‘ইফাদ এ অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে সেই সব ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এবং পরিবারের পুনর্বাসনের জন্যে যাদের কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ব্যবসা এবং আয়ের উৎস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে,’ রাশা ওমার বলেন।
তিনি জানান, এ উদ্যোগ তাদের জীবিকাকে পুনর্স্থাপিত করবে এবং ভবিষ্যৎ ঝুঁকি কমিয়ে আনার কৌশল তৈরি করতে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন: মুজিববর্ষে ১০০ করে যুবশপ ও কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র স্থাপন
পেইস প্রকল্পটি যৌথভাবে অর্থায়ন করছে ইফাদ, বাংলাদেশ সরকার এবং পিকেএসএফ। ২০১৫ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল দেশব্যাপী ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসায়ের আয়ের সুযোগ বৃদ্ধি করা এবং অতি-দরিদ্র এবং দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান করা।
পেইস প্রকল্প এ পর্যন্ত ৩২১,০০০ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এবং ভ্যালু চেইনের সাথে জড়িত মানুষকে সরাসরি উপকৃত করেছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৭৪টি ভ্যলু চেইন এবং ২৫টি প্রযুক্তি হস্তান্তর উপ-প্রকল্পের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে ক্ষুদঋণ এবং কারিগরি ও প্রযুক্তি সহায়তা এবং নিশ্চিত করা হয়েছে বাজারে অভিগম্যতা।
অতিরিক্ত অর্থায়নের মাধ্যমে এ প্রকল্পের মোট অর্থায়নের পরিমাণ দাড়াঁবে ১২৯.৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ইফাদ দিচ্ছে ৫৮.০৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
পরবর্তী দুই বছরে এ প্রকল্প আরও ১৬৮,০০০ জনকে উপকৃত করবে যাদের মধ্যে ৪৮,০০০ জন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এবং ১২০,০০০ জন ভ্যলু চেইনের সাথে জড়িত।
আরও পড়ুন: কৃষি নিয়ে জানতে পারেন সামাজিক মাধ্যম থেকে
বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতি এবং ক্ষুদ্রঋণ খাতকে পুনর্গঠনে অর্থের চাহিদা বাড়তে থাকায় ইফাদ এবং পিকেএসএফের এ উদ্যোগ ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ বৃদ্ধি, উদ্যোক্তাদের ব্যবসা ও কৃষি কার্যক্রম পুনরুদ্ধার ও উন্নত এবং ভবিষ্যৎ সংকট মোকাবিলায় ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
পেইস প্রকল্প স্বাস্থ্য এবং পরিচ্ছন্নতার সচেতনতা তৈরি করবে যা কোভিড-১৯ এবং ভবিষ্যৎ মহামারির বিস্তার রোধে সহায়তা করবে। সেই সাথে এ প্রকল্পটি সনাতন কাঁচাবাজারে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশ উন্নয়নের জন্যে বিভিন্ন বাজার তদারকি কমিটির সাথে কাজ করবে। এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য বাজারে বিক্রেতা এবং ক্রেতাদের মাঝে স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি করা এবং এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করা যা বাজারে মানুষের প্রবেশ এবং বহির্গমনের পথকে নির্দিষ্ট করবে।
আরও পড়ুন: পূর্বাচলে হবে বিশ্বমানের প্যাক হাউস ও অ্যাক্রেডিটেশন ল্যাব: কৃষিমন্ত্রী
স্পর্শবিহীন লেনদেনের প্রয়োজনীয়তা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে মানুষ এখন বেশি অনুভব করছে। এ অতিরিক্ত অর্থায়নের মাধ্যমে পিকেএসএফ ই-কমার্স ভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বান্ধব একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার জন্যে কাজ করবে।
নতুন বরাদ্দ অর্থ বড় দাগে তিনটি কৃষি ব্যবসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবে যেমন মৎস্য ও সবজি উৎপাদন, পোলট্রি এবং পশুপালন। এ তিন খাতে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণও প্রকল্পের আওতায় পড়বে। রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের ৪০ জেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
আরও পড়ুন: কৃষি মন্ত্রণালয়কে করোনার সম্ভাব্য দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ
পিকেএসএফের সাথে ইফাদের রয়েছে দীর্ঘদিনের সহযোগিতার সম্পর্ক এবং পেইস এ শীর্ষ উন্নয়ন সংস্থার সাথে ইফাদের অর্থায়নে পরিচালিত চতুর্থ প্রকল্প। সেই সাথে, ইফাদ রুরাল মাইক্রোএন্টারপ্রাইজ ট্রান্সফরমেশন প্রজেক্টের (আরএমটিপি) মাধ্যমে পঞ্চম প্রকল্পের অর্থায়ন করছে, যা ২০২০ সালের আগস্ট মাসে চালু হয়। আরএমটিপি প্রকল্পের মোট বাজেট ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার মধ্যে ইফাদ অর্থায়ন করছে ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।