মৌলভীবাজারের জুড়ীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক নির্মাণের ফলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
তিনি বলেছেন, সাফারি পার্ক নির্মাণের ফলে দেশ-বিদেশের পর্যটক আসবে, কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে এবং সর্বোপরি এলাকার মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হবে। সাফারি পার্ক এলাকায় বসবাসরতদের সুরক্ষা দিয়েই এখানে সাফারি পার্ক নির্মাণ করা হবে।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) একনেক সভায় মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলায় একটি সাফারি পার্ক নির্মাণের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, মৌলভীবাজার (প্রথম পর্যায়)’- প্রকল্পটি অনুমোদনের পর তার সরকারি বাসভবন থেকে এক ভিডিও বার্তায় পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, একনেক সভার মন্ত্রী ও সদস্যরা, পরিবেশ সচিব, বন অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এসময় পরিবেশমন্ত্রী বলেন, এ সাফারি পার্কে বাংলাদেশের বিপদাপন্ন ও বিপন্ন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। লাঠিটিলার বনভূমিকে জবরদখলমুক্ত করে বন্যপ্রাণী বিশেষ করে হাতি, মেছো বিড়াল, বনরুই, খাটলেজি বানর, আসামি বানর, গন্ধগকুল, মায়া হরিণ, চশমাপরা হনুমান, ভল্লুক, সজারু ইত্যাদির বসবাস উপযোগী প্রাকৃতিক পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে।
আরও পড়ুন: পরিবেশদূষণ রোধে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
তিনি বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। হাতি উদ্ধার কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে অসহায় এতিম ও উদ্ধার করা মহাবিপন্ন হাতির চিকিৎসা দেওয়া হবে। বিপদাপন্ন প্রজাতির বাঘ, গণ্ডার, সিংহ, কুমির, ঘড়িয়াল, প্যারা হরিণ, সম্বর হরিণ, নীলগাই, ভাল্লুক ইত্যাদি বন্যপ্রাণীর জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল গড়ে তোলা হবে।
বনমন্ত্রী বলেন, আহত ও উদ্ধার করা বন্যপ্রাণী চিকিৎসার নিমিত্তে বন্যপ্রাণী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিষয়ে জনগণের মধ্যে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা হবে। জলচর ও পরিযায়ী পাখির আবাসস্থল উন্নয়নের জন্য পুকুর ও লেক খনন এবং বন্যপ্রাণীর জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আবাসস্থল উন্নয়নের জন্য ফলের গাছ, তৃণভূমি ও বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষরোপণ করা হবে।
তিনি জানান, বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ প্রজাতির সংরক্ষণের জন্য এক লাখ চারা রোপণ, ভূমিক্ষয় রোধে পাহাড়ের ঢালে ও পাদদেশে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়াও, এখানে নেচার হিস্ট্রি মিউজিয়াম ও প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।
তিনি আরও জানান, মাধবকুণ্ড ইকোপার্কে দুই কিলোমিটার বেশি কেবল কার স্থাপনের প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
আরও পড়ুন: জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পকে নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব করতে কাজ করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশবান্ধব ইট উৎপাদনকারীদের প্রণোদনা দেবে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী