অন্তঃসত্ত্বা নারীদের করোনা টিকা প্রদানের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, অন্তঃসত্ত্বারা টিকা নিতে পারবেন কি না বা নিলে কীভাবে নেবেন, এ বিষয়ে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্তে আসা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেলকে যোগাযোগ করতে বলেছেন আদালত।
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের করোনার টিকা প্রদানে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিতে আজ সোমবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের একক ভার্চুয়াল বেঞ্চ এসব কথা বলেন।
এর আগে ৩১ জুলাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের করোনার টিকা প্রদানে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা চেয়ে ওই রিট দাখিল করেন চার আইনজীবী। তাদের মধ্যে একজন অন্তঃসত্ত্বা আইনজীবীও রয়েছেন। আজ রিটটি শুনানির জন্য ওঠে।
শুনানির এক পর্যায়ে রিট আবেদনকারী আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবিরের উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘মাঝখানে টিকা নিয়ে কথা উঠল যে টিকা পাব, পাব না, কী হবে? মনে হয় এখন পরিস্থিতি অনুকূলে আছে।’
আরও পড়ুন: চিকিৎসক নিয়োগে হস্তক্ষেপ করবেন না হাইকোর্ট
রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘আপনারা কথা বলবেন অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ব্যাপারে। যদিও গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রেসের সামনে বলেছেন যে অন্তঃসত্ত্বাদের টিকার বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আসা প্রয়োজন। অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলবেন উনি যাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করেন, যাতে তারা এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন।’
এই আইন কর্মকর্তার উদ্দেশে আদালত আরও বলেন, ‘কোনো আনুষ্ঠানিক আদেশ দিচ্ছি না, যেহেতু মন্ত্রী সাহেব বলেছেন। আশা করছি এমনিতে হওয়ার কথা। তবু অ্যাটর্নি জেনারেল (এ এম আমিন উদ্দিন) যাতে যোগাযোগ করেন।’
এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, আদালতের কার্যক্রম শেষে জানিয়ে দিচ্ছি।
পড়ুন: শিগগিরই ৪ হাজার চিকিৎসক-নার্স নিয়োগ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
শিশু থাকবে মায়ের কাছে, দেখা করতে পারবেন বাবা: হাইকোর্ট
তখন আদালত বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন তাই মনে করছি বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এই প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত হয়। যাতে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত আসে। আসলে অন্তঃসত্ত্বারা টিকা নিতে পারবেন কি না বা নিলে কীভাবে নেবেন, এ বিষয়ে একটা গাইডলাইন আসা দরকার।’ এরপর আদালত রিটের শুনানি মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) রাখেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমারও ভার্চুয়াল আদালতে যুক্ত ছিলেন।
অন্তঃসত্ত্বাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার টিকা প্রদানে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়ে ২৯ জুলাই আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবিরসহ সুপ্রিম কোর্টের দুজন আইনজীবী সরকারের তিন সচিবসহ সংশ্লিষ্ট পাঁচ ব্যক্তি বরাবর আইনি নোটিশ পাঠান। ওই নোটিশের জবাব না পেয়ে গত শনিবার চার আইনজীবী রিটটি দাখিল করেন।
চার আইনজীবী হলেন মোহাম্মদ হুমায়ন কবির, রাশিদা চৌধুরী, মোহাম্মদ কাউছার ও মো. মোজাম্মেল হক। রিটে স্বাস্থ্যসচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালককে বিবাদী করা হয়।