তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি করছেন। তাদের সাথে আমরা যোগাযোগ করে যাচ্ছি। আশা করি অল্প সময়ের মধ্যে, আগামী ২-৪ দিনের মধ্যে তাদের সাথে আমরা একটি চুক্তি করতে পারব।’
শনিবার মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়ায় শুভ্র সেন্টারে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত, দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষের মাঝে জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি আয়োজিত ফুড প্যাকেজ ও হাইজিন প্যাকেট বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সকলেই একযোগে ভ্যাকসিন পাবে না। প্রথম পর্যায়ে হয়তো কিছু লোককে ভ্যাকসিন দিতে পারব। পরবর্তী ধাপে সকলকেই ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসা যাবে। শুধু ভ্যাকসিন পেলেই কিন্তু করোনাভাইরাস চলে যাবে না। ভ্যাকসিনের পর আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে অর্থাৎ মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘তুলনামূলকভাবে করোনায় আমাদের দেশে মৃত্যুর হার অনেক কম। আমেরিকাতে সোয়া দুই লাখ লোক মারা গেছেন। আমরা একটি মৃত্যুও চাই না। আমরা অনেক ভালো আছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেছি বিধায় আমরা ভালো আছি। আর কিছুদিন ধৈর্য্য ধরতে হবে।’
এখনও দেশ থেকে করোনাভাইরাস চলে যায়নি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সামনে শীতের দিনে করোনাভাইরাস বাড়ার সম্ভবনা আছে। বিশ্বজুড়ে অনেক বেড়ে গেছে। আমাদের সর্তক থাকতে হবে। আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করতে হবে।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি মানিকগঞ্জ শাখার সেক্রেটারি মো. ইসরাফিল হোসেন।
অনুষ্ঠানে ৫৫০ জনের মাঝে ফুড প্যাকেজ ও হাইজিন প্যাকেট বিতরণ করা হয়।
কোভিড-১৯: বাংলাদেশ পরিস্থিতি
দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ হাজার ৯২৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া, নতুন করে ১ হাজার ৩২০ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪ লাখ ৭ হাজার ৬৮৪ জনে।
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত স্বাস্থ্য সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, করোনা শনাক্তের জন্য দেশের সরকারি ও বেসরকারি ১১৩টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১১ হাজার ২০৯টি এবং পরীক্ষা করা হয়েছে ১১ হাজার ৫৩২টি। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ২৩ লাখ ৩৬ হাজার ২৬২টি।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১.৪৫ শতাংশ। আর মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ১৭.৪৫ শতাংশ।
নতুন যে ১৮ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ১২ এবং নারী ছয়জন। এখন পর্যন্ত মোট মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ৪ হাজার ৫৫৩ জন বা ৭৬.৮৭ শতাংশ এবং নারী ১ হাজার ৩৭০ জন বা ২৩.১৩ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১.৪৫ শতাংশ।
এদিকে, করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ১ হাজার ৪৪২ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ২৪ হাজার ১৪৫ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার এখন পর্যন্ত ৭৯.৫১ শতাংশ।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।