আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, চলতি বছর দেশের ১৭টি জেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ই-রেজিস্ট্রেশনের পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন চলছে। আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে এই প্রকল্পের মূল্যায়ন প্রতিবেদন পাওয়া যাবে। মূল্যায়ন প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আগামী বছর সারা দেশের সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে ই-রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালু করা হবে।
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস এসোসিয়েশন (বিআরএসএ) আয়োজিত সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে নব যোগদান করা কর্মকর্তাদের সংবর্ধনা ও মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের ৭ বিচারপতি বিব্রতবোধ করেছিলেন: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশ প্রযুক্তিতে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এই অবস্থায় রেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে ডিজিটাইজেশন বা ই-রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালুর বিকল্প নেই। এই প্রক্রিয়া চালু হলে জনগণকে দ্রুত রেজিস্ট্রেশন সেবা দেয়া সম্ভব হবে। তিনি যোগ করেন, ই-রেজিস্ট্রেশনের পাশাপাশি প্রচলিত ব্যবস্থাও বহাল থাকবে। তাই ই-রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালু হলেও কোন নকলনবীশ বা দলিল লেখক কাজ হারাবেন না।
মন্ত্রী বলেন, ই-রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় ফাইল হ্যাক বা ড্রপ কিংবা ক্রাশ হতে পারে। তাই প্রচলিত ব্যবস্থা বাতিল করা সঠিক হবে না। বুদ্ধি মত্তার কাজ হবেনা।
সাব-রেজিস্ট্রারদের উদ্দেশ্যে আনিসুল হক বলেন, জনগণকে সঠিকভাবে সেবা না দিলে ধরে নেয়া হবে যে, আপনারা সঠিকভাবে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করছেন না। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, বাংলাদেশের সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। সেজন্য জনগণকে সেবা দেয়া নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, যারা দুর্নীতি করবে তাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়া হবে। এ বিষয়ে কেউ তাদের পক্ষে অবস্থান নিবেন না। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
আরও পড়ুন: সার্চ কমিটির মাধ্যমেই গঠিত হবে ইসি: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী বলেন, আপনাদের দীর্ঘদিনের দাবী অনুযায়ী নিবন্ধন পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে উন্নীত করা হয়েছে। ৪৯১টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। বদলির ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সর্বস্তরের কর্মকর্তাদের দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দেশের বিভিন্ন জেলায় জেলা রেজিস্ট্রার ও সাব-রেজিস্ট্রারের অফিস ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
মন্ত্রী যোগ করেন, এক সময় বালাম বহির অভাবে জনগণকে মূল দলিল ফেরত পাওয়ার জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হতো। বালাম বহির সংকট সম্পূর্ণ দূর করা হয়েছে। নকল নবীশদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগে নকল নবীশদের পারিশ্রমিক বছরের পর বছর বকেয়া থাকত। এখন তাদের পারিশ্রমিক নিয়মিত পরিশোধ করা হচ্ছে। দ্রুততম সময়ে জনগণকে রেজিস্ট্রেশন সেবা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিটি জেলা ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মকর্তা -কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। চলতি ২০২১ সালেও পাবলিক সার্ভিস কমিশন কর্তৃক নন-ক্যাডার কর্মকর্তা হিসেবে সুপারিশ করা ৬৯ জনকে সাব-রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বিআরএসএ- এর সভাপতি মো. জিয়াউল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরির্শক শহীদুল আলম ঝিনুক, বিআরএসএ-এর মহাসচিব মো. জাহিদ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।