প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি দেশের সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন করবেন এবং তার সরকার নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।
বুধবার ব্রিটিশ অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের চারজন এমপি তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
সংসদ সদস্যরা হলেন- রুশনারা আলী, জনাথন রেনল্ডস মোহাম্মদ ইয়াসিন ও টম হান্ট।
আরও পড়ুন:গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ পেতে উৎপাদন খরচ পরিশোধ করুন: প্রধানমন্ত্রী
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে প্রতিনিধিদলকে বলেছেন যে দেশে নির্বাচন কমিশন অনেকটাই স্বাধীন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আপনার ওয়েস্টমিনস্টারের গণতন্ত্র অনুসরণ করি। নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরা এলে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।’
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের অতীতে সামরিক শাসকদের কবল থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই করার দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে।
তিনি বলেন, সামরিক শাসকরা বন্দুক ব্যবহার করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে রাজনৈতিক দল গঠন করে রাজনীতিতে নেমেছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে উদ্যোগ নিতে ব্রিটিশ এমপিদের প্রতি আহ্বান জানান হাসিনা।
তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশের মতো দেশ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং ভোজ্যতেল আসত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধের কারণে এসব পণ্যের আমদানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে যার ফলে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে।
তিনি যুক্তরাজ্যের উদ্যোক্তাদের সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা সেখানে যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকে স্বাগত জানাব।’
ব্রিটিশ এমপিরা বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অবকাঠামোগত উন্নয়নে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
প্রেস সচিব জানান, এই উন্নয়নের জন্য তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে তারা মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু ও বঙ্গবন্ধু টানেলসহ কানেকটিভিটির উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।’
বাংলাদেশের উন্নয়নে এসব অবকাঠামো খুবই সহায়ক হবে বলে মনে করেন সংসদ সদস্যরা।
ব্রিটেনকে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী উল্লেখ করে তারা বলেন, তাদের দেশ বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করতে চায়।
তারা বলেছিলেন যে যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিরা অনেক পরিশ্রমী এবং তারা ব্রিটিশ অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।
তারা আরও বলেন, যুক্তরাজ্য জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে।
তারা বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়েও আলোচনা করেছেন বলে জানান ইহসানুল।
প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি ব্রিটিশ সহায়তার প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, সরকার জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যা নিয়ে আন্তরিক এবং নিজস্ব সম্পদ দিয়ে অভিযোজন ও প্রশমন কার্যক্রম শুরু করেছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাথমিকভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে বৃক্ষরোপণ এবং ৭৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দিয়ে বহুমুখী সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন।
শেখ হাসিনা প্রয়াত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, কমনওয়েলথ দেশগুলোর অভিভাবক হিসেবে তিনি সবসময় বাংলাদেশের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন।
তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এম. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পুলিশকে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড দৃঢ়ভাবে মোকাবিলার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
জনগণের আস্থা ধরে রাখতে সেবা অব্যাহত রাখুন: পুলিশ সদস্যের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী