রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এটি সম্পর্কে অবগত না হওয়া পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। এ বিষয়ে কুয়েত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের এখনও কিছু জানায়নি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, কুয়েত সরকারের কাছ থেকে নথি পেলেই তারা সংশ্লিষ্ট অফিস এবং সংসদে বিষয়টি জানাবেন।
‘পরে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে,’ বলেন তিনি।
অর্থ ও মানবপাচার সংশ্লিষ্ট একটি মামলায় বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুলকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে কুয়েতের একটি আদালত।
আরও পড়ুন: কুয়েতে এমপি পাপুলের ৪ বছরের কারাদণ্ড
এমপি পাপুল পরিবারের অর্থপাচার: বাংলাদেশ ব্যাংকের নথি তলব
কুয়েতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, কারাদণ্ডের পাশাপাশি পাপুলকে ১৯ লাখ কুয়েতি রিয়াল জরিমানা করা হয়েছে।
কুয়েতের ফৌজদারি আদালতের বিচারক আবদুল্লাহ আল-ওসমান পাপুলের বিরুদ্ধে এই সাজা ঘোষণা করেন।
এর আগে, পাপুলের মামলার শুনানির দিন ২৮ জানুয়ারি নির্ধারণ করে কুয়েতের ফৌজদারি আদালত। বৃহস্পতিবার পাপুলের ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর শুনানি শেষে সাজা ঘোষণা করেন আদালতের বিচারক।
গত বছরের ৬ জুন শহিদ ইসলাম পাপুলকে গ্রেপ্তার করে কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে তার বিরুদ্ধে কুয়েতে মানবপাচার ও অর্থপাচারের মামলা দায়ের করা হয়।
পাপুলের ঘটনা দু:খজনক
মোমেন বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে সরকারি ডকুমেন্ট নিতে বলেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পাপুল কূটনীতিক পাসপোর্ট বা সংসদ সদস্য হিসেবে কুয়েতে যাননি, তিনি সেখানে ব্যবসায়ী হিসেবে গিয়েছিলেন।
পাপুলের ঘটনাকে ‘দু:খজনক’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশে যখন কোনো বাংলাদেশি ভালো কিছু করেন তখন আমরা গর্ববোধ করি এবং যখন কেউ অন্যায় কাজ করেন তখন মর্মাহত হই।
ড. মোমেন বলেন, পাপুল অন্যায় করেছে এবং এটি লজ্জার বিষয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ়়।
‘বিষয়টি (পাপুলের দণ্ড) আমাদের সম্পর্কের উপর কোনো প্রভাব ফেলবে না,’ বলেন তিনি।
পাপুল ও তার স্ত্রীসহ চারজনের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত বছরের ১১ নভেম্বর মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন ঢাকার সমন্বিত অফিস -১ এ এমপি শহিদ ও তার স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের এমপি সেলিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। ১০ নভেম্বর নিয়মিত বৈঠকে কমিশন মামলাটির অনুমোদন দেয়।
দম্পতির কন্যা ওয়াফা ইসলাম, পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন আক্তারকেও ১৪৮ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন এবং প্রায় ২ কোটি ৩১ লাখ টাকার সম্পত্তি গোপন করার অভিযোগে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: এমপি পাপুলের স্ত্রী ও মেয়েকে ১০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
সাংসদ পাপুলের স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার আগাম জামিন আবেদন
অর্থপাচার: এমপি পাপুল ও তার স্ত্রীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
এমপি পাপুল কুয়েতের নাগরিক নন, নিশ্চিত করল দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়