দেশি পেঁয়াজের দামের ঝাঁজ কমাতে ভারত থেকে আমদানি করা হবে সরকারের সংশ্লিষ্টদের এমন ঘোষণায় স্বস্তিতে ছিলেন দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা।
আবার দামও কমতে শুরু করেছিল। কিন্তু বেশ কয়েকদিন হলেও এখনও পর্যন্ত আমদানির অনুমতি (আইপি) দেওয়া হয়নি। ফলে এই সুযোগ নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন ক্রেতারা।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকেরা জানান, দুই মাসের বেশি সময় ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় গেল ঈদের পর থেকে বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম একটু একটু করে বাড়ছে। প্রতিদিন দুই থেকে এক টাকা করে দাম বেড়ে মঙ্গলবার ঠেকেছে ৭০ টাকায়।
আরও পড়ুন: হিলিতে আমদানি বন্ধের অজুহাতে দাম বাড়ছে পেঁয়াজের
অর্থাৎ, গত ২৪-২৫ দিনে কেজিতে অন্তত ৪০ টাকা বেড়েছে। অথচ ঈদের দুই-একদিন আগেও এই পেঁয়াজ ৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
হিলি বাজারের খুচরা ব্যাবসায়ী শাহাবুল ইসলাম বলেন, পেঁয়াজের দামের এই অস্থিরতা তিন সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে। বাজারে ক্রেতারা পেঁয়াজ কিনতে আসলে দাম নিয়ে আমাদের সঙ্গে প্রায়সময় কথা কাটাকাটি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এমনিতে গরমে কাহিল অবস্থা। তারপর পেঁয়াজের দাম শুনে ক্রেতারা চটে উঠছেন। আমরা যে দামে কিনি কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা রেখে বিক্রি করি। বর্তমানে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতা মাহফুজ আলম জানান, সব মানুষই দাম শুনে উচ্চবাচ্য করছে। আজ বাজারে আসলে বলে এক দাম, আবার দুইদিন পরে আসলে আরেক দাম।
তিনি বলেন, আমরাও তো খেটে খাওয়া মানুষ। রোজগার কমেছে, আয় তো বাড়েনি। কিন্তু প্রতিনিয়ত জিনিসপত্র বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
বাজারের পাইকারি বিক্রেতা ফেরদৌস রহমান জানান, আমরা পাবনাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে দেশি পেঁয়াজ কিনে আনি। সব খরচ বাদ দিয়ে কেজিতে দুই টাকা লাভে বিক্রি করছি। মঙ্গলবার সকাল ও দুপুরে ৬৩ থেকে ৬৪ টাকায় বিক্রি করেছি।
আরও পড়ুন: শিগগিরই পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে: কৃষি সচিব
তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছ থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা কিনে ৭০ টাকা দরে বিক্রি করছে।
বন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক মোবারক হোসেন জানান, বাজার পরিস্থিতি নিয়ে আমরা আমদানিকারকরা সরকারের কৃষি, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করছি। কিন্তু কোনো সদুত্তর পাচ্ছি না।
তিনি বলেন, আমরা ১০ থেকে ১২ দিন আগে আমদানির অনুমতি চেয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি।এখন অনুমতির অপেক্ষায় আছি।
পেঁয়াজের আরেক আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী এবং কৃষি সচিব ইঙ্গিত বা ঘোষণা দিয়েছিলেন এভাবে দাম বাড়তে থাকলে পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। ঠিক তখনই বাজারে দাম কমছিল।
যখন এই অসাধু ব্যবসায়ীরা দেখল আমদানির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না, আবার তারা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত থেকে আমদানি করা না হলে বাজার সামাল দেওয়া সম্ভব না।
হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী সংগনিরোধ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী জানান, দেশের কৃষকদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে কৃষি মন্ত্রণালয় গত ১৫ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানিতে অনুমতি (আইপি) দিয়েছিল। এরপর ১৬ মার্চ থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ আছে।
আরও পড়ুন: হিলিতে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম