যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী দলের নেতা এবং লেবার পার্টির প্রধান স্যার কেয়ার স্টারমার বলেছেন, 'বাংলাদেশ এবং যুক্তরাজ্য চমৎকার সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রবাসীদের মাধ্যমে তা আরও শক্তিশালী হয়েছে।'
শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎকালে এই ব্রিটিশ নেতা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে চার দিনের সফরে লন্ডনে রয়েছেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শেখ হাসিনা রানির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
এ সময় স্টারমার রানির স্মরণে তার শ্রদ্ধার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক যাওয়ার পথে লন্ডন পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
তারা সাবেক লেবার প্রধানমন্ত্রী হ্যারল্ড উইলসনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাক্ষাৎ এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথাও স্মরণ করেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দেয়া বাণীর জন্য লেবার নেতাকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
তিনি ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সাক্ষাতের কথা স্মরণ করেন। তিনি যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় লেবার পার্টির মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লোক নির্বাচিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি আরও বলেন, লেবার পার্টি তরুণ প্রজন্মের নেতাদের প্রচার ও দেখভালের জন্য কাজ করছে যা আরও ব্রিটিশ-বাংলাদেশি তরুণদের আকৃষ্ট করবে।
এ সময় দুই নেতা ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন। বিশেষ করে দক্ষিণ বিশ্বের ওপর।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাবিশ্বের সাধারণ মানুষকে খাদ্য, জ্বালানি ও আর্থিক নিরাপত্তাহীনতা থেকে রক্ষা করতে আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
একই সঙ্গে তিনি যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জনগণের ওপর প্রভাব ফেলছে কিনা তা পর্যালোচনার পরামর্শ দেন।
উভয় পক্ষ চলমান মুদ্রাস্ফীতি চাপ এবং জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটের কারণে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্কের সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে মতামত বিনিময় করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ টিকা গবেষণা ও উন্নয়নে অংশ নিতে আগ্রহী: প্রধানমন্ত্রী
লেবার পার্টির নেতা বলেন, তারা যুক্তরাজ্য এবং পশ্চিমের বড় খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারকদের ব্যয় ভাগ করে নেয়ার পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রাখবেন।
স্টারমার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলার প্রশংসা করেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশের সঙ্গে কাজ করতে লেবার পার্টির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দু’দেশের মধ্যে জলবায়ু অংশীদারিত্বের প্রসারের প্রশংসা করেন।
শেখ হাসিনা লেবার পার্টির নেতাকে মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতির কারণে বাংলাদেশের ওপর ক্রমবর্ধমান বোঝা সম্পর্কে অবহিত করেন।
তারা বাংলাদেশের সীমান্তের কাছাকাছি সাম্প্রতিক সশস্ত্র সংঘাতের বিস্তার নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে বাংলাদেশ তার ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে সংঘাতের ছড়িয়ে পড়া প্রভাব সত্ত্বেও সর্বোচ্চ সংযম অনুশীলন করছে।
পরে মেরিলেবোনের লর্ড স্বরাজ পল তার সঙ্গে সৌজন্য টেলিফোন কল করেন।
যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের প্রবীণ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের জন্য তার প্রশংসা পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি দু’দেশের মধ্যে শিক্ষা ও ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব আরও এগিয়ে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।