ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে সারাদেশে ৩২ হাজার ৯০৪টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ঘর বিতরণের উদ্বোধন করবেন।
রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী ফরিদপুর জেলার নগরকান্দার কৈচাইল ইউনিয়ন, বরগুনা সদর উপজেলার গৌরিচোন্না ইউনিয়ন, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী ইউনিয়ন এবং চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।
সূত্র জানায়, ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বাড়ি দেয়ার জন্য সরকারের নেয়া উদ্যোগের একটি অংশ হবে এটি। কারণ প্রধানমন্ত্রী বার বার জোর দিয়ে বলেছেন, দেশে কেউ ঘর ছাড়া থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যৈষ্ঠ সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, প্রতিটি ইউনিটে থাকবে দুটি ঘর, একটি রান্নাঘর, একটি টয়লেট এবং একটি বারান্দা। ভ্যাট ও ট্যাক্স ছাড়াই যার মূল্য দুই লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা।
তিনি বলেন, ট্যাক্স ও ভ্যাটসহ এর পরিমাণ তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ঘর পাচ্ছে রাজশাহীর ১১৪৯ পরিবার
তিনি আরও বলেন, ঘরের পাশাপাশি প্রতিটি পরিবারকে দুই শতাংশ জমির মালিকানার দলিলও দেয়া হবে।
সরকার প্রথম ধাপে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি ৬৩ হাজার ৯৯৯টি ঘর দিয়েছে এবং ২০২১ সালের ২০ জুন ৫৩ হাজার ৩৩০টি ঘর দিয়েছে। এছাড়া তৃতীয় ধাপে ৬৫ হাজার ৬৭৪টি ঘর নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, দ্বীপাঞ্চলের জন্য বিশেষ নকশা করা ঘরের সংখ্যা হল এক হাজার ২৪২টি। এছাড়া চরের জমিতে থাকা গৃহহীন পরিবারগুলোকে বহনযোগ্য ঘর দেয়া হয়। যাতে করে তারা ভূমিধসের সময় তাদের বাড়ি স্থানান্তর করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর জ্যৈষ্ঠ সচিব বলেন, সারাদেশে অবৈধ দখল থেকে উদ্ধার করা খাসজমির পরিমাণ পাঁচ হাজার ৫১২ দশমিক চার একর, যার আনুমানিক মূল্য দুই হাজার ৯৬৭ দশমিক ৯ কোটি টাকা। আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য সরকার এখন পর্যন্ত ১৬৮ দশমিক ৩২ একর জমি কিনেছে, যার মূল্য ১১৫ দশমিক ৩৩ কোটি টাকা।
তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া জানান, দেশে ভূমি ও গৃহহীন পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনে ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্প নেয়া হয়। এর আওতায় ১৯৯৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পাঁচ লাখ সাত হাজার ২৪৪টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কেউ গৃহহীন থাকবে না- তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দরিদ্র পরিবারগুলোকে বাড়ি ও জমি দেয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: মুজিববর্ষ: ঠাকুরগাঁওয়ে জমি-নতুন ঘর পাচ্ছেন ২৬১২ ভূমিহীন
একসঙ্গে এত মানুষকে বিনামূল্যে বাড়িঘর দেয়ার ঘটনা পৃথিবীতে নজিরবিহীন বলেও মন্তব্য করেন তোফাজ্জল হোসেন মিয়া
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এত গৃহহীন পরিবারকে ঘর উপহার দিয়ে বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলেন, দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, তাই গৃহহীন মানুষদের আবাসনের অধিকার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তহবিল বরাদ্দ অব্যাহত রাখবে সরকার।
আশ্রয়ণ প্রকল্পকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করে মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া বলেন, ‘এতে একজন মানুষের জীবনযাত্রার মান আমূল উন্নত হয় (স্থায়ী বাড়ি পাওয়ার পর)। এটি আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) আটটি লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।’