সম্প্রতি ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের স্মরণে শনিবার (২১ অক্টোবর) বাংলাদেশে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সারাদেশের সব মসজিদে জুমার এবং অন্যান্য নামাজের পরে নিহত ফিলিস্তিনিদের জন্য দোয়া করার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ইসরায়েলের নৃশংস হামলার শিকার শুধু মুসলিমরাই নয়, খ্রিস্টান ও ইহুদিরাও এর শিকার।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁও এলাকার সড়ক ভবনে একযোগে ৩৯টি জেলায় ১৫০টি সেতু এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নবনির্মিত ১৪টি ওভারপাস উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন: একদিনে ৩৯ জেলায় ১৫০টি সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বাংলাদেশ পাশে থাকবে। কারণ ফিলিস্তিনের ওপর বারবার হামলা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান হলো অবিলম্বে এই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। ইসরায়েলের দখল করা ভূমি ফিলিস্তিনের জনগণকে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। ফিলিস্তিনের জনগণকে তাদের ভূমি ফিরিয়ে দিতে হবে।’
ঢাকায় অবস্থিত ওআইসি সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বুধবারের বৈঠকের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি রাষ্ট্রদূতদের বলেছেন ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরাও তাদের সঙ্গে আছি। আমাদের লড়াই করতে হবে। তাদের ওপর বার বার হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এটা মেনে নিতে পারি না।’
তিনি বলেন, ইসরায়েল যেভাবে ফিলিস্তিনের একটি হাসপাতাল ও অন্যান্য স্থানে হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনের নারী ও শিশুসহ নিরপরাধ মানুষ হত্যা করেছে, তার নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের বোমা হামলায় নিহত বা আহত শিশুদের রক্তমাখা মুখ দেখা অসহনীয়।’
তিনি বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য বাংলাদেশ ওষুধ, শুকনো খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠাবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নারী ও শিশুদের জন্য ওষুধ, শুকনো খাবার এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠাব। আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের যা কিছু সম্পদ আছে আমরা সবসময় তা নিয়ে মানুষের পাশে আছি।’
প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ফিলিস্তিনিদের জন্য ওষুধ পাঠানোর পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।
বিএনপিকে খোঁচা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, লক্ষ্য করা গেছে এ ধরনের ঘটনার পেছনে যারা অসন্তুষ্ট হবেন তাদের ভয়ে অনেকেই এ ব্যাপারে এখনও নীরব রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘যারা নির্যাতিত মানুষের পক্ষে আওয়াজ তোলার সাহস পায় না, তারা (সরকারের) পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে; যা দুর্ভাগ্যজনক।’
অনুষ্ঠানে তিনি ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর ১ হাজার ১০০ মিটার কেওয়াটখালি সেতু এবং ১ হাজার ৪৭১ মিটার রহমতপুর সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের জন্য নবনির্মিত ডিটিসিএ ভবন উদ্বোধন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের বিআরটিএ অটোমেটেড মোটর ভেহিকেল ফিটনেস টেস্ট সেন্টার, বিআরটিসি বাস ডিপো এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবনে এক অনুষ্ঠান থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এসব অবকাঠামো উদ্বোধন করেন। ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজ মাঠ এবং মিরপুরে বিআরটিএ অফিস থেকেও ভার্চুয়ালি যুক্ত হন দর্শকরা।
আরও পড়ুন: ওআইসি প্রতিবেশিদের সংলাপের মাধ্যমে তাদের সমস্যা সমাধানের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর