থিঙ্ক ট্যাঙ্ক দ্য সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) শুক্রবার তার বাজেট-পরবর্তী পর্যালোচনায় বলেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতি উভয় ব্যাপারে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে; বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ সংকটের আলোকে সেগুলো অর্জনের জন্য কোনো বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ না রেখে।
সিপিডি বলেছে, বাজেট কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করেছে, তবে রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত নয়, তাই ঘাটতি অর্থায়নের পরিমাণ শেষ পর্যন্ত বাড়বে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন গুলশানের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত বাজেট পরবর্তী পর্যালোচনার নেতৃত্ব দেন এবং কয়েকটি টিভি চ্যানেল তা সরাসরি সম্প্রচার করেন।
তিনি বলেন, বাজেট এমন এক সময়ে পেশ করা হয়েছে যখন বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ব্যক্তিগত ঋণের প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশে অনুমান করা হয়েছিল, যা ২০২২-২৩ সালে ছিল ১৪ দশমিক ১ শতাংশ। ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক ৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন: বাজেট অবাস্তব, এভাবে মূল্যস্ফীতি রোধ করা সম্ভব নয়: সিপিডি
একটি প্রশ্নের উত্তরে সিপিডি’র বিশিষ্ট ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০২৩-২৪ সালে রাজস্ব আয় ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রকৃত রাজস্ব অর্জনের তুলনায় প্রায় ৩৯ শতাংশ বাড়াতে হবে। যা ‘একেবারে উচ্চাভিলাষী’ বা বলা যায় অতিউচ্চাভিলাষী। একটি ভুল ধারণার উপর ভিত্তি করে বাজেটের প্রবৃদ্ধি অনুমান করা হয়েছে।
মোস্তাফিজ বাজেটের আলোকে আর্থিক নীতি এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মতো একটি মুদ্রানীতির আশা করেছেন।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাজেটে কৌশলগতভাবে পুঁজিবাজার উন্নয়ন নীতিকে এড়িয়ে গেছে, যা এ ধরনের উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।
তিনি আরও বলেন, ‘একটি বাস্তবসম্মত ও টেকসই পুঁজিবাজার প্রতিষ্ঠা ছাড়া বিনিয়োগের অর্থায়ন বাড়তে পারে না, সরকারি প্রণোদনাভিত্তিক পুঁজিবাজার নতুন বিনিয়োগে ভূমিকা রাখতে পারে না।’
সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, বহিরাগত অর্থ বকেয়া বা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের বিষয়ে কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
সিপিডি প্রক্ষেপণে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বর্তমান বাজেট অর্জনের তুলনায় প্রায় ৩৯ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা হবে এবং ১ দশমিক ৪২ লাখ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে হবে।
আরও পড়ুন: ৭৫ হাজার কোটি টাকার কম রাজস্বে বাড়বে বাজেট ঘাটতি: সিপিডি
সম্পত্তি কর থেকে ৬ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত কর আদায় করা যাবে: সিপিডি