জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর প্রোগ্রামের (চতুর্থ এইচপিএনএসপি) প্রথম সংশোধনীতে এর ব্যয় ৩০ হাজার ৪৪৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা বেড়েছে এবং প্রকল্পের সময়সীমা এক বছর বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত অনুমোদন করেছে।
একনেক সভায় মোট ১১টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে যার সামগ্রিক প্রাক্কলন ব্যয় ৩৭ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা (শুধুমাত্র চারটি সংশোধিত প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় গণনা)।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলানগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এই অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভায় যুক্ত হন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
মন্ত্রী বলেন, ‘আজকের বৈঠকে সাতটি নতুন ও চারটি সংশোধিত— মোট এগারটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে এবং মোট আনুমানিক ব্যয় ৩৭ হাজার ৫০৭ কোটি ২২ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন: জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে আবারও ক্ষমতায় আনবে: শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, ব্যয়ের মধ্যে ৩৬ হাজার ২৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা সরকারি তহবিল থেকে, আর ৩৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তহবিল থেকে এবং বাকি এক হাজার ৪৪৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা প্রকল্প ঋণ হিসাবে বৈদেশিক উৎস থেকে আসবে।
পরিকল্পনা কমিশনের মতে, ৪র্থ এইচপিএনএসপি -এর খরচ মূল লেআউট থেকে ১৫ হাজার ৪৮৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৯৩৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
নতুন সাতটি প্রকল্পের মধ্যে সবচেয়ে বড়টি হচ্ছে ‘শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজির জন্য প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ’ প্রকল্প, যা মাদারীপুরের শিবচরে বাস্তবায়িত হবে।
আইসিটি বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ দেশের প্রথম সীমান্ত প্রযুক্তি-ভিত্তিক বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর
প্রধান প্রকল্প কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ৭০ দশমিক ৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন, আইওটি, বিগ ডেটা বা ডেটা সায়েন্স, ফরেনসিক বা সাইবার সিকিউরিটি, মেশিন লার্নিং, ব্লক চেইন এবং চিপ ডিজাইন, সাত হাজার ৭৪২-বর্গ মিটার নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রদান। প্রশাসনিক ভবন, ৪৩ হাজার ২৮৭-বর্গ মিটার গবেষণা উন্নয়ন ভবন এবং এছাড়াও বিজনেস সেন্টার এবং ৯ হাজার ৭৬০-বর্গ মিটার ডরমিটরি এবং আট হাজার ৮০০-বর্গ মিটার গ্যালারিসহ ফুটবল মাঠ।
অন্য ছয়টি নতুন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে -মোংলা কমান্ডার ফ্রোটিলা ওয়েস্ট (কমফ্লোট ওয়েস্ট)-এর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা এবং ময়মনসিংহ (ত্রিশাল) মিলিটারি ফার্ম আধুনিকায়ন প্রকল্প, বাংলাদেশের ১০টি অগ্রাধিকার ভিত্তিক শহরে সমন্বিত স্যানিটেশন ও হাইজিন প্রকল্প, ঢাকা পানি সরবরাহ নেটওয়ার্ক উন্নয়ন প্রকল্প, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অধিভুক্ত এলাকায় বর্জ্য অপসারণ ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প, সড়ক মেরামতে ব্যবহৃত আধুনিক যান-যন্ত্রপাতি সংগ্রহ এবং ম্যাকানাইজড পার্কিং স্থাপনের মাধ্যমে যানজট নিরসন প্রকল্প; ঢাকার আজিমপুরস্থ মাতৃসদন ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা, সিনিয়র স্টাফ নার্স ও প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য হোস্টেল বা ডরমিটরি নির্মাণ প্রকল্প।
সভায় অনুমোদিত অন্য তিনটি সংশোধিত প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণ, গোপালগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই নেটওয়ার্ক আপগ্রেড করা।
ব্রিফিংয়ের সময় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম,পরিকল্পনা সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মামুন-আল-রশীদ, মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: হতাশাবাদীদের পেছনে ফেলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী