খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, করোনার কারণে সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক অবস্থা স্থবির হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে খাদ্য পণ্যসহ অন্যান্য পণ্যের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। যেসকল পণ্য আমদানি নির্ভর সেসব পণ্যকে পুঁজি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দেশে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছে। ইতোমধ্যে সকল জেলা প্রশাসক ও নির্বাহী অফিসারদের এই সব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সোমবার (১৪ মার্চ) বেলা ১১টায় নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় চার হাজার পরিবারের মাঝে পারিবারিক সাইলো বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বাজারে মোটা চালের দাম বাড়েনি: খাদ্যমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, কৃষকের ফসলের নায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ও কৃষকের সুবিধার কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারাদেশে ২০০ পেডি সাইলো নির্মাণ করা হচ্ছে। যার একেকটির ধারণ ক্ষমতা পাঁচ হাজার মেট্রিকটন। ইতোমধ্যে একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ৩০টি পেডি সাইলো নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছেন।
তিনি বলেন, পেডি সাইলো নির্মিত হলে প্রান্তিক কৃষক সহজেই ধান সরবরাহ করতে পারবেন। কৃষক ভেজা ধান নিয়ে এলেও তা রাখার সুযোগ থাকছে। ভেজা ধান রাখলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা শুকিয়ে যাবে। ভেজার অভিযোগে আর কোন কৃষকের ধান ফেরত নিয়ে যেতে হবে না।
খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, খেটে খাওয়া মানুষ যারা দিনে মাঠে কাজ করে বাড়িতে থাকতে পারে না তাদের খাদ্য শস্য সংরক্ষণে পারিবারিক সাইলো বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতিটি পারিবারিক সাইলো টেকসই ও খাদ্য সংরক্ষণে নিরাপত্তার নিশ্চয়তার প্রতীক।
টানা দুই বছর পানি, ধান কিংবা চাল যেকোনো খাবারকে শুষ্ক ও সতেজ রাখতে সহায়ক। আর প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্যোগপ্রবণ উপকূলীয় এলাকার মানুষের জন্য এই সাইলো বিশেষ আশীর্বাদ স্বরূপ।
আরও পড়ুন: কোনভাবেই চালের বাজার অস্থিতিশীল করতে দেয়া হবে না: খাদ্যমন্ত্রী
একটা পরিবার এই হাউজহোল্ড সাইলোতে রাখতে পারবেন ৪০ কেজি ধান, ৫৬ কেজি চাল এবং ৭০ লিটার পানি। মাটিতে পুঁতে রেখে খাদ্য সংরক্ষণ করতে পারবেন উপকারভোগীরা। হঠাৎ বন্যা, প্রকৃতিক দুর্যোগ এবং আকস্মিক বন্যায় সব কিছুই ভাসিয়ে একটি পরিবারকে নিঃস্ব করে দেয়া বাংলাদেশের মানুষের জন্য নিয়মে পরিণত হয়েছে। তবে, আপদকালীন দুর্যোগের জন্য খাদ্য মজুত রাখা এই সাইলোগুলো ত্রাণকর্তার মতো কাজ করবে।
রানীনগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার সুশান্ত কুমার মাহন্তর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন হেলাল, রাজশাহী বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জিএম ফারুক হোসেন পাটোয়ারী, রানীনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ দুলুসহ প্রমুখ বক্তব্য দেন।