কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে নারিকেল গাছের ডাব খাওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৭ মার্চ) সকালে দুই পক্ষ হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেছেন।
এ ঘটনায় দুইটি মামলায় ৪৪ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাত আসামি রয়েছে আরও ২০ থেকে ৩০ জন।
অপরদিকে মামলায় গত রবিবার আটক উভয়পক্ষের চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার দুপুরে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারো হলেন- উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের উত্তর চাদপুর গ্রামের মো. সজল (২০), মো. ওবাইদুল বিশ্বাস (৩৫), মো. বিপ্লব (২৮) ও মো. আলামিন ওরফে আমিন (৩০)।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে যদুবয়রা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সবুজ আলী ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি আকাশ রেজার সঙ্গে বিরোধ চলে আসছে। আগামী ৯ এপ্রিল উত্তর চাঁদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
আরও পড়ুন:ফটিকছড়িতে ছুরিকাঘাতে প্রবাসী খুন, গ্রেপ্তার ২
ইতোমধ্যে উভয়পক্ষের ১৩ জন সমর্থক নির্বাচনের মনোয়ানপত্র জমাও দিয়েছেন।
গত শনিবার দুপুরে ওই এলাকার মোল্লাপাড়ার নির্মাণাধীন সড়কের একটি নারিকেল গাছের ডাব খাওয়াকে কেন্দ্র করে দু'পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যায় উত্তর চাঁদপুর বাজারে যুবলীগ নেতা সবুজ ও ছাত্রলীগ নেতা আকাশ রেজার কার্যালয়ে হামলা চালায় প্রতিপক্ষরা।
এসব ঘটনার জেরে গত রবিবার উভয়পক্ষের মধ্যে ফের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এসময় উভয়পক্ষের চারজনকে আটক করে পুলিশ।
আরও জানা গেছে, সোমবার সকালে আওয়ামী লীগ নেতা তৌহিদুল ইসলামের চাচা আইয়ুব আলী বাদী হয়ে হামলা ও ভাঙচুর মামলা করেন। মামলায় ২৩ জনকে আসামি করেন তিনি।
এমামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১০/১৫ জনকে।
এরপর একই সময়ে ছাত্রলীগ নেতা আকাশ রেজা বাদী হয়ে তার আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর ও সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগে থানায় মামলা করেন।
এ মামলায় ২১ জনকে আসামি করেন তিনি। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১০/১২ জনকে।
ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গ্রেপ্তার চারজনকে সোমবার দুপুরে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
এবিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা আকাশ রেজা বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনায় প্রতিপক্ষরা তার কার্যালয়ে ভাঙচুর করেছে, বঙ্গবন্ধুর ছবি ছিঁড়ে ফেলেছেন এবং সমর্থকদের আহত করেছে। তিনি সুষ্ঠু বিচারের আশায় থানায় মামলা করেছেন। তিনি আর মারামারি চান না।’
আওয়ামী লীগ নেতা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘তার ভাই বাদি হয়ে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে মামলা করেছেন।’
তিনিও আর মারামারি চান না, গ্রামে শান্তিতে বসবাস করার আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহসীন হোসাইন বলেন, আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা করেছেন। মামলায় পূর্বে আটককৃত চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন: খুলনা আ. লীগ নেতা হত্যা: ৩১ জনের নামে মামলা, গ্রেপ্তার ৩