প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্ব অর্থনীতিকে চরমভাবে প্রভাবিত করেছে এবং অনেক উন্নত দেশে খাদ্য ঘাটতি সৃষ্টি করেছে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২২’ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘করোনা মোকাবিলা করে আমরা বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করায় জনগণ এখন দেশের ছোটখাটো সমস্যাও জানতে পারছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জানি যে অনেক উন্নত দেশেও ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি দেখা গেছে, সারা বিশ্বে অনেক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে।
আরও পড়ুন: ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২’ তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, অনেক দেশের এই সমস্যাগুলো মিডিয়ায় তুলে ধরা হয়নি, কিন্তু বাংলাদেশে মিডিয়া এটা নিয়ে লিখতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি খাতে ইলেকট্রনিক মিডিয়া খোলার আগে দেশে একটি মাত্র টেলিভিশন ও একটি রেডিও স্টেশন ছিল।
তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তি এবং বিপুল সংখ্যক টেলিভিশন ও রেডিও স্টেশনের মাধ্যমে এখন মানুষ ছোটখাটো সমস্যাও জানতে পারে। কিন্তু আরও অনেক দেশ আছে যারা এই ধরনের সমস্যা প্রকাশ করে না।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এখন আমরা আমাদের নিজস্ব সম্পদ থেকে ৯০ শতাংশ অর্থায়নে আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে পারি।’
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার স্বাধীনতার সুফল দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমাদের লক্ষ্য এই স্বাধীনতার সুফল প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া এবং আমরা এই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ নয়জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে 'স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২' তুলে দেন।
এ বছর স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে পুরস্কার পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী, শহীদ কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা (বীর বিক্রম), আব্দুল জলিল, সিরাজ উদ্দীন আহমেদ, প্রয়াত মোহাম্মদ ছহিউদ্দিন বিশ্বাস, প্রয়াত সিরাজুল হক সম্মাননা দেয়া হয়।
চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল ইসলাম, স্থাপত্যে প্রয়াত স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেনকে এই পুরস্কার দো হয়।
আরও পড়ুন: চলচ্চিত্রে গণমানুষের আত্মত্যাগ তুলে ধরার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
দৈনিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার ৫১৩ মেগাওয়াটে উন্নীত করে দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন কভারেজের আওতায় আনার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়া হয়। এছাড়া গবেষণা ও প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটকে (বিডাব্লিউএমআরআই) এই পুরস্কার দেয়া হয়।
পুরস্কারপ্রাপ্তদের পক্ষ থেকে বিতরণী অনুষ্ঠানে ডা. কনক তার অনুভূতি প্রকাশ করেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতিবছর স্বাধীনতা পুরস্কার দিচ্ছে সরকার।