প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর পরিণতি মোকাবিলায় আর্থিক সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে না।
বৃহস্পতিবার তার কার্যালয়ে ইইউ কমিশনার ফর হোম অ্যাফেয়ার্স ওয়াইভা জোহানসনের নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
২০০৯ সালে বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী উন্নত দেশগুলো ২০২০ সালের মধ্যে পরিণতি মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রতি বছর সহায়তা হিসেবে ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয়।
প্রতিশ্রুতি এখনও পূরণ না হওয়ায় কিছু উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে তাদের উষ্ণতা নির্গমন হ্রাস ত্বরান্বিত করার জন্য অবিশ্বাস এবং অনীহা তৈরি হয়েছে।
ইহসানুল করিম বলেন, ইইউ প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের জন্য তাকে অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, আগামী বছর ইইউ ও বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উদযাপন করবে।
তারা রোহিঙ্গাসহ অভিবাসন ইস্যুতেও আলোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা।
তিনি আরও বলেন, নতুন শিশুর জন্মের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিনিয়ত এই সংখ্যা বাড়ছে।
আরও পড়ুন: এখন মেগাপ্রজেক্ট নয় জনকল্যাণমুখী প্রকল্প নিয়ে আসুন: প্রধানমন্ত্রী
হাসিনা আরও বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পদক্ষেপ নেয়া উচিত, যার জন্য সারা বিশ্ব এখন ভুগছে।
ঝুঁকিপূর্ণ পথ ব্যবহার করে বাংলাদেশিদের অভিবাসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার এটা বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে।
তিনি বলেন, আইওএম-এর সহায়তায় আমরা কয়েকজন বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে নিয়েছি।
ইভা জোহানসন বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইইউ বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
তিনি উল্লেখ করেছেন যে ইইউ বর্তমানে সাড়ে চার মিলিয়ন ইউক্রেন শরণার্থীকে আতিথ্য দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ইইউভুক্ত দেশগুলোতে অনেক বাংলাদেশি বসবাস করছেন।
‘কিছু মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে প্রবেশের চেষ্টা করে। আমাদের জনবল দরকার, এখান থেকে (বাংলাদেশ) মানুষ যদি আইনি পথে আসে তাহলে উভয়ের জন্যই লাভজনক হবে।
তারা জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু নিয়েও আলোচনা করেন।
জোহানসন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের পদক্ষেপ জানতে চান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যেই নিজস্ব সম্পদ দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ও প্রশমনে পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমনে সরকারের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সারাদেশে অনেক গাছ লাগানো হচ্ছে। বাংলাদেশ যেকোনও ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলা করতে সক্ষম।
নারীর ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের গৃহীত নীতির কারণে নারীরা এখন প্রতিটি খাতে ভালো কাজ করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার তৃণমূলের উন্নয়নে বিশ্বাসী। ‘আমাদের লক্ষ্য তৃণমূল মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করা।’
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস।
আরও পড়ুন: টানা ক্ষমতায় থাকায় দেশের উন্নয়ন দৃশ্যমান হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
ঢাকার বাচ্চারা ফ্ল্যাটে থেকে ফার্মের মুরগির মতো হয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী