তিনি বলেন, ‘আমি কার্যকর এবং শক্তিশালী আন্তর্জাতিক জলবায়ু জোট গঠনে গুরুত্ব দিতে চাই যা বিশ্বে আগামী শতাব্দীর মধ্যে কার্যকরভাবে কার্বন নিঃসরণ কমাতে পারবে। তাই, আমি আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে বাঁচাতে জরুরি ও সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপের নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
প্যারিস চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনের রূপরেখা সম্মেলনের (ইউএনএফসিসিসি) এলডিসি গ্রুপের চেয়ারম্যান ভুটান সরকার আয়োজিত ‘থিম্পু অ্যাম্বিশন সামিট’-এর আঞ্চলিক বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা তার লিখিত ভাষণে বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি দেখিয়েছে যে কত দ্রুত একটি মহামারি বিশ্বে ভয়াবহ সংকট তৈরি করতে পারে। এটি আমাদের এটাও শিখিয়েছে যে বিশ্বব্যাপী সংকট মোকাবিলার একমাত্র উপায় হলো দৃঢ় সম্মিলিত প্রয়াস।’
প্যারিসে কপ-২১ সম্মেলন চলাকালে সদস্যরা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা অর্জনের লক্ষ্যে এক চুক্তিতে সম্মত হয়েছিলেন। সে লক্ষ্য হলো বিশ্ব তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা, যোগ করেন তিনি।
‘তবে, সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের বর্তমান প্রচেষ্টা যে অপর্যাপ্ত তা আমাদের স্বীকার করতে হবে। আমাদের এ গ্রহকে বাঁচাতে বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকে সীমিত করার জন্য বাধ্যতামূলক, গতিশীল এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার পরিকল্পনা দরকার,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
জলবায়ুজনিত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য দক্ষিণ এশিয়াকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমুদ্রের স্তর এক মিটার বেড়ে গেলে এ অঞ্চলের উপকূলীয় ও ছোট দ্বীপে বসবাসকারী লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে পড়বে।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নে কোনো দায় না থাকলেও জলবায়ুজনিত প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা করার সীমিত ক্ষমতা এবং নির্দিষ্ট ভৌগলিক বৈশিষ্ট্যের করণে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হলো বাংলাদেশ, বলেন হাসিনা।
‘এশীয় উন্নয় ব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, কার্বনের বর্তমান নির্গমন অব্যাহত থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের জিডিপির ২ শতাংশের সমপরিমাণ এবং ২১০০-এর মধ্যে ৯.৪ শতাংশ পরিমাণ বার্ষিক অর্থনৈতিক ক্ষতি দাঁড়াতে পারে। আমি নিশ্চিত যে অন্য সব এলডিসি এবং জলবায়ুতে ক্ষতিগ্রস্ত দুর্বল দেশগুলোর জন্য এটি সত্য,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, কপ-২৬ প্রেসিডেন্ট অলোক শর্মা, ইউএনএফসিসিসি'র নির্বাহী সচিব প্যাট্রিসিয়া এসপিনোসা প্রমুখ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন।