ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর কয়েক ঘণ্টা পর অভিনেত্রী মাহিয়া মাহিকে জামিন দিয়েছেন গাজীপুরের একটি আদালত।
শনিবার (১৮ মার্চ) গাজীপুর জেলা কারাগারের সুপার আনোয়ার হোসেন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মাহিয়া মাহি দুটি মামলায় জামিন পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: সৌদি আরব থেকে অবতরণের পর ঢাকা বিমানবন্দরে মাহিয়া মাহি গ্রেপ্তার
এর আগে ফেসবুক লাইভে গিয়ে ‘পুলিশের মানহানি’ করার অভিযোগে শুক্রবার রাতে মাহি ও তার স্বামী রাকিবের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন বাসন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রোকন মিয়া।
বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হলেও মামলার আসামি স্বামী রাকিব সরকার দেশে ফেরেননি। পরে গাজীপুরের আদালত মাহিকে কারাগারে পাঠায়।
সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ কমিশনার ও পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অভিযোগে শুক্রবার রাতে মাহি ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। শনিবার দুপুরে সৌদি আরব থেকে আসার পরপরই ঢাকা বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবির উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, গাজীপুর পুলিশের একটি দল মাহিকে গ্রেপ্তার করে বাসন থানায় নিয়ে যায়।
অন্যদিকে মারধর, ভাঙচুর ও জমি দখলের অভিযোগে মাহি ও তার স্বামীসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে বাসন থানায় আরেকটি মামলা করেছেন ইসমাইল হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আবু তোরাব মোহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেন, ফেসবুকে লাইভে যাওয়ার পর গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলামসহ পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অভিযোগে পুলিশ ওই দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
আরও পড়ুন: সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মাহিয়া মাহিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মামলার বিবৃতি অনুযায়ী, মাহি তার ফেসবুক পেজ থেকে শুক্রবার ভোরে লাইভে গিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে।
লাইভে তিনি বলেন, ‘ইসমাইল হোসেন ও মামুন সরকার তাদের লোকজনের মাধ্যমে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের কাছে মাহির মালিকানাধীন সনি রাজ কার প্যালেস নামের একটি গাড়ির শোরুমে হামলা চালায়।’
এছাড়া গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ঘুষ নিয়ে ‘হামলাকারীদের সমর্থন’ করেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন অভিনেত্রী ও তার স্বামী।
তিনি আরও বলেন, মক্কা থেকে দেশে ফেরার পর গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি।
ফেসবুক লাইভে মাহিয়ার স্বামী রাকিব অভিযোগ করেন, পুলিশ গাড়ির শোরুমের নিরাপত্তারক্ষীদের গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে গাজীপুর শহরের ইটাহাটা এলাকায় রড বাইন্ডিং কারখানার মালিক ও একটি মামলার বাদী ইসমাইল হোসেন অভিযোগে বলেন, গত ১০ বছর ধরে ওই এলাকায় জমি কিনে কারখানা চালাচ্ছেন।
শুক্রবার রাকিব ও মাহিয়ার পক্ষে কয়েকজন মিলে কারখানায় হামলা ও ভাঙচুর করে বলে জানান তিনি।
অভিযোগে বলা হয়েছে, জমি দখলের চেষ্টাকালে তারা কারখানায় পাঁচজনকে পিটিয়ে আহত করে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোল্লা নজরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিনেত্রী মাহিয়া মাহি ফেসবুকে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে মিথ্যা কথার মাধ্যমে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করেছেন।
ব্যবসায়ী ইসমাইলের দায়ের করা মামলায় এ পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ মামলায় মাহি ও তার স্বামী প্রধান আসামি (হুকুমের আসামি) ছিলেন বলে জানান কমিশনার নজরুল।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা: অভিনেত্রী মাহিয়া মাহিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে