দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী।
বুধবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করা হয়।
রিটকারী ১০ আইনজীবী হলেন-মোহাম্মদ শিশির মনির, রেজওয়ানা ফেরদৌস, জামিলুর রহমান খান, উত্তম কুমার বনিক, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. তারেকুল ইসলাম, মীর ওসমান বিন নাসিম, সৈয়দ মোহাম্মদ রায়হান, মো.সাইফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ নওয়াব আলী।
রিটে দুদকের চেয়ারম্যান, সচিব, কমিশনার (অনুসন্ধান), কমিশনার (তদন্ত), পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) এবং চাকরিচ্যুত সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দীনকে বিবাদী করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুদক কর্মকর্তাকে অপসারণে সহকর্মীদের প্রতিবাদ
এ বিষয়ে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, ‘আমরা কোনো ব্যক্তির পক্ষে রিটটি করিনি। আমরা আলোচিত ওই ঘটনায় চাকরিচ্যুত শরীফ উদ্দীন এবং দুদকের পাল্টাপাল্টি যে বক্তব্য গণমাধ্যমে এসেছে তার তদন্ত চেয়েছি। কারণ তদন্তেই প্রকৃত সত্য উঠে আসবে জনমনে বিভ্রান্তি দূর হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের প্রয়োজনে একটি কমিটি গঠন এবং ওই কমিটি কর্তৃক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা রিটে চাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট নথি তলব করে বিষয়টি পর্যালোচনারও আবেদন জানানো হয়েছে।
এর আগে শরীফ উদ্দিনের জীবনের নিরাপত্তাসহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে চিঠির মাধ্যমে আবেদন করেছিলেন এই ১০ আইনজীবী। তবে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শরীফ উদ্দিনের ঘটনায় সংক্ষুব্ধ হলে ওই আইনজীবীদের যথাযথ আবেদন (রিট) নিয়ে আসার কথা বলেন। সে অনুযায়ী আজ রিট করলেন ওই ১০ আইনজীবী।
উল্লেখ্য, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে কমিশনের উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
এই সিদ্ধান্তকে অন্যায় আখ্যা দিয়ে পরের দিন ওই আদেশ প্রত্যাহার এবং ৫৪(২) বিধি বাতিলের দাবিতে দুদক সচিবকে স্মারকলিপি দেন কমিশনের কর্মকর্তারা। পাশাপাশি দুদকের প্রধান কার্যালয়সহ সংস্থাটির অন্যান্য দপ্তরে মানববন্ধনও করা হয়।
আরও পড়ুন: ইউজিপিপি প্রকল্পে দুর্নীতি: ৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
তবে ২০ রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ এনে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন দাবি করেন, ‘শৃঙ্খলা ও সুষ্ঠু কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে’ বিধি মোতাবেক তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
এরপর গণমাধ্যমে লিখিত জবাবে শরীফ উদ্দিন তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আপোস না করে প্রভাবশালীদের দুর্নীতি নিয়ে তদন্তের কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
এসব কারণে তাকে জীবননাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে- এমন অভিযোগে গত ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রামের খুলশী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন শরীফ উদ্দিন।