নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকার অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে নওগাঁর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন ওরফে টনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় শিশু ধর্ষণের পর হত্যা: যুবকের মৃত্যুদণ্ড
রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি শুনানি করেন- জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আব্দুল খালেক।
তিনি বলেন, সমস্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সরকারি কৌঁসুলি আরও বলেন, ‘রায়ে হাইকোর্ট বিভাগে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা সাপেক্ষে আসামি সালাউদ্দিনকে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, এ রায় হত্যা মামলার ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আতিকুর রহমান মামলাটি শুনানি করেন।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে নিয়ামতপুর উপজেলার ধানসা গ্রামের আবু কালামের মেয়ে তুকাজ্জেবার (২৪) সঙ্গে নাচোলের মুরাদপুর গ্রামের সালাউদ্দিনের বিয়ে হয়। স্বামীকে নিয়ে ২০২০ সালের ২৯ জুন বাবার বাড়ি বেড়াতে আসে তুকাজ্জেবা। এরপর ১ জুলাই তার গলায় কাঁচি দিয়ে জখম করে সালাউদ্দীন। চিৎকারের শব্দ পেয়ে দরজা ভেঙে আহত অবস্থায় তুকাজ্জেবাকে উদ্ধার করে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। স্ত্রীকে আহত করে পালিয়ে যাওয়ার সময় সালাউদ্দিনকে স্থানীয়রা আটকে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
এ ঘটনায় নিহত তুকাজ্জেবার বাবা আবু কালাম বাদী হয়ে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে নিয়ামতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা ২০২২ সালের ২২ জুন আদালতে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের মোট ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে আদালতে ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের দীর্ঘ সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেন নওগাঁর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: শেরপুরে ১৫ বছর পালিয়ে থাকার পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার