রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা সেটি করপোরেশন (কেসিসি) ও জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে ময়ূর নদের বুড়ো মৌলভীর দরগা এলাকা থেকে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। অভিযানে উপস্থিত ছিলেন কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কাউন্সিলরসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ সময় কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ময়ূর নদ ও ২৬টি খালে যতদিন অবৈধ স্থাপনা থাকবে ততদিন উচ্ছেদ অভিযান চলবে। এর আগে ময়ূর নদী ও সংলগ্ন ২৬টি খাল এলাকা থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে মাইকিং করে জেলা প্রশাসন।
কেসিসি সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে ৪৬০ জন দখলদারের তালিকা তৈরি করা হয়। নদী ও খাল দখল করে তৈরি স্থাপনার সংখ্যা ৩৮২টি। এর মধ্যে ময়ূর নদে ৭৯ জন ব্যক্তি ৬৩টি অবৈধ স্থাপনা তৈরি করেছেন বলে জরিপে উঠে আসে।
মহানগরীসহ আশপাশের খাল ও নদী বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে দুই পাড় দখল করা হয়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে পানি বাধাগ্রস্ত হয়ে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সামান্য বৃষ্টিতে সড়ক ও ঘরবাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তলিয়ে যায়। অন্যদিকে পানি জমে থাকায় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যে কারণে ময়ূর নদী ও ২৬টি খাল দখলমুক্ত করতে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, দুই যুগ আগেও ময়ূর নদীতে পালতোলা নৌকা চলাচল করতো। অনেক জেলে পরিবারের জীবিকার মূল উপজীব্য ছিল এ নদী। গোসল ও তৈজসপত্র ধোয়ার কাজে নদীর পানি ব্যবহার করতো। অথচ এখন দখল ও দূষণে আর ব্যবহারের উপযোগী নেই। ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ ময়ূর নদীর সঙ্গে আগে রূপসা নদীর সরাসরি সংযোগ ছিল। দখলের কারণে নদী নিজস্বতা হারিয়েছে।
প্রভাবশালীরা স্রোতহীন ময়ূর নদীতে প্রতিদিনই দখল কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। পৈত্রিক সম্পত্তির মতো গাছপালা লাগানো ও চাষাবাদসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার, এমনকি অনেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও পাকা বাড়ি-ঘর, ভবন নির্মাণ করেছিলেন।
ময়ূর নদীকে নাব্য করতে ৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৬ সালে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে খুলনা সিটি করপোরেশন। তাতে পুরোপুরি দখলমুক্ত হয়নি নগরীর খালগুলো।