ডিভোর্স না নিয়ে অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগের মামলায় ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু তামিমা সুলতানা তাম্মীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের জন্য ৯ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত।
সোমবার শুনানি শেষে ঢাকা অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন আদালতে আসামিদের চার্জগঠন (বিচার শুরু) হবে কি না, সে বিষয়ে আদেশের জন্য ৯ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করা হয়।
এদিন মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। তামিমা-নাসিরের আইনজীবী মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করতে শুনানি করেন।
আরও পড়ুন: ক্রিকেটার নাসির-তামিমার বিয়ে অবৈধ: পিবিআই
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী কাজী নাজিবুল্লাহ হিরু আদালতকে বলেন, তামিমা যথাযথভাবে রাকিবকে তালাক দিয়েছেন। তা কার্যকরের বিষয় কাজী অফিসের। নাসিরের সঙ্গে যখন তামিমার বিয়ে হয় তখন কাবিননামায় তালাকপ্রাপ্ত লেখেন তামিমা। রাকিবকে তামিমা তালাক দিয়েছেন এটা তাদের ব্যাপার। এখানে সুমি আক্তারের (তামিমরা মা) কোনো ভূমিকা নেই। তাই মামলার দায় হতে সবাইকে অব্যাহতির আবেদন জানাচ্ছি।
অন্যদিকে শুনানিতে রাকিবের আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, ডির্ভোসের পরেও তামিমা-রাকিব একসঙ্গে থেকেছেন। আইনে আছে যিনি তালাক দেবেন তিনি নোটিশ জারি করবেন। কিন্তু তামিমা নোটিশ জারি করেননি। রবং ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করেছেন। এছাড়াও তালাকের পর রাকিবের নাম ও পরিচয় ব্যবহার করেছেন তামিমা। এ বিষয়ে তামিমার মা সব জানতেন। তাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করতে আবেদন জানাচ্ছি।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক এ বিষয়ে আদেশের জন্য ৯ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।
এর আগে, গত ৩১ অক্টোবর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
তারও আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ক্রিকেটার নাসির হোসেন, তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা ও তামিমার মা সুমি আক্তারকে ৩১ অক্টোবর আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে সমন জারি করা হয়। সেদিন নাসির ও তামিমার বিয়ে অবৈধ বলে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর তদন্তকারী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।
আরও পড়ুন: ক্রিকেটার নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে মামলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ
এরপর মামলার বাদী ও তামিমার প্রথম স্বামী ব্যবসায়ী মো. রাকিব হাসানের পক্ষে তার আইনজীবী ইশরাত জাহান তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। আদালত তাদের ৩১ অক্টোবর আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাকিবকে তালাক দেননি তামিমা। আইনগতভাবে রাকিব তালাকের কোনো নোটিশও পাননি। তামিমা উল্টো জালিয়াতি করে তালাকের নোটিশ তৈরি করে তা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। যথাযথ প্রক্রিয়ায় তালাক না দেয়ায় তামিমা তাম্মী এখনও রাকিবের স্ত্রী হিসেবে বহাল রয়েছেন। দেশের ধর্মীয় বিধিবিধান ও আইন অনুযায়ী এক স্বামীকে তালাক না দিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করা অবৈধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এমন পরিস্থিতিতে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা তাম্মীর বিয়ে অবৈধ।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তামিমার প্রথম স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। ওই দিনই আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপর শুনানি শেষে মামলার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন।