সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে এক যুবক ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা গেছেন।
নিহত নাহিদ হোসেন (২০) ডিলিংক কুরিয়ার সার্ভিসের ডেলিভারি ম্যান হিসেবে কাজ করতেন এবং মঙ্গলবার ওই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় তার মাথায় ইটের আঘাত লাগে।
ঢামেক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. আলাউদ্দিন জানান, নাহিদকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল এবং রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।
তিনি জানান, সংঘর্ষে আহত আরেক যুবক কাপড়ের দোকানের কর্মচারী মুরসালিন (২৬) ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মঙ্গলবার নীলক্ষেত মোড় ঘিরে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক সংঘর্ষে সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীসহ ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সোমবার রাতের উত্তেজনার ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে তাদের মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
আহতদের মধ্যে প্রায় ২৪ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
সংঘর্ষের ফলে সায়েন্স ল্যাব থেকে আজিমপুর পর্যন্ত যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয় এবং মিরপুর রোড ও সংলগ্ন এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
পুলিশ কাঁদানে ও টিয়ারশেল গ্যাস নিক্ষেপ করে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে সন্ধ্যা ৬টার দিকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সকাল থেকেই ওই এলাকার দোকান মালিকরা তাদের দোকানপাট বন্ধ করে রাখেন।
পড়ুন: নিউমার্কেটে সহিংসতার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সোমবার মধ্যরাতে ব্যবসায়ী ও কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে তারা অভিযোগ করে যে কয়েকজন শিক্ষার্থী কেনাকাটা করতে নিউমার্কেটে গেলে কয়েকজন দোকানদারের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দুই শিক্ষার্থীকে মারধর ও ছুরিকাঘাত করা হয়।
রাতে ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যদের হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত মোড়ে মানববন্ধন করতে গেলে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিউমার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত ও উসকানি দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদের সেক্রেটারি ড. মোঃ আব্দুল কুদ্দুস শিকদার বলেন, ‘গত রাতে শুরু হওয়া সংঘর্ষে ঢাকা কলেজের অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।
সংঘর্ষে বেশ কিছু সংবাদকর্মী আহতের খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ইউএনবির ফটোসাংবাদিক আবু সুফিয়ান জুয়েল ও রাকিবুল হাসান, দীপ্ত টিভির সাংবাদিক আসিফ সুমিত ও এর ক্যামেরা পারসন, এসএ টিভির রিপোর্টার তুহিন ও ক্যামেরা পারসন কবির হোসেন, মাই টিভির রিপোর্টার ড্যানি ড্রং ও আরটিভির ক্যামেরা পারসন সুমন দে রয়েছেন।
সংঘর্ষের সময় ডেইলি স্টারের ফটোগ্রাফার প্রবীর দাস ও আজকের পত্রিকার প্রতিবেদক আল আমিন রাজুকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।