নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তার স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান।
সন্ধ্যায় তিনি জিডি করেন বলে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া জানিয়েছেন।
তিনি জানান, স্বামীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে বিকালে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন ডা. জাহানারা।
ওসি জানান, বিকাল ৩টার দিকে ধানমন্ডি পুলিশের একটি দল মুরাদের ধানমন্ডির বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলে।
তিনি বলেন, জাহানারা অভিযোগ করেছেন তার স্বামী তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে। এমনকি তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে বলেও তিনি পুলিশকে জানান।
ওসি বলেন, পুলিশ তাকে থানায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগের পরামর্শ দিলে তিনি পরে জিডি করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন অভিযোগটি তদন্ত করছি এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’
নারীদের প্রতি অশোভন ও অশালীন মন্তব্যের জন্য গত ৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন মুরাদ হাসান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমান সম্পর্কে তার আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য ৪৭ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ নেটিজেনদের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি তারেক রহমানের মেয়েকে ‘বেশ্যা’ মন্তব্য করে বলেন, জাইমা রহমান প্রতি রাতে একজন কালো মানুষের সঙ্গ ছাড়া ঘুমাতে পারেন না।
আরও পড়ুন: মাত্র এক সপ্তাহে যেভাবে বদলে গেলো মুরাদের জীবন!
জাইমার বিরুদ্ধে তার অশালীন মন্তব্য নিয়ে হৈচৈয়ের মধ্যে অভিনেতা মামনুন হাসান ইমন এবং অভিনেত্রী মাহিয়া মাহির সঙ্গে মুরাদের দুই বছর আগের একটি ফোনালাপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। সেই অডিও ক্লিপে, মুরাদ অভিনেত্রীকে ‘ আপত্তিজনক মন্তব্য’ করেন এবং তাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেন।
এছাড়া মুরাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী ছাত্রনেত্রীদের বিরুদ্ধেও অশালীন মন্তব্য করেন।
মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের পর দেশে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে মুরাদ মরিয়া হয়ে দেশ ত্যাগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঢুকতে ব্যর্থ হয়ে তিনি শেষ পর্যন্ত দেশে ফিরে আসেন।
দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা এবং দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকেও মুরাদকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মতিয়ার রহমান তালুকদারের ছেলে মুরাদ ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের টিকিটে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন।
২০১৮ সালে তিনি আবার এমপি নির্বাচিত হওয়ায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ২০১৯ সালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে প্রথমে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করেন। পরে তাকে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী করা হয়।