পেঁয়াজ সংরক্ষণের দেশিয় মডেল ঘর উদ্বোধন করে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, সফলভাবে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারলে দেশে পেঁয়াজ নিয়ে অস্থিরতা ও সংকট থাকবে না। এ পণ্য নিয়ে রাজনীতিও বন্ধ হবে।
মন্ত্রী বলেন, দেশে চাহিদার চেয়েও বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। কিন্তু এক-তৃতীয়াংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে এ পণ্যের ঘাটতি দেখা দেয়। এতে দাম অস্বাভাবিক হয়, নানা রকম রাজনীতি শুরু হয়।
মঙ্গলবার (২৩ মে) পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার পূর্ব বনগ্রামে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর নির্মিত পেঁয়াজ ও রসুন সংরক্ষণের দেশীয় মডেল ঘর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে ২-৩ দিনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
তিনি বলেন, এছাড়া ভারত থেকেই আমদানি করতে হয় বেশি। ভারত অনেক সময় রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে। এতে চরম সংকট দেখা দেয়। সেজন্য পেঁয়াজ সংরক্ষণে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পেঁয়াজ পচনশীল ফসল। এটি রাখা যায় না, শুকিয়ে যায়, পচে যায়। এর ফলে কৃষকরা মৌসুমে কম দামে দ্রুত তা বিক্রি করে দেয়। মৌসুম শেষ হলে বাজার আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেটের হাতে চলে যায়। সেজন্য আমরা পেঁয়াজ সংরক্ষণের এই পরীক্ষামূলক ঘর তৈরি করেছি। যেখানে চার-পাঁচ মাস পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যাবে। এটিতে সফল হলে দেশে পেঁয়াজের সংকট হবে না। আমদানিও করতে হবে না, বরং রপ্তানি করা যাবে।
পেঁয়াজ আমদানি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, চাষি, উৎপাদক, ভোক্তাসহ সবার স্বার্থ বিবেচনা করে কয়েক দিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এছাড়া পেঁয়াজ সংরক্ষণের মডেল ঘরে ব্যবহৃত বিদ্যুৎকে ভর্তুকি বা কৃষি খাতে বিবেচনার জন্য বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
পেঁয়াজ রসুন সংরক্ষণাগার (মডেল ঘর)-
প্রতিটি ঘরে বাতাস চলাচলের জন্য ছয়টি বায়ু নিষ্কাশন পাখা সংযুক্ত রয়েছে। মূলত ভ্যান্টিলেশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকার কারণেই সংরক্ষিত পেয়াজ-রসুন পঁচবে না।
তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা পরিমাপের জন্য প্রতিটি ঘরে হাইগ্রোমিটার রয়েছে।
প্রতিটি ঘরের আয়তন প্রায় ৩৭৫ বর্গফুট। প্রতিটি ঘরে ২৫০-৩০০ মণ (১০-১২ মেট্রিক টন) পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যাবে।
এছাড়া তিনটি স্তরের এই সংরক্ষণ ঘরের স্থায়িত্ব কমপক্ষে ১৫-২০ বছর।
কৃষক পর্যায়ে পেঁয়াজ ও রসুন সংরক্ষণ পদ্ধতি আধুনিকায়ন এবং বিপণন কার্যক্রম উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে এসব ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।
প্রকল্পের মেয়াদ জুলাই ২১ হতে জুন ২০২৬, মোট বাজেট ২৫ কোটি টাকা।
ঢাকা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, রাজশাহী ও পাবনা এই সাতটি জেলার ১২টি উপজেলায় ৩০০টি ঘর নির্মাণ করা হবে।
এ বছর ২০২২-২৩ সালে মোট ৮০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরে ২৫০-৩০০ মণ পেঁয়াজ ও রসুন সংরক্ষণ করা যাবে।
আরও পড়ুন: হাওরে ৯০ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে: কৃষিমন্ত্রী
জাপানে ইয়ানমারের কারখানা পরিদর্শন কৃষিমন্ত্রীর, বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান