প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,‘সিক্রেট ডকুমেন্ট অব ইন্টেলিজেন্স ব্রান্স অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ বইটি বাংলাদেশের রাজনীতি ও ইতিহাসের গবেষকদের গবেষণার তথ্য-উপাত্তের একটি সমৃদ্ধ উৎস হবে। কারণ এতে উন্মোচিত হয়েছে, কিভাবে পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাপারে অনুসন্ধান চালিয়েছিল।
বৃহস্পতিবার লন্ডনের ক্লারিজের হোটেলে ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস’ এবং ‘মুজিব অ্যান্ড ইন্ট্রোডাকশন’ শিরোনামের দুটি প্রকাশনার আন্তর্জাতিক উন্মোচন অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম পর্যন্ত দেশের প্রকৃত ও সম্পূর্ণ ইতিহাস এখানে পাওয়া যাবে। এর মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানুষ বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগ ও সংগ্রাম সম্পর্কে জানতে পারবে।’
তিনি বলেন, সিক্রেট ডকুমেন্টস হল পাকিস্তান আমলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশের উপর গোয়েন্দা শাখার প্রতিবেদনের একটি সংগ্রহ।
আরও পড়ুন:ডব্লিউটিও এর অধীনে দেশ অনেক বেশি বিকল্প সুবিধা পাবে: শেখ হাসিনা
এবারের প্রকাশিত গোপন নথির ভলিউম সম্পর্কে তিনি বলেন, এই ভলিউমগুলো প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে দেশের তরুণ ও রাজনীতিবিদদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা দেবে।
এই প্রকাশনার সাতটি খণ্ড প্রকাশিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এগুলি পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর পাকিস্তান গোয়েন্দা শাখার তৈরি নথি। পাকিস্তান গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তারা তার প্রতিটি আন্দোলন ও কর্মকাণ্ডের ওপর নজর রাখেন। অবিভক্ত পাকিস্তান রাষ্ট্রের ২৪ বছরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ৩ হাজার ৫৩ দিন কারাগারে ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, শুধু বঙ্গবন্ধুই নজরদারিতে ছিলেন না, আমার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবও নজরদারিতে ছিলেন। বিশেষ করে ১৯৬৬ সালে ছয় দফা দাবি ঘোষণার পর থেকে তিনি নজরদারিতে ছিলেন।
তিনি বলেন, এই গোপন নথিগুলো শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রাজনৈতিক সংগ্রামের একটি নথি নয়, এগুলি কীভাবে একটি স্বাধীন জাতির জন্ম হয়েছিল তার ঐতিহাসিক বিবরণ। বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসের জন্য এই নথিগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন:শেখ হাসিনা একজন স্ট্রং ক্লাইমেট ফাইটার: পরিকল্পনামন্ত্রী
এই নথিগুলির মাধ্যমে জানা যায়, কীভাবে বছরের পর বছর ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রাজনৈতিক ভিত্তি তৈরি হয়েছিল। এগুলোতে জাতির পিতার অপরিসীম দুর্ভোগ ও ত্যাগকেও তুলে ধরা হয়েছে। এসব তথ্য একজন জাতীয় নেতা, একজন রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তৈরির আখ্যান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মূল্যবোধ ও নীতির বিপক্ষে ছিলেন যারা, তারা প্রথম দিন থেকেই তাকে টার্গেট করেছিল। এরাই ১৯৭৫ সালের আগস্টে তাঁর পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল।
শেখ হাসিনা এই প্রকাশনায় বাংলাদেশের হাক্কানি পাবলিশার্সের সাথে অংশীদারিত্বে এগিয়ে আসার জন্য টেলর ও ফ্রান্সিস গ্রুপকে ধন্যবাদ জানান।
শেখ হাসিনা ‘বঙ্গবন্ধু অ্যান্ড ব্রিটেন: অ্যা সেনটেনারি কালেকশন’ শীর্ষক একটি শিল্প প্রদর্শনীরও উদ্বোধন করেন। এসময় সেখানে প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নতুন বই ‘শেখ হাসিনা: বিমুগ্ধ বিস্ময়’