বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের ৪৯তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে ব্রাসেলসে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকল্প’ শীর্ষক ভার্চুয়াল প্যানেল আলোচনায় এ কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত সালেহের সঞ্চালনায় আলোচনায় আবুধাবির জায়েদ ইউনিভার্সিটির সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. হাবিবুল হক খন্দকার, দিল্লি হতে প্রকাশিত দি টাইমস অব ইন্ডিয়ার কূটনৈতিক সম্পাদক ইন্দ্রানী বাগচী এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন পরামর্শক, রবীন্দ্র গবেষক ও শিল্পী ড. চঞ্চল খান অংশ নেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর: কুষ্টিয়ায় মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ গ্রেপ্তার ৪
মূল আলোচনার আগে রাষ্ট্রদূত সালেহ এবং যুক্তরাষ্ট্রের আলবানি মেডিকেল কলেজের ইমিরেটাস অধ্যাপক ও ২০১৩ সালে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা প্রাপ্ত ড. ডেভিড নালিনের মধ্যকার আলোচনার সম্প্রতি ধারণ করা একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারিতে ঢাকার তেঁজগাও বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশের মাটিতে পা রাখার মুহূর্তটিকে স্বচক্ষে দেখার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন ড. নালিন।
এছাড়া তিনি মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের কাছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রচারণা চালানোর লক্ষ্যে ওয়াশিংটন ডিসিতে তার প্রতিষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ তথ্য কেন্দ্রের কার্যক্রম সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুর সাথে পরবর্তী সময়ে সাক্ষাৎ করে তাকে অবহিত করার বিষয়ে স্মৃতিচারণ করেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুর
আলোচনাকালে ড. হাবিবুল হক খন্দকার স্বাধীনতা ও মুক্তির অন্যতম মূল স্তম্ভ হিসাবে সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সমতাকে গ্রহণের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর বাস্তববাদী রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির কথা তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক দূরদর্শিতার কথা উল্লেখ করে ইন্দ্রানী বাগচী বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্ব শান্তিকে তার পররাষ্ট্রনীতির মূল লক্ষ্য হিসাবে ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’ নীতি গ্রহণ করেছিলেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে ইউজিসিতে মানববন্ধন
ড. চঞ্চল খান বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক পরিকল্পনার বিষয়ে তুলে ধরে বলেন, কৃষি সংস্কার এবং শিল্পায়নের বিকাশ এই দুইয়ের সমন্বয়ে তিনি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলদেশকে পুর্নগঠনে একটি কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। একই সাথে তিনি একটি ধর্মনিরপেক্ষ এবং প্রগতিশীল শিক্ষা ও সংস্কৃতির নীতি-পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন।
রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ও আদর্শ বাস্তবায়নে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে অতীতের নানা বিচ্যুতি কাটিয়ে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায় পরিচালিত করা এবং একটি সমৃদ্ধ ও আধুনিক দেশে উন্নীত করার বিবিধ উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ইউনেস্কোর পুরস্কারে আমরা গর্বিত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো একজন আইকনিক বিশ্ব নেতাকে আন্তর্জাতিক পরিসরে উপস্থাপনের সুযোগ বাংলাদেশের কূটনীতিকদের জন্য অত্যন্ত সম্মান ও গৌরবের বিষয়।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে জুম প্লাটফর্মে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানটি দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজ হতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এতে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত হতে দেশি ও বিদেশি ব্যক্তিরা অংশ নেন।