দিনাজপুরের পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া খনি থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে পুরোদমে তিন শিফটে কয়লা উত্তোলন শুরু হয় বলে জানিয়েছে খনি কর্তৃপক্ষ।
কয়লা উত্তোলনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি)প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম সরকার।
তিনি জানান, সীমিত সংখ্যক শ্রমিকের সহায়তায় তিন শিফটে একদিনে কয়লা তোলা হয়েছে দুই হাজার ৭০০ ৩১ মেট্রিক টন। বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখতে উত্তোলিত কয়লার পুরোটাই সরবরাহ করা হচ্ছে পার্শ্ববর্তী বড় পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। এছাড়া করোনা ছড়িয়ে পড়ায় কিছুদিন স্থগিত রেখে নির্ধারিত সময়ের ১০ দিনের মধ্যে ৬ আগস্ট শনিবার রাত থেকে সীমিত পরিমাণে কয়লা উত্তোলন শুরু করেছিল চীনা শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন:কয়লার প্রথম চালান রামপালে, অক্টোবরে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু
বড় পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম সরকার জানান, করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় সব শ্রমিককে এক সঙ্গে কাজে লাগাননি তারা। ৩০০ জন চীনা শ্রমিকের পাশাপাশি কয়লা উত্তোলনে কাজ করছে ২৯৩ জন দেশি শ্রমিক। ১৩০৬ নম্বর নতুন ফেইজ থেকে শনিবার দিনভর দুই হাজার ৭৩১ মেট্রিক টন কয়লা তুলেছে তারা। রবিবারও তিন শিফটে পুরো মাত্রায় কয়লা তোলার কাজ চালাচ্ছে তারা।
এদিকে শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, এক্সএমসি এবং সিএমসিসহ তিনটি চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে কয়লা তোলার কাজে নিয়োজিত এক হাজার ৪১জন দেশি শ্রমিকের মধ্যে শুক্রবার রাত থেকে ২০০ জন শ্রমিক কয়লা তোলায় অংশ নিয়েছে। শিগগিরই অবশিষ্ট শ্রমিকদেরও কাজে যোগদান করানো হবে।
জানা গেছে, কয়লা তোলায় কর্মরতদের মধ্যে তিন দফায় নমুনা পরীক্ষায় ৫৬জন চীনা এবং ৪০জন দেশি শ্রমিকসহ ১০৬ জনের করোনা শনাক্ত হওয়ার কারণে গেল ২৯ জুলাই থেকে সাময়িকভাবে কয়লা উত্তোলন বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে ৬ আগস্ট থেকে সীমিত পরিসরে কয়লা তুলছিল চীনা শ্রমিকরা। শনিবার থেকে পুরো মাত্রায় কয়লা উত্তোলনের আগে নিশ্চিত হতে ১২ থেকে ১৪ দিন শ্রমিকদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল খনির অভ্যন্তরে।
অন্যদিকে কয়লা সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় খনির কয়লার ওপর নির্ভরশীল পার্শ্ববর্তী ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বড় পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে ৩২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন চালু ইউনিটের পাশাপাশি ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরেকটি (২টি) ইউনিট চালু করে জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানো হচ্ছে। এতে ভরা মৌসুমে আমন চাষে সেচ সুবিধা নিশ্চিতসহ লোডশেডিং কমে ভোগান্তির অবসান হবে বলে আশা করছেন তারা।
আরও পড়ুন:উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন দেশের জন্য আত্মঘাতী