শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যকার সম্পর্ক হাজার বছরেরও বেশি পুরোনো। চলতি বছরের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার থাইল্যান্ড সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যেকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
বুধবার (১০ জুলাই) রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের গ্র্যান্ড বলরুমে ঢাকায় রয়্যাল থাই দূতাবাস এবং থাই ট্রেড সেন্টারের যৌথ আয়োজনে চার দিনব্যাপী (১০-১৩ জুলাই) "টপ থাই ব্র্যান্ড" ট্রেড ফেয়ার ২০২৪-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: জিআই স্বীকৃতির সঙ্গে গুণগত মানের দিকেও নজর দিতে হবে: শিল্পমন্ত্রী
মন্ত্রী আরও জানান, সফরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ জোরদার করার ওপর জোর দেন উভয় দেশের নেতারা। এছাড়াও মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) লক্ষ্যে শিগগিরই আলোচনা শুরু করার জন্য লেটার অব ইনটেন্ট সই করেন। এটি আমাদের দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে উৎসাহ দেবে।
মন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া (আসিয়ান) অঞ্চলে বাংলাদেশের জন্য বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে থাইল্যান্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বছরের পর বছর ধরে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ক্রমাগত বাড়ছে। বর্তমানে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা আরও বাড়ানোর বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে সহযোগিতা বাড়াতে পারি; অবকাঠামো এবং কানেক্টিভিটি উন্নত করতে কাজ করতে পারি; বিশেষ করে থাইল্যান্ডের রানং বন্দর এবং বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি শিপিং রুট স্থাপন করা যেতে পারে।
পারস্পরিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব বাড়ানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড বৃহত্তর সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন অর্জনে একসঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত বলে জানান মন্ত্রী।
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য এখানে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ বিদ্যমান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের শিল্পোন্নয়নে বিটাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে: শিল্পমন্ত্রী
বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করার কথা উল্লেখ করে সেখানে থাই বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান শিল্পমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডে তৈরি পোশাক (আরএমজি), ওষুধ, হিমায়িত খাদ্য, ক্যাবল, চাল, কৃষিপণ্য, হস্তশিল্প, পাট, আলু ও সিরামিক ইত্যাদি পণ্যের রপ্তানি সম্প্রসারণ করতে চায়।
একইসঙ্গে বাংলাদেশ থাইল্যান্ড থেকে খাদ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ, ক্যানিং, প্যাকেজিং, আইটি, পর্যটন, চিকিৎসা পর্যটন এবং চিকিৎসা কর্মীদের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস ও দক্ষতা আমদানি করতে চায় বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত থাই রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন থাই দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন ও মিনিস্টার কাউন্সেলর ফ্যানম থংপ্রায়াম ও মিনিস্টার কাউন্সেলর (কমার্শিয়াল) খেমাথাত আর্চাওয়াথামরং।
উল্লেখ্য, আকর্ষণীয় থাই পণ্যের এই মেলায় ৬৪টি থাই প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশে থাই পণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নিয়েছে। মেলায় খাদ্যপণ্য, জুয়েলারি, স্বাস্থ্যসেবা, প্রসাধনী, বেডিং, স্পা, ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতি, টেক্সটাইল, অন্তর্বাস, স্টেশনারি, গৃহস্থালি পণ্যসহ নানা ধরনের বিশ্বমানের থাই পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে।
প্রতিদিন সকাল ১০টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত এ মেলা চলবে।
আরও পড়ুন: বিএসটিআইকে আন্তর্জাতিক মানের করতে সরকার কাজ করছে: শিল্পমন্ত্রী