বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে নারীশিক্ষাকে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে তথা বিএপিপিডির সকল কর্মকান্ড তৃণমূল পর্যায়ে বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণে সকলের সম্মিলিত প্রয়াস জরুরি।
শনিবার গাজীপুরের কালিগঞ্জ উপজেলায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এসপিসিপিডি প্রকল্পের আওতায় গঠিত বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ পার্লামেন্টারিয়ান্স অন পপুলেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট (বিএপিপিডি) কর্তৃক বাল্যবিবাহ ও জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ এবং প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ শীর্ষক পরামর্শ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে স্পিকার এসব কথা বলেন। এসময় স্পিকার পরামর্শ কর্মশালার শুভ উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে নারী নেতৃত্ব প্রয়োজন: স্পিকার
স্পিকার বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছি। সম্প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁকে 'এসডিজি প্রগেস এওয়ার্ড'-এ ভূষিত করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের জনবান্ধব ধারণাটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত ব্যক্তিগত চিন্তার ফসল। কারণ, তিনি গ্রামে, চরে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষকে সেবা দেয়ার বিষয়টি সর্বদা প্রাধান্য দেন।
সমগ্র বাংলাদেশে ১২ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক কাজ করছে, সরকারের পক্ষ থেকে প্রায় বত্রিশ রকমের ঔষধ সেখানে বিনামূল্যে বিতরণের ব্যবস্থা রয়েছে। মা ও শিশুসেবা, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, শিশুটিকা প্রদান কার্যক্রম কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো দিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন স্পিকার।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে এক বিদ্যালয়ে ৮৫ শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে!
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, কোভিডকালীন সময়ে সমগ্র বিশ্বে নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। নারী সহিংসতা, বাল্যবিয়ের মতো উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে উত্তরণ ঘটাতে হবে। কন্যাসন্তানদের অস্বচ্ছল পিতা-মাতাদের আস্থাহীনতার কারণে করোনাকালীন সময়ে বাল্যবিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রকৃতপক্ষে কন্যাসন্তান তাদের জন্য বোঝা নয়। আইন প্রণয়নের পাশাপাশি অভিভাবকদের এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষিতে কন্যাসন্তানদের এগিয়ে নিতে সরকার ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি, মসজিদের ইমাম সকলের প্রচেষ্টায় সচেতনতা তৈরি করতে হবে।
আরও পড়ুন: করোনা: কুড়িগ্রামে ঝরে পড়েছে ৫০ হাজার শিশু, বাল্যবিয়ের শিকার বালিকারা
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ‘বাল্যবিবাহ ও জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ বিষয়ক উপ-কমিটি’র আহ্বায়ক বেগম মেহের আফরোজ এমপি-র সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে. এম. আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে নজরুল ইসলাম বাবু এমপি, আরমা দত্ত এমপি, শিউলি আজাদ এমপি, শবনম জাহান এমপি, ফখরুল ইমাম এমপি বক্তব্য রাখেন। প্রকল্প পরিচালক যুগ্মসচিব এম এ কামাল বিল্লাহ কর্মশালায় সূচনা বক্তব্য রাখেন। কর্মশালায় সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, গনমাধ্যম কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।